DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

উচ্চ ঝুকির কারনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং কমালো মুডিস

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ছয় মাস আগে শুরু করা পর্যালোচনার তথ্যের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা মুডিস অব্যবস্থাপনা ও উচ্চ-ঝুকির কারনে বাংলাদেশের ঋণমান(ক্রেডিট রেটিং) কমিয়ে দিয়েছে।

আগের বিএ৩ থেকে কমিয়ে বি১ করা হয়েছে। গতকাল এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংয়ের ক্ষেত্রে আগের মতো ‘নট প্রাইম’ মান বজায় রয়েছে। অপর দিকে বাংলাদেশের জন্য পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে বলে তারা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স।
রেটিং সংস্থাটির মূল্যায়ন অনুযায়ী, বৈদেশিক লেনদেন ও তারল্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচ্চমাত্রার ঝুঁকি রয়েছে। এর সাথে চলমান সঙ্কটকালে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাও দেখা গেছে। যে কারণে সার্বভৌম ঋণমানের রেটিং কমিয়ে বি১ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান পর্যালোচনার সিদ্ধান্তের পর সাতটি বেসরকারি ব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান বা রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করার ঘোষণা দিয়েছিল আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস। ওই সময় বলা হয়েছিল, দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের সার্বভৌম রেটিং ‘বিএ৩’ থেকে পুনর্মূল্যায়ন করতে এসব ব্যাংকের রেটিং পুনর্মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
গতকাল বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান সঙ্কটের মধ্যে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও ডলারের চাহিদা-জোগানের ফারাক রয়েই গেছে এবং বিদেশী মুদ্রার মজুদ কমে যাওয়ার বিষয়টি দেশের বৈদেশিক লেনদেন চাপে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এতে করে আমদানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং জ্বালানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
এদিকে ডলার সঙ্কটের সময় আমদানি কমাতে সরকার কড়াকড়ির যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল সেগুলোর পাশাপাশি নেয়া আরো কিছু অপ্রচলিত বিধিবিধান এখনো পুরোপুরি তুলে নেয়নি। মুডিস বলছে, আগের মতোই একাধিক বিনিময় হার এবং বেঁধে দেয়া সুদের হারের সীমা বহাল থাকায় তা সাধারণ কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করছে।
বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাটি বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী যে অনুপাতে রাজস্ব আহরণ হওয়ার কথা ছিল সেটির চেয়ে অনেক কম রাজস্ব পাচ্ছে। এতে বিভিন্ন নীতি পদক্ষেপ নিতে সরকারের হাতে বিকল্প থাকছে না। এতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদসহ অর্থ পরিশোধে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে, যা ঋণ গ্রহণের সক্ষমতাকে দুর্বল করার আভাস দিচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে মুডিস মনে করছে, বিদেশী অর্থায়ন বৈদেশিক লেনদেন এবং আর্থিক সূচকগুলোর চাপ কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে। আর বিদেশী মুদ্রার মজুদ কোভিড মহামারীর আগের চেয়ে কমই থাকবে। এ ছাড়া বেশি মাত্রায় নেয়া ঋণ আর্থিক পরিস্থিতি করবে। এর কারণ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি বলছে, আর্থিক খাতের যেসব সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে সেগুলো শেষ হতে অনেক সময় লেগে যাবে। একই সাথে মুডিস বাংলাদেশের স্থানীয় ও বিদেশী মুদ্রার সিলিং কমিয়ে বিএ২ ও বি১ এ নামিয়েছে, যা আগে ছিল যথাক্রমে বিএ১ ও বিএ৩।
মুডিসের মূল্যায়নে বাংলাদেশের বহিঃবাণিজ্যের অবস্থান মহামারীকালের আগের চেয়ে দুর্বল থাকবে। তবে বিদেশী ঋণ ও অর্থায়ন বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ কমা ঠেকাবে এবং ২০২৪ সালের জুনের দিকে গিয়ে স্থিতিশীল হবে।
অপর দিকে রিজার্ভের পরিমাণ মহামারীকালের আগের অবস্থানে যেতে আরো দুই থেকে তিন বছর লাগবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!