DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

জয়ের একাউন্টে অস্বাভাবিক অংকের টাকার সন্ধান মিলেছেঃতদন্ত কালে এফবিআই

2346ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ   প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি ব্যাংক  একাউন্টে  অস্বাভাবিক অংকের জমা টাকার খোঁজ পেয়েছে এফবিআই। যুক্তরাষ্ট্রের একটি তদন্ত টিম সম্প্রতি কয়েকটি ব্যাংকে তদন্ত চালিয়ে নিশ্চিত হতে পেরেছে জয়ের মোট টাকার পরিমাণ সম্পর্ক। একই সাথে এফবিআইর ঐ টিমটি খোঁজ নিচ্ছে এই বিশাল অংকের টাকা যুক্তরাষ্ট্রে কিভাবে কোথা হতে এসেছে।

 

সম্প্রতি এক প্রবাসী  বিএনপি নেতার পুত্র রিজভী আহমেদ সিজার এই বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপর যুক্তরাষ্ট সরকার তাদের নজরদারী এনে জয়ের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করেন। এফবিআইর তদন্ত টিমের এক অফিসার জানান, আমরা সজিব ওয়াজেদ জয়ের ১০টি ব্যাংক এ্যাকাউন্টের খোজঁ পেয়েছি। আরো থাকতে পারে বলে ধারণাও করছি। তবে ৬টি rizvi5এ্যাকাউন্টে তার মোট টাকার পরিমাণ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে রহস্যজনক মনে হওয়ায় আমাদের বিশেষ টিম টাকা কোত্থেকে এবং কিভাবে এলো সেই বিষয়ে খোজঁ নিচ্ছে। কারণ প্রতিটি ব্যাংকে গেলো ৬ বছরে যে পরিমান টাকা জমা হয়েছে তা যুক্তরাষ্টে বসবাসকারী বড় মাপের ব্যবসায়ীদের এ্যাকাউন্টেও নেই।

 

এফবিআইর ঐ কর্মকর্তা আরো জানান, মি: সজিব জয়  নিজের নামে এখানে কোনো ব্যবসার সাথে জড়িত নন। তাহলে এত টাকা এলো কি করে? এফবিআইর নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্র হোম অফিস জয়ের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে ৫টি বাড়ির সন্ধান পেয়েছে বলে হোম অফিসের এক কর্মকর্তা জানান। যা টেক্সাসে এবং নিউইয়র্কে কেনা হয়েছে। বাড়ির মুল্য প্রায় ৯ মিলিয়ন ডলারের উপরে। জয়ের আয়ের উৎস খুঁজতে হোম অফিস তদন্ত চালিয়ে তেমন কোনো ক্ষেত্র পায়নি যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আরো উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

জয়ের সাথে আন্তর্জাতিক কোনো মাফিয়া কিংবা অস্ত্র ব্যবসায়ী কিংবা মৌলবাদী জঙ্গির কানেকশন আছে কিনা এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন মার্কিন গোয়েন্দারা। হোম অফিসের কর্মকর্তা রিকি এলবার্ড জানান, এফবিআইর তথ্যমতে মি: সজিব ওয়াজেদ জয়ের এ্যাকাউন্টে অর্থ আদান প্রদান করেছে কয়েকটি দেশের ব্যাংক। এর মধ্যে অর্থ এসেছে বেশি বাংলাদেশ থেকে। এ পর্যন্ত হিসেবে মতে বাংলাদেশী টাকায় যার পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা।

 

মালয়েশিয়া সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়া, বৃটেন, রাশিয়া, চীন, দুবাই থেকেও প্রচুর টাকা এসেছে। আর এই অর্থ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইংল্যান্ডের কয়েকটি ব্যাংকে ট্রান্সফার হয়েছে। আবার বৃটেন থেকে অন্য এ্যাকাউন্টে কয়েক দফা টাকা এসেছে বলে তারা জানান। এফবিআই বলছে, টাকা ব্যয়ে তারা দেখেছে BANK OF AMERICA CORPORATION CHARLOTTE এই ব্যাংক থেকে টেক্সাসে একটি তেলের পাম্প মালিক পেয়েছে বড় মাপের একটি এমাউন্ট। তাতে ধারনা করা হচ্ছে পাম্প টি ক্রয় করেছেন জনাব জয়। অথবা তিনি কাউকে ক্রয় করতে টাকা দিয়েছেন। তবে ঐ পাম্প টির বর্তমান মালিক একজন বাংলাদেশী যার নাম সাদিকুর রহমান। পাম্প টি আগের মালিক ছিলো একজন ইউরোপিয়ান।

 

U.S. BANCORP MINNEAPOLIS নামের এই ব্যাংকের একটি এ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশী টাকায় প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা ট্রান্সফার হয়েছে টেক্সাসের একটি বাণিজ্যিক কার্যালয়ে। ঐ কার্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রে বড় বড় ভবন, হোটেল, মাকের্ট নির্মাণ এবং বেচা কেনা করে থাকে। ধারনা করা হচ্ছে জয় কোনো শপিংমল কিংবা হোটেল বা ভবন ক্রয় করতে এই টাকা ব্যয় করেছেন। তবে জয়ের টাকা যে সব ব্যাংকে পাওয়া গেছে বলে এফবিআই জানিয়েছে সেগুলো হলো :

