DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

নিশ্চিত ভাবে পদ হারাতে যাচ্ছেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতা

10254019_10203643333833025_7184391415674446518_nদৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ অবধারিত ভাবেই পদ  হারাতে যাচ্ছেন বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতাই। সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় না থাকা, শারীরিক অসুস্থত‍া, সুবিধাবাদিতা, দুর্নীতি এবং সরকারের সঙ্গে গোপন আঁতাতের অভিযোগে পদ হারাতে পারেন তারা। আন্দোলনে পিঠ বাঁচিয়ে চলার কারণে অনেক সিনিয়র নেতার ওপরই ক্ষুব্ধ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। তাদের বিরুদ্ধে খুব শিগগিরই ব্যবস্থা নিচ্ছেন এমনটাই জানা গেলে বিএনপির গুলশান অফিসের সূত্রে।

জানা গেছে, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় নেই এমন আলঙ্কারিক নেতাদের আর পদে রাখতে চাইছেন না দলটির প্রধান খালেদা জিয়া। তবে কাউন্সিলের মাধ্যমেই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের সূত্রে। ইতোমধ্যেই তৃণমূল পুনর্গঠনের কাজে হাত দিয়েছে বিএনপি। ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে অনেক জেলা কমিটি। জেলা কমিটিগুলোর পর পুনর্গঠন হবে কেন্দ্রীয় কমিটি।

পাশাপাশি পুনর্গঠন করা হবে অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনও। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য সরকার বিরোধী আন্দোলনে যে সব নেতাদের ডেকেও পাওয়া যায়নি, গ্রেফতারের ভয়ে যারা নেত্রীর নির্দেশ পালন করেননি, দলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই, বার্ধক্যক্লিষ্ট, সুবিধাবাদী ও সুযোগ সন্ধানী, সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখেন এমন নেতাদের তালিকা হচ্ছে।

এ সব অভিযোগে এমনকি স্থায়ী কমিটি, জাতীয় নির্বাহী কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদ থেকে বাদ পড়তে পারেন অনেক হাইপ্রোফাইল নেতা। তবে দল থেকে বহিষ্কার বা একেবারেই বাদ না দিয়ে তাদের বিএনপি প্রাথমিক সদস্য পদে রাখা হবে এমনটাই জানালেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক শীর্ষ নেতা। দলের সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বেগম সারোয়ারী রহমান,এম শামছুল ইসলাম, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে স্থায়ী কমিটি থেকে বাদ দেয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়েছে দলের ভিতরে। অবশ্য দলের সিনিয়র ও খালেদা জিয়ার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বলে বিবেচিত স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার ও আর এ গনি বার্ধক্যজনিত কারণে নিজেরাই পদ থেকে সরে যেতে চাইছেন।

তবে তাদের স্থায়ী কমিটি ত্যাগের পক্ষপাতী নন খালেদা জিয়া। পাশাপাশি অসুস্থ থাকলেও খালেদা জিয়ার গুডবুকে আছেন তরিকুল ইসলাম। দলীয় নেত্রীকে সঠিক পরামর্শ দেয়ার জন্য দলটিতে ৩৬ জন উপদেষ্টা থাকলেও অনেকেই গত পাঁচ বছরে একবারও দলীয় কার্যালয় মাড়াননি। ছিলো না কোনো কর্মসূচিতে উপস্থিতি। এ কারণে অনেক নেতাকেই মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীর চেনেন না।

উপদেষ্টাদের মধ্যে এ্যাড. খন্দকার মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) সাঈদ ইস্কান্দার মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত কারণে বাদ পড়ছেন হারুনার রশিদ খান মুন্নু, উকিল আব্দুস সাত্তার। দলের সক্রিয় নেতাদের মধ্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী,রিয়াজ রহমান,ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম), এ্যাড. খোন্দকার মাহবুব হোসেন, ড. ওসমান ফারুক, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদীন ফারুক, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, আবদুল মান্নান, আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং শামসুজ্জামান দুদু অন্যতম।

 

খালেদা জিয়ার নির্দেশে তত্ত্বাবধায়ক ‍ও আওয়ামী লীগ সরকারের পুরো মেয়াদে সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকার কারণে সামনের কাউন্সিলে এসব নেতারা পুরস্কৃত হতে পারে বলেও সূত্র দাবি করে। তবে মেজর জেনারেল (অব.)মাহমুদুল হাসান, মুশফিকুর রহমান, মোসাদ্দেক আলী ফালু, অধ্যাপক এম এ মান্নান, ফজলুর রহমান পটল, মোশাররফ হোসেন, এনাম আহমেদ চৌধুরী, এ্যাড. এ জে মোহাম্মদ আলী, নুরুল ইসলাম,অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম , এ্যাড. আহমদ আযম খান, এ এস এম আবদুল হালিম, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, জহুরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন (অব.) সুজাউদ্দিন, ব্যারিস্টার মুহম্মদ হায়দার আলী, এম এ কাইয়ুম, খন্দকার শহিদুল আলম, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনদের মধ্যে কেউ কেউ সক্রিয় থাকলেও তাদের পারফরমেন্সে খুশি নন খালেদা জিয়া।

 

এছাড়া ১৭ ভাইস চেয়ারম্যানদের অনেকেই ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। তাদের মধ্যে কেউ হয় অসুস্থ না হয় বিদেশে। কেউ কেউ ছেলে মেয়েদের লন্ডনে বা আমেরিকায় দেখে আসার কথা বলে সেখানেই অবস্থান করছেন দীর্ঘদিন। অন্য নেতাদের মধ্যে বেগম সেলিমা রহমান, বিচারপতি টি এইচ খান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম), আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউছুফ, শমসের মবিন চৌধুরী (বীর বিক্রম), এম মোর্শেদ খান, বেগম রাবেয়া চৌধুরী, এয়ার ভাইস মার্শাল(অব.)আলতাফ হোসেন চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকা দলীয় কর্মকাণ্ডে কম বেশি সক্রিয় রয়েছেন।

 

তবে কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন (কায়কোবাদ) বিদেশে এবং আলহাজ্ব এ্যাড.হারুন আল রশিদ বিএনপির নয়াপল্টন ও গুলশান অফিসে তেমন একটা আসেন না বলে জানা গেছে। এছাড়া আব্দুস সালাম পিন্ট‍ু দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে। এ পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নামার আগে দল পুনর্গঠনকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। শিগগিরই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে বলেও জানিয়েছে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান অফিসের ওই সূত্র।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!