DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

রাত ১০টা ১মিনিটে জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর

 kamrufasiজামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ফাঁসির রায় কার্যকর হয়েছে। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড অবশেষে কার্যকর করা হয়। 



শনিবার রাত ১০টা ১ মিনিটে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে আজ কামারুজ্জামানের ফাঁসি কার্যকর করা হলো।



নিয়ম অনুসারে ফাঁসির রায় কার্যকর করার সময় উপস্থিত ছিলেন কারা প্রশাসনের মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল  সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্ণেল মো: ফজলুল কবীর, উপ-কারা মহাপরিদর্শক গোলাম হায়দার, জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক ফরমান আলী, কারাধ্যক্ষ নেচার আলম, ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিঞা, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, ঢাকার সিভিল সার্জন আবদুল মালেক, কারা চিকিৎসক আহসান হাবিব প্রমুখ।



দন্ড কার্যকর করতে প্রধান জল্লাদ ছিলেন রানা। তারসঙ্গে ছিলেন জল্লাদ ফল্টু, রাজু ও শামছুসহ আরেকজন।

দন্ড কার্যকরের আগে কামারুজ্জামানকে গোসল করানো হয়।  গোসল শেষে নামাজ আদায় করেন তিনি। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে তওবা পড়িয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেওয়া হয় তাকে। প্রথা অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক তাঁর হাতে রাখা একটি লাল রুমাল মাটিতে ফেললে প্রধান জল্লাদ ফাঁসির মঞ্চের লিভার (লোহার তৈরি বিশেষ হাতল) টেনে দেন। এতে পায়ের তলা থেকে কাঠ সরে ফাঁসি কার্যকর হয়।



রায় কার্যকর উপলক্ষে শনিবার বিকেল থেকেই ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাইরে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য নিরাপত্তাব্যূহ গড়ে তোলেন। সঙ্গে ছিল পুলিশের সাঁজোয়া যান। কারাগারের বাইরে ফাঁসির খবর জানতে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমের শতাধিক সাংবাদিক।



একাত্তরে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে ১৪৪ জনকে হত্যা ও নারী নির্যাতনের দায়ে ২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে ফাঁসির আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে আসামিপক্ষ। গত বছরের ৩ নভেম্বর সোহাগপুর হত্যাকা-ের দায়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। চলতি বছরের ১৮ ফেব্র“য়ারি আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হলে ৫ মার্চ তা পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন কামারুজ্জামান। এরপর দুই দফা শুনানি পেছানোর পর গত ৫ এপ্রিল রোববার আপিল বিভাগে ওই আবেদনের শুনানি হয়। পরে রায় ঘোষণার জন্য ৬ এপ্রিল সোমবার দিন ধার্য করেছিলেন সর্বোচ্চ আদালত। এদিন



রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে কামারুজ্জামানের করা আবেদন আপিল বিভাগ খারিজ করে দেন।



তবে এই বিচারের শুরু থেকেই জামায়াতে ইসলামীসহ আন্তর্জাতিকমহল বিচার-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে। বিশ্বের যেসব দেশে এখন আর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় না, সেসব দেশও সর্বোচ্চ সাজার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জানিয়ে আসছিল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে প্রথম ফাঁসি কার্যকর হয়েছিল জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ হয় কাদের মোল্লার। ওই দিন রাত ১০টা ১ মিনিটে তাঁর ফাঁসি কার্যকর হয়।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!