DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

রাশিয়ার সঙ্গে সকল সহযোগিতা চুক্তি বাতিল করেছে ন্যাটো

Flagge NATO

 

download (7)রাশিয়ার সঙ্গে সামরিক ও বেসামরিক সকল প্রকার সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বাতিল ঘোষণা করেছে ন্যাটো। ক্রিমিয়া সঙ্কটের জের ধরেই রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাটোর সদস্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। 

 

এদিকে, ক্রিমিয়ায় তাতার জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও দাবি-দাওয়ার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স ইউক্রেন সঙ্কট শুরু হওয়ার পর এই প্রথম ব্রাসেলসে বৈঠক করেছে ন্যাটোর সদস্যরা।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে শুধু সম্পর্ক বাতিল করাই নয়, কৃষ্ণ সাগরে একটি যুদ্ধ জাহাজও পাঠাবে তারা। ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অধিগ্রহণ করার বিষয়টিকে বৈঠকে ‘অবৈধ’ ও জবরদখলমূলক কাজ বলে ঘোষণা করা হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়া আগ্রাসন চালিয়েছে দাবি করে ন্যাটোর মহাসচিব এন্ডারস ফগ রাসমুসেন বলেছেন, ‘রাশিয়ার এ আগ্রাসন হচ্ছে এই প্রজন্মে ইউরোপের নিরাপত্তার প্রতি মারণাঘাতসম এক হুমকি। আর এই কাজের মধ্য দিয়ে রাশিয়া ন্যাটোর মূল নীতি, যার উপরে ন্যাটোর সহযোগিতা সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত, সেটিকে অবমাননা করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক নয়।’

পূর্বাঞ্চলের সীমান্তে ন্যাটোর সামরিক উপস্থিতিও বাড়িয়েছে এবং পোল্যান্ড ও রোমানিয়ায় নজরদারি প্যাট্রোল বসিয়েছে বলেও রাসমুসেন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাল্টিক রাষ্ট্রগুলোতে প্রহরা মিশনের জন্য আমরা আগের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি যুদ্ধ বিমান নিয়োগ করেছি। প্রয়োজনে আমাদের আরো বিমান এবং রিফুয়েলিং ট্যাংকার দেবার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় অ্যামেরিকা এবং ইউরোপীয় মিত্রদের আমরা ধন্যবাদ জানাই।

’ ক্রিমিয়া অঞ্চল নিয়ে পশ্চিমা শক্তিগুলোর সঙ্গে রাশিয়ার যে সঙ্কট চলছে সেটিই আরো ঘনীভূত হয়ে উঠল ন্যাটোর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে। আর ন্যাটোর এই ঘোষণার পাশাপাশি অ্যামেরিকা ও কৃষ্ণ সাগরে একটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, ‘ইউক্রেন সঙ্কট আসলে ন্যাটো জোটের জন্য একটা ‘ঘুম-ভাঙানিয়া’ ডাক হিসেবেই কাজ করেছে।’

কিন্তু ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে এখনো কোনো জবাব আসেনি। এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রিমিয়ায় তাতার জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও দাবি-দাওয়ার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন। মঙ্গলবার রাশিয়ার ভোলগা অঞ্চলের ক্রিমিয়ার তাতারস্তান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট রুস্তম মিন্নিখানোভ মস্কোয় সাক্ষাত্ করতে গেলে পুতিন ওই আশ্বাস দেন। ভৌগোলিকভাবে ক্রিমিয়া থেকে তাতারস্তানের দূরত্ব কয়েক হাজার কিলোমিটার হলেও জাতিগতভাবে দুই তাতার জনগোষ্ঠীর ব্যাপক মিল রয়েছে।

সম্প্রতি ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত গণভোটে তাতার মুসলমানরা রাশিয়ার সঙ্গে একীভূত হওয়ার বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার পরও পুতিন তাদের সঙ্গে সংলাপে বসার আভাস দিয়েছিলেন। পুতিন ওই গণভোটের পর বলেছেন, ‘একটি সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের আরো অনেকের মতো ক্রিমিয়ার তাতাররা চরম অবিচারের শিকার হয়েছিলেন। আমি মনে করি তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ দেয়ার জন্য রাজনৈতিক ও আইনি পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে।’ সম্পতি ক্রিমিয়ায় অনুষ্ঠিত গণভোটের জের ধরে প্রজাতন্ত্রটি রাশিয়ায় যোগ দেয়ার পর ক্রিমিয়া সফর করেছেন মিন্নিখানোভ।

পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি ক্রিমিয়ার তাতার জনগোষ্ঠীকে ‘অবদমিত জনগোষ্ঠী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার অনুরোধ জানান। ১৯৯০-এর দশকের এক রুশ আইন অনুযায়ী সে দেশের অবদমিত বা নির্যাতিত জনগোষ্ঠী পুনর্বাসনের সুযোগ পাবে। তাতারস্তানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ক্রিমিয়ার তাতারদের ১৯৯১ সালের আইনের আওতায় আনলে খুব ভালো হয়।

এটি করলে তা হবে তাতারদের জন্য মস্তবড় নৈতিক সমর্থন।’ জবাবে পুতিন প্রস্তাবটি ‘গুরুত্বের সঙ্গে’ বিবেচনা করার পাশাপাশি ক্রিমিয়ার তাতার নেতাদের সাথে সাক্ষাত্ করবেন বলে জানান। ১৯৮০’র দশকের শেষ দিকে তাতারদের অনেককে মাতৃভূমিতে ফিরে আসার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু ইউক্রেন তাদের পুনর্বাসনের সুযোগ দেয়নি।

এতে করে তাতাররা গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে নিজ ভূমিতে পরবাসীর জীবনযাপন করে আসছিলেন। তাদের ক্রিমিয়ায় জমি কেনার অনুমতি দেয়া হয়নি। তাতারস্তানের প্রেসিডেন্ট মিন্নিখানোভ এবং তার পূর্বসুরি মিনতিমের শাইমিয়েভ ক্রিমিয়ার তাতার জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের জন্য দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম করে আসছেন। 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!