DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

কি হবে ঈদের পরঃ রাজনীতিতে বাকযুদ্ধের উত্তাপ!

al-bnp-logo-2_87817কী হবে ঈদের পর- এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক অঙ্গনে। বিএনপি ও তার শরিক দলগুলো সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে নামার ঘোষণার হুমকি দিয়েছে। অন্যদিকে সরকারি দল মোকাবিলা করার ঘোষণা দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ ইস্যুতে খুলেছেন মুখ। বলেছেন, মাঠে নামুক না। মাঠে আওয়ামী লীগ আছে, মানুষ আছে। মাঠের খেলা মাঠেই হবে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক মাঠে আন্দোলন-সহিংসতা না হলেও কিছুটা উত্তাপ ছড়াবে_ এমনাটাই আভাস দিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

 

তাদের মতে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর অনেকটা নীরব ভূমিকায় সময় পার করেছে বিএনপি। সম্প্রতি তারা আন্দোলনে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন নিজেই আন্দোলনের এ ঘোষণা দেন। শনিবার ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী হুমকি দিয়ে বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার আহ্বানে সাড়া না দিলে দেশে তুমুল যুদ্ধের পদধ্বনি শোনা যাবে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ বলেছে, তারা আন্দোলনের মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

 

এ বিষয়ে রাজনৈতি বিশ্লেষক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, বিএনপি আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে, এটা শুনেছি। কিন্তু এ আন্দোলনে জনগণকে কতখানি সম্পৃক্ত করতে পারবে, সেটা দেখার বিষয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো আন্দোলনই বেগবান করা যায় না। তবে যেহেতু তারা আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে, কিছু না হলেও কথার উত্তাপ ছড়াবে_ এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

বিএনপি সূত্র থেকে জানা যায়, ঈদের পর নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতেই আন্দোলনের ঘোষণা। তবে এ আন্দোলন কতটা বেগবান হবে, সেটা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যেই। এরই মধ্যে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ঢাকা মহানগর কমিটি করলেও সে কমিটি নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভেদ। অনেকবার চেষ্টা করেও বিভেদ মেটানো সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে রাস্তায় আন্দোলনে যাওয়ার মতো প্রস্তুত হতে পারেনি বিএনপি।তত

 

বাকযুদ্ধের উত্তাপ

 

 

 

সূত্রটি আরও জানায়, দলের যে অবস্থাই থাক, আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার চেষ্টা করবে দলটি। তাদের মূল উদ্দেশ্য আন্দোলন নয়, সংলাপের মাধ্যমে মধ্যবর্তী নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করা। একদিকে আন্দোলনের হুমকি, অন্যদিকে সরকারকে সংলাপের মাধ্যমে আলোচনার টেবিলে বসানোর চেষ্টা। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সফরে আসা বিভিন্ন দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানের পাশাপাশি কূটনীতিক ও রাষ্ট্রীয় অতিথির সঙ্গে যে কোনো মূল্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠকের আয়োজন করতে দলের সিনিয়র নেতাদের সমন্বয়ে জোর লবিং করবে দলটি।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির সিনিয়র নেতা বলেন, বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এছাড়া এ মুহূর্তে আর কোনো উপায় ছিল না। কারণ কোনো কর্মসূচি না থাকায় তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ঝিমিয়ে পড়েছে। এ কারণে আন্দোলনের নামে কিছু কর্মসূচি থাকলে নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত থাকবে। এছাড়া এ আন্দোলনের ঘোষণার মাধ্যমে নেতাকর্মীদের শক্তির মাঠ পর্যায়ের অবস্থাও বোঝা যাবে। তবে যে আন্দোলনের কথা বলা হচ্ছে, তা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবে, সেটা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।তবে আন্দোলনের বিকল্প কোনো পথ আছে বলেও তিনি মনে করেন না।

 

অপরদিকে আওয়ামী লীগের সূত্র থেকে জানা যায়, বিএনপির আন্দোলনের হুমকিকে তোয়াক্কা না করার কথা বলে এলেও ভেতরে ভেতরে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছে তারা। ঈদের পর মাঠ দখলে রাখতে তাই আসছে মাসব্যাপী কর্মসূচি। শোকের মাস আগস্টে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে রাজপথ দখলে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে দলটির। বিএনপি যাতে আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে, এজন্য বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত রাখা হবে। কর্মসূচি চূড়ান্ত করতে সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভা ডেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সবার সঙ্গে কথা বলেছেন।

তবে তারা অপেক্ষা করবেন বিএনপির আন্দোলনের ধরন দেখার জন্য। বিএনপির কর্মসূচির বিরুদ্ধে পাল্টা কর্মসূচি দেবে দলটি। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা মনে করেন, বিএনপি এখনও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত নয়; রাজপথে নামতে দলকে সেভাবে সংগঠিত করতে পারেনি। তারপরও সতর্ক থাকতে চান তারা। তারা জানান, বিএনপির আন্দোলনে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আন্দোলন সহিংস হলে শক্ত হাতে তা মোকাবিলা করবে। শুধু তা-ই নয়, সংলাপের নামে দেশি-বিদেশি সংস্থার কোনো ধরনের লোভনীয় প্রস্তাবেও দলটি সায় না দেয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছে। এছাড়া মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো ধরনের সংলাপে না যাওয়ারও চিন্তা করছে দলটি।

 

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আন্দোলন করে লাভ হবে না। নির্বাচনের জন্য পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ২০১৯ সালের আগে কোনো নির্বাচন হবে না। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো ধরনের আলোচনায় যাবে না সরকার। কামরুল ইসলাম বলেন, ঈদের পরে যদি বিএনপি নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে, তাহলে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেয়া হবে না। আর যদি আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও শুরু হয়, তাহলে শুধু বাধা আসবে না, চরম বাধা আসবে। প্রয়োজনে কঠোরভাবে তাদের আন্দোলন মোকাবিলা করা হবে।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!