DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বিএনপিতে ব্যপক পরিবর্তন আসছেঃ তরুনদের হবে জয়জয়াকার।

khaledazia-29decemberক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বিএনপি এখন এক ক্রান্তিলগ্ন অতিক্রম করছে। কালের বিবর্তনে শহীদ জিয়ার এই দলটি আজ দেশে বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে পরিনত হলেও সময়ের প্রয়োজনে  দল পুনর্গঠন করা এখন অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে ।

দল পুনর্গঠনের গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটি  লন্ডনে বসেই করছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়া । একইসঙ্গে জাপানি ও ইতালির দুই বিদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যাসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতিও সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি । লন্ডনে থেকেই প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন দলের নেতাদের।

দুই সপ্তাহের জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর বিএনপি চেয়ারপার্সন লন্ডন গেলেও দেশে ফিরতে তার আরো কিছুটা সময় লাগবে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, চোখের চিকিৎসা ও দলের পুনর্গঠনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ শেষ করেই তিনি দেশে ফিরে আসবেন। এখনো দেশে ফিরে আসার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি।

জানা গেছে, ইতিমধ্যে খালেদা জিয়া দল পুনর্গঠনের বিষয়ে খসড়া তালিকা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিসহ দলের অঙ্গ সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন।

দেশে ফিরেই পুনর্গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। সূত্র জানায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন তার বড় ছেলে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে পরামর্শ করেই আগামী দিনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য সব পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটিসহ জাতীয় নির্বাহী কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে তরুণদের প্রাধান্য দিয়েই নতুন নির্বাচন করা হচ্ছে। নতুন তরুণ নেতৃত্ব আগামীতে বিএনপির নীতি-নির্ধারণসহ দাফতরিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। দলের মূল চালিকা শক্তি হিসেবেই তারাই ভূমিকা পালন করবেন।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ১৯ সদস্যের স্থায়ী কমিটিতে ৯টি পদে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে চলতি বছরেই।

এর মধ্যে দলের সাবেক মহাসচিব প্রয়াত খোন্দকার দেলোয়ার হোসেনের শূন্য পদটি পূরণ ছাড়াও আরো ৮টি পদে রদবদলের চিন্তা ভাবনা চলছে।

বয়সের ভারে ন্যুব্জ ও শারীরিক অক্ষমতার জন্য ৫ সদস্যের সরে যাওয়ার বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত।

একই সঙ্গে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল বিলুপ্ত করে স্থায়ী কমিটির সমমর্যাদায় নতুন করে দলের উপদেষ্টা পরিষদ গঠনেরও প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এতে সদস্য থাকবেন সর্বোচ্চ ৩০ জন। চলতি বছর তথা আগামী দুই মাসের মধ্যেই এসব পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে।

সূত্র জানায়, দলের আসন্ন জাতীয় কাউন্সিলে ৩৮৬ সদস্যের সাজানো গোছানো নির্বাহী কমিটিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কাউন্সিলের এই ঝড়ে বড় বড় নেতাও ছিটকে পড়তে পারেন।

আবার ত্যাগী, যোগ্য, দক্ষ ও দীর্ঘদিন ধরে কোণঠাসা ছোট পদের নেতারাও আসতে পারেন গুরুত্বপূর্ণ পদে। ইতিমধ্যে বিএনপির পুনর্গঠনের জন্য নেতাদের সম্ভাব্য একটি নামের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। এম. শামছুল ইসলাম অসুস্থতা এবং দীর্ঘদিন অবৈধ সরকারের কারাগারে থাকা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মুক্তির অনিশ্চয়তার কারনে বাদ পড়তে পারেন।

এছাড়াও "নিষ্ক্রিয়তা, নানা অনিয়ম, দলের ভেতরে গ্রুপিং তৈরি করা, সরকারের সঙ্গে আঁতাতসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে" আরো "তিন বাঘা সদস্য" রয়েছেন বাদ পড়ার তালিকায়। তাদের ভিতর একজন ভাইস চেয়ারম্যান পদ আঁখরে রয়েছেন ।

স্থায়ী কমিটির এসব পদে স্থলাভিষিক্ত হতে পারেন ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসূফ, (এলডিপি বিলুপ্ত করে সদলবলে বিএনপিতে যোগ দেয়ার পর) কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম. মোর্শেদ খান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আব্দুল্লাহ আল নোমান, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী।

তবে স্থায়ী কমিটি থেকে যারা সরে যাবেন তাদের একই সমমর্যাদায় গঠিতব্য দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য করা হবে। একইসঙ্গে চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলও বাতিল করা হতে পারে।

আর এই উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান করা হতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদকে।

তার নেতৃত্বে এই পরিষদের সম্ভাব্য অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি টিএইচ খান, ড. আরএ গনি, মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, রিয়াজ রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক শওকত মাহমুদ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, ড. আসিফ নজরুল, মেজর জেনারেল (অব.) রুহুল আলম চৌধুরী, শামছুজ্জামান দুদু, ড. তুহিন মালিক, আহমেদ আজম খান, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, সাবেক সচিব মুশফিকুর রহমান, মেজর জেনারেল (অব.) মাহমুদুল হাসান, মীর মো. নাসির, হারুনুর রশিদ খান মুন্নু, ব্যারিস্টার হায়দার আলী, সাবেক শিক্ষা সচিব খন্দকার শহীদুল আলম প্রমুখ। এমাজউদ্দিন আহমদ প্রধান না হলে বর্তমান স্থায়ী কমিটির এক প্রবীণ সদস্যকেও আহ্বায়ক করা হতে পারে।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মহাসচিব পদের ঝুলন্ত বিষয়টিও এবার দেশে ফিরে 'নতুন চমক' দেখিয়ে নিষ্পত্তি করবেন চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।

নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও যুগ্মমহাসচিবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সম্পাদক পদে যারা আসতে পারেন তাদের মধ্যে রয়েছেন রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ, বরকতউল্লাহ বুলু, মিজানুর রহমান মিনু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, গোলাম আকবর খন্দকার, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস, নজরুল ইসলাম মঞ্জু, ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আহসান হাবিব দুলু, নাজিমউদ্দিন আলম, তাবিথ আউয়াল, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, এহসানুল হক মিলন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিব উন নবী খান সোহেল, আবুল খায়ের ভূইয়া, অধ্যাপক এমএ মান্নান, ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, রশিদুজ্জামান মিল্লাত, নাদিম মোস্তফা, ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদীর লুনা, শিরিন সুলতানা, রেহানা আক্তার রানু, নীলুফার চৌধুরী মনি, সৈয়দা আশিফা আশরাফি পাপিয়া, শাম্মী আক্তার, ব্যারিস্টার রুহিন আফরিন আহাদ, শ্যামা ওবায়েদ, সাইফুল আলম নীরব, আজিজুল বারী হেলাল প্রমুখ।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, দলীয় চেয়ারপার্সন এবার দেশে ফেরার পর দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি গবেষণা সেল খোলা হবে।

যা দলের ‘থিংক-ট্যাংক’ এর কাজ করবে। এই সেলে দলীয় ঘরানা এবং তার বাইরের সম্ভাব্য বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা কাজ করবেন।

জানা গেছে, দেশে ফিরে খালেদা জিয়া দলের নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং গুলশানে চেয়ারপার্সন কার্যালয়ের স্ট্রাকচারেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!