DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সম্প্রচার নীতিমালার সমালোচনা কল্পনাপ্রসূত:তথ্যমন্ত্রী ইনু

তিনি বলেছেন, ‘কণ্ঠরোধের’ জন্য নয়, এটি করা হয়েছে গণমাধ্যমের ‘কল্যাণের’ জন্য; যদিও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের দাবি, এতে মুক্ত সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হবে।

সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি বিএনপি বলছে, এই নীতিমালার মাধ্যমে সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতার পথ রুদ্ধ করতে চাইছে, যা একদলীয় শাসন কায়েমের প্রয়াস।

সশস্ত্র বাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় অথবা সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ায়- এমন বিষয় প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে টেলিভিশন ও রেডিওর জন্য গত ৪ অগাস্ট সম্প্রচার নীতিমালা অনুমোদনের পর থেকে সমালোচনা হচ্ছে।

এর মধ্যেই গত ৮ অগাস্ট এই নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করে তথ্য মন্ত্রণালয়। নিয়মানুযায়ী ওই দিন থেকেই নীতিমালাটি কার্যকর হয়েছে।

গেজেট প্রকাশের পর সমালোচনার জবাব দিতে সোমবার সরকারের ব্যাখ্যা নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে আসেন তথ্যমন্ত্রী।

সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “সম্প্রচার নীতিমালা দিক-নির্দেশনামূলক। এটি কোনো আইন নয়। এতে শাস্তির কোনো বিধানও নেই। তাই কণ্ঠরোধের বিষয়টি সম্পূর্ণ অমূলক ও কল্পনাপ্রসূত।”

সম্প্রচার মাধ্যমের ‘স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা’ প্রতিষ্ঠা করে সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে এই নীতিমালা করা হয়েছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।

নীতিমালার সশস্ত্র বাহিনী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমালোচনা বেশি হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এর প্রতিটি ধারাই গণমাধ্যমের জন্য কল্যাণকর ও সম্প্রসারে সহায়ক। এই নীতিমালা নিয়ে অপব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। যারা এর অপব্যাখ্যা করেছেন, তারা বিষয়টি সঠিকভাবে বোঝেননি।

“কোনো বাহিনীর কেউ কোনো অপরাধ করলে তা অবশ্যই প্রকাশ করবেন তবে পুরো বাহিনীকে দোষারোপ করা যাবে না।”“সাংবাদিকদের যেমন পেশাগত স্বাধীনতা আছে একজন নাগরিকেরও তেমনি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আছে- এটা মনে রাখতে হবে। গার্লফ্রেন্ডের গলা ধরিয়া বসিয়া আছে- এই ক্যাপশন দিয়ে ছবি প্রকাশ করতে পারবেন না।”

 

মন্ত্রী বলেন, নীতিমালায় সব বিষয়ের ব্যাখ্যা না থাকলেও আইনে বিস্তারিত ব্যাখ্যা রাখা হবে।

এই নীতিমালার আওতায় আইন প্রণয়ন করে জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হবে। তার আগ পর্যন্ত তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্ব নিয়েও সমালোচনা উঠেছে।  

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সম্প্রচার নীতিমালায় তথ্য মন্ত্রণালয়কে কোনো ক্ষমতা দেয়া হয়নি। বরং মন্ত্রণালয় সম্প্রচার মাধ্যমের ওপর থেকে দায়িত্ব গুটিয়ে নিয়ে কমিশনের হাতে অর্পণের জন্য স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে।”

তিনি বলেন, সম্প্রচার কমিশন গঠনের আগে নীতিমালা বাস্তবায়নে কর্তৃত্ব তথ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে রাখার বিষয়ে সাংবাদিক মহলসহ কেউই আপত্তি তুলেননি।

শিগগিরই অংশীজনদের নিয়ে কমিটি (সার্চ কমিটি) গঠন করে সম্প্রচার কমিশন গঠনের কাজ শুরু করা হবে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান তথ্যমন্ত্রী।

 

 

‘তাড়াহুড়ো ও লুকোচুরি’ করে সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মী ও অংশীজনদের নিয়ে গঠিত কমিটি দীর্ঘদিন আলোচনার পর এই নীতিমালার খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

 

কোনো বিষয়ে ব্যাখ্যা বা স্পষ্টীকরণের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব থাকলে সম্প্রচার কমিশনের মাধ্যমে আইন প্রণয়নের সময় সে সুযোগ থাকছে বলেও জানান তিনি।

নীতিমালার যেসব বিষয় নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে, সে বিষয়গুলো তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে তার ব্যাখ্যা দেন তথ্যমন্ত্রী।

নীতিমালা অনুযায়ী স্বাধীন জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠনের আগ পর্যন্ত এই নীতিমালা বাস্তবায়নে কর্তৃত্ব থাকবে তথ্য মন্ত্রণালয়ের।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!