DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সংসদ নির্বাচনী হাওয়াঃব্রাম্মনবাড়িয়ার ৬টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন কারা।

দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ এখনও প্রায় দেড় বছর বাকি থাকলেও আগামী  একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হাওয়া ইতিমধ্যেই বইতে শুরু করেছে  ঢাকার অদূরের ঐতিহ্যবাহী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে।জাতীয় সংসদের  ছয়টি (২৪৩, ২৪৪, ২৪৫, ২৪৬, ২৪৭ ও ২৪৮) আসনে এরই মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা জনসংযোগ শুরু করেছেন।

এই আসনগুলোতে  মনোনয়ন পেতে অনেকেই তৃণমূলের পাশাপাশি কেন্দ্রেও তৎপরতা বাড়িয়েছেন। তবে এ জেলায় শিল্পপতি ও ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যাই বেশী। বয়সে প্রবীণদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মাঠে নেমেছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রার্থীও। আওয়ামী লীগ ও  বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যেই বেশি তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে জাতীয় পার্টি, জাসদ ও ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন। জামায়াত ও অন্য ছোটখাটো দলের নেই কোনো তৎপরতা। বিগত রমজান ও ঈদুল ফিতরকে ঘিরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে জানান দিয়েছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব একটা দূরে নয়। ঈদুল আজহাকে ঘিরেও প্রার্থীরা শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে ব্যানার ও ফেস্টুন তৈরি করছেন। 

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) : বিএনপি থেকে দলের সম্ভাব্য একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও শিল্পপতি সৈয়দ এ  কে এম একরামুজ্জামান। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।একইভাবে জাতীয় পার্টির নেতা ও শিল্পপতি রেজওয়ান আহমেদও প্রার্থী হতে পারেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) : এ আসনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারও দলের পক্ষে মনোনয়ন চাইবেন। তবে এই আসনে দলের শক্ত প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা শেখ মোহাম্মদ শামীম। এ ছাড়া সাবেক উপজেলা বিএনপি সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান এবং আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আসিফ আহমেদও মনোনয়নপ্রত্যাশী।

এই আসনে আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী অ্যাডভোকেট ছায়েদুল হক দলীয় একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।  এ আসনে বর্তমান এমপি ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা আগামী নির্বাচনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে এবার ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান রতনও শক্ত প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সহসভাপতি মঈনউদ্দিন মঈন, ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক উম্মে ফাতেমা নাজমা শিউলী আজাদও মনোনয়নপ্রত্যাশী। 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর):  এ আসনে এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপির অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল। এলাকায় নেতা-কর্মীদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন তিনি। এ ছাড়াও সাবেক মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট হারুন আল রশীদও মনোনয়ন চাইতে পারেন।

এই আসনে জেলা আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এখন প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। সভা-সমাবেশে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ করছে। নাসিরনগর হিন্দুপল্লীতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় দায়ভার আওয়ামী লীগের একাংশের। এ কারণে এই আসনে আওয়ামী লীগ নাজুক অবস্থায় পড়েছে। তবে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। দলের নেতা-কর্মীদের বড় একটি অংশই তার পক্ষে আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন ও মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান।অন্যদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের যুববিষয়ক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াও দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন। ইসলামী ঐক্যজোটের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত আমিনীও প্রার্থী হতে পারেন। হেফাজতে ইসলাম নির্বাচনে অংশ নিলে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে জানা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া): ঐতিহ্যবাহী এবং ভৌগলিক ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এই আসনে বিএনপির অন্যতম সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাবেক এমপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান। নাম শোনা গেলেও বার্ধক্য ও শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন কানাডায় মেয়ের সঙ্গে বসবাস করছেন এবং আদৌ নির্বাচন করবেন কিনা নিশ্চিত নয়।

এই আসনের মুসলিম লীগ দলীয় সাবেক এমপি ,তৎকালীন পুর্ব-পাকিস্তানের বিশিষ্ট শিল্পপতি , সমাজসেবক ও দানবীর মরহুম নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার(কসবার চারগাছ নিবাসী) দৌহিত্র কানাডা প্রবাসী বিএনপি নেতা এবং বিশিষ্ট সাংবাদিক ক্যাপ্টেন মারুফুর রহমান রাজু(অবঃ) এর নাম আসন্ন নির্বাচনে জোরে শোরে শোনা যাচ্ছে। বিগত বছর গুলোতে এই সাহসী সাবেক সেনা অফিসারের বলিষ্ঠ সরকার বিরোধী  প্রচার প্রচারনা এবং কার্যক্রম সর্ব মহলের দষ্টি আকর্ষন করেছে।পারিবারিক ঐতিহ্য ,মেধা এবং যোগ্যতায় তিনি এগিয়ে রয়েছেন বলে এলাকার নেতা-কর্মীগন মনে করেন।  এই আসনে অপর  সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কৃষক দলের  কেন্দ্রীয় নেতা বিশিষ্ট শিল্পপতি নাছির উদ্দিন হাজারী।

 এ আসনের বর্তমান এমপি আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।  তবে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শাহ আলমও মনোনয়নপ্রত্যাশী। তিনিও এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 অন্যদিকে জাতীয় পার্টি থেকে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে  কেন্দ্রীয় নেতা ও কসবা উপজেলা আহ্বায়ক তারেক-এ আদেল দলীয় প্রার্থী হতে পারেন বলে নেতা-কর্মীদের মুখে শোনা যাচ্ছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) : এ আসনে বিএনপি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দৌড়ঝাঁপ করছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তকদীর হোসেন মোহাম্মদ জসিম। তিনি নিজ এলাকার পাশাপাশি কেন্দ্রেও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়াও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন ভূঁইয়া শিশির ও সাবেক এমপি মরহুম কাজী আনোয়ার হোসেনের পুত্র কাজী নাজমুল হোসেন তাপসও মনোনয়নপ্রত্যাশী। শিশিরের পক্ষেও এলাকার নেতা-কর্মীদের একটি অংশ মাঠে নেমেছেন।

আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান এমপি ও উপজেলা সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট শিল্পপতি এবাদুল করিম বুলবুল, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী  মোরশেদ হোসেন কামাল, সাবেক ছাত্রনেতা আবু আব্বাস ভূঁইয়াও মনোনয়নপ্রত্যাশী। জাসদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট শাহ জিকরুল আহমেদ খোকনও তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা কাজী মামুনুর রশীদও দলের প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) : এ আসনে বিএনপি থেকে দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক ছাত্রনেতা রফিক শিকদার।তিনি নিয়মিত এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তবে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক এমপি ডিআইজি (অব.) এম এ খালেকও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।

আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে মাঠে রয়েছেন ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম এমপি। তিনি নিয়মিত এলাকায় জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে  জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আমজাদ হোসেনও দলের প্রার্থী হতে পারেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!