DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

আন্দোলনের জন্য বিএনপির হাতে আর বেশী সময় নেইঃমেজর জেনারেল(অবঃ)রুহুল আলম চৌধুরী

ruhulalam তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবং  বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী বলেছেন, গণআন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান বেগম খালেদা জিয়ার নৈতিক দায়িত্ব। শীঘ্রই নিজের উপস্থিতিতে ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঢাকাসহ দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হবেন তিনি।

 

এজন্য যোগ্যতা, দক্ষতা ও বিশ্বস্ততার মাপকাঠিতে সঠিক ব্যক্তিদের সঠিক স্থানে দায়িত্ব দিতে হবে। আর যেমন কালক্ষেপণের মাধ্যমে দেশ ও মানুষের সর্বনাশ করা যাবে না, তেমনি গণআন্দোলনে ব্যর্থও হওয়া যাবে না। এবার ব্যর্থ হলে দল ও নেতা-কর্মীর চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এ দেশের জনগণ। সীমাহীন জনদুর্ভোগের পাশাপাশি স্থায়ী রূপ নিতে পারে বাংলাদেশে বিদ্যমান এই নিরাপত্তাহীন ও গণতন্ত্রবিহীন অবস্থা।

 

তিনি বলেন, এজন্যই আন্দোলনের জন্য বিএনপির হাতে আর সময় নেই। দেশব্যাপী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

 

গতকাল রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসের বাসভবনে দেশে শির্ষ  স্থানীয় একটি দৈনিকের সঙ্গে খোলামেলা আলাপকালে বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী সাবেক এই উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে তাদের কর্মসংস্থান, শিক্ষাব্যবস্থা, নিরাপত্তা, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সামাজিক, অর্থনৈতিক, আইনশৃঙ্খলাসহ সর্বশেষ রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন।

১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সামরিক বাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহণের পর বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। রুহুল আলম চৌধুরী পরিষ্কার ভাষায় বলেন, আগামী আন্দোলনের জন্য আর মাত্র এক-চতুর্থাংশ প্রস্তুতির বাকি আছে। তা চেয়ারপারসন ইচ্ছা করলে এক সপ্তাহের মধ্যেই পূরণ করতে পারেন। তবে এজন্য সঠিক ব্যক্তিদের যথাযথ স্থানে কাজে লাগাতে হবে। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন একজন সৈনিকের ব্রত হয় জীবন অথবা মৃত্যু, তেমনি এবারের আন্দোলনের ক্ষেত্রেও একই অভিপ্রায় নিয়ে মাঠে নামতে হবে বিএনপি নেতাদের।

 

আগামী আন্দোলনে বিএনপির জন্য বাড়তি সুবিধা হলো বর্তমান সরকারের কর্মকাণ্ডে দেশের অতিষ্ঠ জনগণই ৫০ ভাগ সমর্থন দিতে প্রস্তুত রয়েছে। একই সঙ্গে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এই আন্দোলনে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থনকে ন্যূনতম ২৫ শতাংশ ধরে নিলেও বাকি থাকে আর মাত্র ২৫ ভাগ।

 

বেগম খালেদা জিয়া আন্তরিকভাবে চাইলে সাত দিনও লাগবে না সেই প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য। তবে এ ক্ষেত্রে তাকে অনেকটা শক্ত মনোভাবের সঙ্গেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খালেদা জিয়ার এই উপদেষ্টা আরও বলেন, পুরো জাতি এখন তাকিয়ে আছে বেগম খালেদা জিয়ার দিকে। তার বলিষ্ঠ ও দক্ষ নেতৃত্বে আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না করা পর্যন্ত, তার সেই নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকেই যাবে।

 

শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে রবিবার শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদনের সুযোগদানের দাবিতে অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর পুলিশের অকথ্য ও অমানবিক নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তার নিন্দা জানান জনাব রুহুল আলম।

শিক্ষকদের দুর্ভোগের কথা বর্ণনা করেন তিনি। বিচার বিভাগ প্রসঙ্গে ড. আকবর আলি খানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, কি উচ্চ, আর কি নিম্ন আদালত- উভয় স্থানেই এখন একই ধরনের বিচার হচ্ছে। তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জন্য এক, আর সরকারি দলের জন্য আরেক রকমের নিয়ম।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি মনে করি তাকে আর কালবিলম্ব না করে হয় ভারমুক্ত করে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া উচিত, অন্যথায় এই পদ থেকে একেবারেই সরিয়ে দিয়ে অন্য কাউকে পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দেওয়া উচিত। অন্যথায় ক্ষমতা না দিয়ে এভাবে ঝুলিয়ে রাখলে দল অথবা দেশ কারোর জন্যই তা কোনো কাজে লাগবে না।

 

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, কোনো মানুষেরই আজ নিরাপত্তা নেই। এর মূল কারণ হলো দেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতি। আর তা ফিরিয়ে আনতে হলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সার্বিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের দু-এক জন ব্যতিক্রমী ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত সব মানুষই আজ বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে।




ভিতরে রক্তক্ষরণ চলছে তাদের। কর্মসংস্থান নেই। কল কারখানা বন্ধ হয়ে বেকারত্বের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিকরা ফেরত আসতে শুরু করেছে, যা কোনোভাবেই দেশের জন্য শুভলক্ষণ নয়। অথচ শুধু যুববিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই কমপক্ষে ১০ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান করা যেত।রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, একদলীয় শাসন চলছে দেশে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর চালানো হচ্ছে দমননীতি।

 

আর সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের যেন ‘সাত খুন মাফ’। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ধরে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে, খালে-জঙ্গলে মানুষের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। আমার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এই গুম, খুন, সন্ত্রাস সম্পর্কে পরিষ্কার ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!