1. JPMORGAN CHASE & CO. NEW YORK, NY

2. BANK OF AMERICA CORPORATION CHARLOTTE, NC

3. CITIGROUP INC. NEW YORK, NY

4. WELLS FARGO & COMPANY SAN FRANCISCO, CA.

5. GOLDMAN SACHS GROUP, INC. NEW YORK, NY ,

6. MORGAN STANLEY NEW YORK, NY.

7. U.S. BANCORP MINNEAPOLIS, MN

8. BANK OF NEW YORK MELLON CORPORATION NEW YORK, NY .

9. HSBC NORTH AMERICA HOLDINGS INC. NEW YORK, NY .

10. AMERICAN EXPRESS COMPANY NEW YORK, NY .

 

টেক্সাসে বসবাসকারী এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী জানান, জয়ের সাথে তার প্রায়ই দেখা হতো একটি ক্যাসিনোতে। তার সাথে তিন চার জন যুবক যুবতী থাকতো। জয় খুব খোলা মনে সবার সাথে মিশতেন। প্রচুর টাকা খরচ করতে তিনি পছন্দ করতেন। তার বন্ধুদের বিল তিনি মেটাতেন। জুয়া খেলায় বেশ পারদর্শী তিনি। এদিকে জয়ের সাথে বৃটেনের যে একাউন্টে টাকা লেন দেন হয়েছে ধারনা করা হচ্ছে। এ্যাকাউন্টটি তার খালা শেখ রেহানার। জয়ের একটি এ্যাকাউন্টে থেকে রেহানাকে দেয়া হয়েছে প্রায় বাংলাদেশী টাকায় প্রায় একশো ১২ কোটি টাকা। এই টাকা কয়েকটি ধাপে সেখানে ট্রান্সফার হয়েছে।

 

এদিকে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী শেখ রেহানার সাথে জয়ের আর্থিক লেনদেন দিয়ে বেশ ভালো ঝামেলা চলছে বলে তাদের ঘনিষ্ঠ একটি সুত্র জানায়। রেহানা তার প্রাপ্য ঠিক মত পাননি বা পাচ্ছেন না এমন অভিযোগে জয়ের সাথে কয়েকবার বিতর্কে জড়ান।

 

যুক্তরাজ্যের এইচএসবিসি ব্যাংকের একটি তথ্যে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেহানার এই এ্যাকাউন্টে গত ৬ বছরে এসেছে মোটা অংকের পাউন্ড জমা হয়েছে। শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যে কোনো চাকুরী কিংবা ব্যবসার সাথে জড়িত নন বলেও যুক্তরাজ্য হোম অফিস জানায়। আরেকটি সুত্রে জানা যায়, রেহানা কন্যা টিউলিপ নতুন একটি বাড়ি কেনার জন্য জয়ের কাছে কয়েক দফা ধর্না দিয়ে ব্যর্থ হলে রেহানা জয়কে এই বিষয়ে হুমকি প্রদান করে এমন কথাও বলেন যে, তোমার সকল টাকার তথ্য আমার কাছে আছে। বেশি বাড়াবাড়ি করলে সব ফাঁস করে দেবো। এই ঘটনার পর জয় তার মা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে কথা বলে প্রায় ৪২ কোটি টাকা টিউলিপের এ্যাকাউন্টে পাঠায়।

 

সুত্রটি জানায়, টিউলিপের সেই বাড়িটি কিং স্টোনে। উল্লেখ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই ) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তদন্ত চালাচ্ছে- এরকম সংবাদের ভিত্তিতে দুর্নীতি বন্ধে দেশের মানুষের কল্যাণের স্বার্থে এফবিআই’র কাছ থেকে সেই দুর্নীতির তথ্য চাওয়া হয়।

 

রিজভী আহমেদ সিজার নামের একজন আমেরিকান প্রবাসী সে তথ্য নেয়ার জন্য এফবিআর’র একজন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেন। আমেরিকার আইনে সেদেশের সরকারের অনুমতি ছাড়া সেই কর্মকর্তার সাথে তদন্ত বিষয়ের তথ্য নেয়া বেআইনী। কিন্তু আদালত রায়ে বলেছে জয়ের দুনীর্তি ও অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। তবে রিজভী সিজার বেআইনী  পদ্ধতিতে তথ্য জানতে চাওয়ায় তাকে ৪২ মাসের করাদন্ড দেয়া হয়েছে।

 

rizvi6কিন্তু আওয়ামী লীগ দল ও তাদের গণমাধ্যম দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করছে জয়কে অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে। সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি নাটক এটি। জয়ের দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্যই অপহরণের মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে সরকার।এই রিজভী সিজারই যদি তাকে অপহরণই করবে তাহলে এখন সিজারকে জেলে প্রেরণের নির্দেশের পরও সারাদেশে জয়ের অপহরণের বিষয়ে কর্মসূচি দিচ্ছে কেন? কারণ একটাই জয়ের দুর্নীতিকে ধামাচাপা দেয়া। আমেরিকার আদালতের  রায়ে জয়ের অপহরণ বিষয়ে কোন উল্লেখই নেই। তবুও একটি মিথ্যাকে হিটলারের তথ্যমন্ত্রী গোয়েবলসের মতো করে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে, সাবেক জাসদ গনবাহিনীর প্রধান, হালের আওয়ামী প্রেমী তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু,  আওয়ামী লীগ ও তাদের দলীয় গণমাধ্যমগুলো।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!