DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

হ্যাভোস্কোপ রিপোর্টঃ বছরে আড়াই হাজার কোটিরও বেশি টাকা খাটছে কালোবাজারে

Capture32দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ  বাংলাদেশের নিরাপত্তার উপর কালোবাজারের হুমকি বাড়ছেই। সেইসাথে বাড়ছে কালোবাজারিদের সংখ্যা।

সম্প্রতি বিশ্বের কোন দেশের কত টাকা কালোবাজারে খাটছে সে সম্পর্কে একটি উপাত্ত ও ঐ দেশগুলোর তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ব কালো বাজার তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট হ্যাভোস্কোপ। এই তালিকায় বাংলাদেশে রয়েছে ৬৪তম স্থানে। ৯৫টি দেশের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, সর্বনিম্নে রয়েছে আলবেনিয়া।

হ্যাভোস্কোপে প্রকাশিত কালোবাজার সম্পর্কিত তথ্যগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে সরকারি এজেন্সি, নিরাপত্তা এজেন্সি, বিচার বিষয়ক কর্মসূচী, সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রবন্ধ ও অন্যান্য উৎস থেকে।

বাংলাদেশে কালোবাজার পরিস্থিতি:

ঘুষ- ৮৬ ইউএস ডলার (প্রতি ঘরে)

হিরোইনের মূল্য- ১২৫ ইউএস ডলার (প্রতি গ্রাম)

মানবপাচারকারীদের পরিশোধ করা হয়- ১০ হাজার ইউএস ডলার (ব্রাজিলে)

মানব পাচারকারীদের মূল্য- ২৫০ ইউএস ডলার

মারিজুয়ানার মূল্য- ১.৩ ইউএস ডলার (প্রতি গ্রাম)

মেথ বা ড্রাগের মূল্য- ৪.৫ইউএস ডলার(প্রতি ট্যাবলেট)

বই পাইরেসি- ৮মিলিয়ন ইউএস ডলার

জালনোট- ০.৩৩৫ বিলিয়ন/৩৩৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার

মিউজিক পাইরেসি- ১৮০ মিলিয়ন ইউএস ডলার

পতিতাদের সংখ্যা- ২ লাখ

সফটওয়্যার পাইরেসি- ১৪৭ মিলিয়ন ইউএস ডলার

দেশের সামগ্রিক কালোবাজার মূল্য- ৩৩৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার

বাংলাদেশে পতিতাদের সংখ্যা:

বাংলাদেশে কর্মরত পতিতাদের সংখ্যা ২ লক্ষ। ২০০৪ সালে ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে কর্মরত পতিতাদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার হল অপ্রাপ্তবয়স্ক। অন্য একটি হিসেবে দেখা যায়, সেক্স ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করা নারীদের সংখ্যা ২৯ হাজার। সেক্স ইন্ড্রাস্ট্রিতে কাজ করা নারীরা মানব পাচারের শিকার এবং তাদের পরিবারকে পাচারকারীরা ২৫০ ইউএস ডলার করে দেয়।

পুলিশ কর্তৃক আটক ইয়াবার পরিমাণ:

২০০৮ সালে নিরাপত্তা সংস্থা বাংলাদেশে ৩৬ হাজার ইয়াবা আটক করে। ডিপার্টমেন্ট অব নারকোটিকস কন্ট্রোল-এর তথ্যানুসারে, ২০১২ সালে এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ২০ লক্ষ।

২০১১ সালের আগে, বাংলাদেশের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের ৮০ শতাংশ গ্রাহকই হেরোইন আসক্ত। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে, এই নিরাময় কেন্দ্রের ৭০ শতাংশেরও বেশি গ্রাহক ইয়াবা ব্যবহারকারী।

মাদকাসক্তদের সংখ্যা:

বাংলাদেশে মাদকাসক্তদের সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। এদের মধ্যে ৮০ শতাংশ মাদকাসক্তদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। আবার এই অবৈধ মাদক ব্যবসায়ই বাংলাদেশে এক লক্ষ লোকের একমাত্র কর্মসংস্থান বা আয়ের উৎস।

মানবপাচার:

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে মানবপাচারে নিয়োজিত দালালরা মেয়েদের খুজেঁ বের করার জন্য নানারকম ফি পায়।

পতিতাবৃত্তির জন্য দেখতে ভাল কিংবা ‘উপযুক্ত’ মেয়ে খুঁজে পেলে দালালদের মুনাফা হয় বেশি। অন্যান্যদের মধ্যে গৃহকর্মী কিংবা শ্রমিক হিসেবে কাজ করার মত মেয়ে পাচার করলে মুনাফা হয় কিছুটা কম।

বাংলাদেশে ঘুষ দেওয়ার পরিমাণ:

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল কতৃক প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১১ সালের এপ্রিল থেকে ২০১২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশে ঘুষ দেওয়া-নেওয়ার পরিমাণ ২.৭ বিলিয়ন! ঘুষ দেওয়ার এই পরিমাণ বাংলাদেশের জাতীয় বাজেটের ১৩.৬ শতাংশ।

৭,৯০৬টি ঘরের জরিপে দেখা গেছে, সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য ৬৩.৭ শতাংশ চাকুরীপ্রার্থীকে ঘুষ দিতে হয়।

সবচেয়ে বেশি ঘুষের লেনদেন ছিল শ্রম অভিবাসন খাতে। চাকুরী প্রত্যাশীদের ৭৭ শতাংশকেই ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়। পরবর্তী উচ্চ হার ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোতে। সেখানে ৭৫.৮ শতাংশ লোককেই ঘুষ দিতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া ভূমি প্রশাসনে ঘুষ দেওয়ার হার ৭৯ শতাংশ, জুডিশিয়ারি সার্ভিসে ৫৭ শতাংশ।

ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু পাচার:

বাংলাদেশের জনগণের ৯০ শতাংশই মুসলিম। প্রতিবছরই গরুর মাংসের চাহিদা মেটাতে ৩০ লাখ গরু আমদানি করা হয় বাইরে থেকে। অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশ ভারত হিন্দু অধ্যুষিত হওয়ায়, সেখানকার অনেক রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধ করা হয়। এভাবে, কালো বাজারের উদ্ভবের সাথে সাথে, ভারত থেকে বাংলাদেশে ২০ লাখ গরু পাচার করা হয়। পাচারকৃত গরুগুলোর অর্থমূল্য ৯২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!