DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

হাসিনা সরকারের নিষ্ঠুর দমননীতি উগ্রপন্থিদের উত্থানে সহায়তা করছেঃ ক্রাইসিস গ্রুপ

icg copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ব্রাসেলসভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা , ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলেছে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে বিএনপির বৈরিতা নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে একইসঙ্গে বেড়েছে দমননীতিও। রাজনৈতিক মেরুকরণ ও দুর্বল ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। দমননীতির কারণে একদিকে সরকারের কর্মকাণ্ডের বৈধতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে এর মধ্য দিয়ে অন্য পক্ষকে সহিংস জবাব দিতে উস্কানি দেয়া হচ্ছে। যা কার্যত উগ্রপন্থিদেরই সুবিধা করে দিচ্ছে।

বাংলাদেশে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, উগ্রপন্থা ও ফৌজদারি বিচার’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি এ কথা বলেছে।

গতকাল সোমবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারকে নিজেদের স্বার্থেই এই পথ থেকে সরে আসতে হবে। নইলে সহিংস উগ্রবাদী এবং বিরোধী রাজনৈতিক হুমকি মোকাবিলায় তাদের ব্যর্থ হতে হবে। ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে ‘সবদিক দিয়ে শক্তিশালী’ করতে হবে, যাতে আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা যায়, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ‘ধস ঠেকানো’ সম্ভব হয়।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ নানাভাবে সরকার বিরোধীদের উপর ব্যাপকভাবে চড়াও হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক ও ভিন্নমত দমনে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। সরকার উগ্রপন্থিদের কাউকে কাউকে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করলেও তাতে ‘স্বচ্ছ ও সঠিক আইনি প্রক্রিয়া’ অনুসরণ করা হয়নি। বিরোধী মতের সংগঠনগুলোর সঙ্গে ঝামেলা মিটিয়ে ফেলে রাষ্ট্রকে স্থিতিশীল করতে হলে রাজনৈতিক সমঝোতার পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে দমন-পীড়ন এবং বিচার ব্যবস্থার অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।

নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপি ও তাদের শরিক জামায়াতে ইসলামী সহিংস আন্দোলনের পথ বেছে নিলেও বিএনপির ‘মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত’ সরকারের সামনে সংলাপের ‘একটি সুযোগ’ এনে দিয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লগিয়ে সরকার নিজের ‘আন্তরিকতা’ প্রমাণ করলে, বিরোধী মত ও সমালোচকদের ‘দমন-পীড়ন’ বন্ধ করলে, ‘হারানো ভাবমূর্তি’ পুনরুদ্ধার এবং বিচার ব্যবস্থা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর জনগণের ‘আস্থা ফিরে পাওয়া’ সহজ হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রাজনৈতিক বিবাদ মেটাতে সহযোগিতা করতে পারে। সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক অধিকার রক্ষায় আর্থিকভাবে ঢাকার উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে নয়াদিল্লির। বিরোধীদের ন্যায্যভাবে রাজনৈতিক মত প্রকাশ ও অংশগ্রহণে সুযোগ করে দিতে তারা আওয়ামী লীগের প্রতি আহ্বান জানাতে পারে। এখন আর সময় নষ্ট করার সুযোগ নেই। এ ধরনের বিরোধে সহিংস ও উগ্রপন্থার উত্থান হতে পারে।

প্রতিবেদনে সরকার, বিরোধী দল, বিচার বিভাগ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে। বিশ্বে সংঘাত বন্ধে কাজ করা ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত অলাভজনক একটি বেসরকারি সংস্থা। চারটি মহাদেশের ৬০টি দেশ ও ভূ-খণ্ড নিয়ে কাজ করছে তারা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!