DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ‘অসাংবিধানিক’:এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম

malam copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  জামায়াতে ইসলামীর নেতা মীর কাসেম আলীর মামলা থেকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার সরে দাঁড়ানো উচিত বলে দুজন মন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে অসাংবিধানিক বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

রবিবার সুপ্রিম কোর্ট ভবনে তার নিজ কার্যালয়ে মীর কাসেমের মামলা নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন রাষ্ট্রের প্রধান এ আইন কর্মকর্তা।

Untitled-1 copyঅ্যার্টনি জেনারেল বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি কোন ব্যক্তি নন,একটি প্রতিষ্ঠান। প্রধান বিচারপতিকে বিতর্কিত করা মানে বিচার ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করা। তাই প্রধান বিচারপতি ও বিচারালয় নিয়ে বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকতে সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।’

মীর কাসেমের আপিল শুনানি পুনরায় শুরু করার যে দাবি খাদ্যমন্ত্রী কামরুল জানিয়েছেন, সে প্রসঙ্গে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এ ধরণের উক্তি অসাংবিধানিক। এ বক্তব্য ন্যায়বিচার ব্যাহত করবে ও যুদ্ধাপরাধের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে।’ মীর কাসেমের মামলার রায় কি হয় তা দেখতে সকলকে ৮ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি।

এর আগে শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডির বিলিয়া মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক সভায় খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইমলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মীর কাসেমের মামলা থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইমলাম বলেন, ‘এই মামলার রায় কী হবে তা প্রধান বিচারপতির প্রকাশ্যে আদালতে বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি অনুধাবন করতে পেরেছি। তার বক্তব্যের মধ্যে এটা অনুধাবন করেছি যে, এই মামলায় আর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরপরও যদি মীর কাসেমের মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়- তাহলে সবাই ভাববে, সরকার চাপ দিয়ে এই কাজ করিয়েছে।’

কামরুল বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি প্রকাশ্য আদালতে কী বললেন? প্রসিকিউশন এই মামলা নিয়ে রাজনীতি করছে। জামায়াতে ইসলামী যে অভিযোগ করেছে, বিএনপি যে অভিযোগ করেছে, যে সুরে কথা বলছে, একই সুরে কথা বলেছেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি বলেন, ‘প্রকারান্তরে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন তিনি। শুধু তাই নয়, এই বক্তব্য ট্রাইব্যুনালের পাঁচ বছরের বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও হত্যা করা হয়েছে।’ ‘আমি মনে করি, প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন করে শুনানি হওয়া উচিত। প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে একটি বেঞ্চ হোক, সেই বেঞ্চে আপিলের শুনানি হোক,’ বলেন এই মন্ত্রী।

অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধান বিচারপতিকে হয় তার বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে অথবা আপিল শুনানি থেকে সরে দাঁড়াতে হবে। মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিৎ।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপক্ষের মামলা পরিচালনায় খুবই মর্মাহত। মামলার এভিডেন্স দেখলে, এগুলো পড়লে আমাদের খুব কষ্ট লাগে। মামলাগুলো যখন আমরা পড়ি, তখন আমাদের গা ঘিনঘিন করে তাদের মামলা পরিচালনা দেখে। সব মামলায় এটা হয়ে আসছে।’

এরপর প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, ‘এত হাফ হার্টেড হয়ে আপনারা মামলা চালান কেন?’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রসিকিউশন, তদন্ত সংস্থার পেছনে রাষ্ট্রের লাখ লাখ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু তারা এসব কী মামলা পরিচালনা করছে?

ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা শুধু ব্যস্ত টিভিতে চেহারা দেখানো নিয়ে। তারা দামিদামি গাড়ি চড়েন আর পুলিশের হুইসেল দিয়ে ঘুরে বেড়ান।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!