নাগরিকদের প্রতি পুলিশের আচরণ নিয়ে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের সমালোচনামূলক বক্তব্যের পর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েই যাচ্ছে।
সোমবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা এ প্রসঙ্গে তুললে ড. মিজানুর রহমানের প্রতি ইঙ্গিত করে ডিএমপি কমিশনার বেনজির আহমেদ বলেন, ‘কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনকে নিষিদ্ধ বা জঙ্গিকে জঙ্গি না বললে সেটি তার বিষয়। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই আইন লঙ্ঘিত হবে।’
সম্প্রতি পুলিশের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দেখতে গিয়ে পুলিশের কড়া সমালোচনা করেন ড. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আহত যুবককে পুলিশ অস্ত্র ঠেকিয়ে পায়ে এবং কোমরে গুলি করেছে। দেশের কোনো আইন কোনো কর্তৃপক্ষ কাউকে এভাবে গুলি করার অধিকার দেয়নি।’
তবে ডিএমপির দাবি, আহত যুবক নাফিস সালাম ওরফে উদয় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সদস্য। ডিএমপির এক বিবৃতিতে বলা হয়, মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উসকে দেবে। এরপর পাল্টা বিবৃতিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনার বলেন, ‘কেউ নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও তাকে গুলি করার কোনো অধিকার পুলিশের নেই।’
পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙে গেছে- মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘পুলিশের চেইন অব কমান্ড ভেঙেছে কি না, তা তদন্ত না করে ঢালাও অভিযোগ করা ঠিক নয়। বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থা তদন্ত করে দেখতে পারে। তাদের তদন্ত করার অধিকার রয়েছে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে পারে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘হিযবুত তাহরীর ২০১০ সাল থেকে নিষিদ্ধ সংগঠন। সেটির আইটি (তথ্য-প্রযুক্তি) পরামর্শদাতা ছিল ওই যুবক। তাকে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়।’
মানবাধিকার কমিশন ও পুলিশ দু’টোই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমবার জবাব দিয়েছি। পরেও ইচ্ছে করলে দিতে পারতাম। কিন্তু বিশেষ ব্যক্তির সঙ্গে বাহাস করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এটি আমরা চাই না। বাহাস নোঙরামি। আইনের ধারা-উপধারায় পাজল তৈরি করে মানুষকে পাজল করা যাবে না।’
সোমবারের ওই অনুষ্ঠানে পুলিশের কাজে সহায়তা করায় তিনজনকে পুরস্কৃত করা হয়। গত ৬ নভেম্বর জামায়াতের হরতাল চলাকালে রাজধানীর শ্যামলীতে একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। সেখান থেকে দু’জনকে ধাওয়া দিয়ে ধরে পুলিশে দেন পুরস্কৃতরা। তারা হলেন- ঠিকাদার ব্যবসায়ী হাসান মিয়া, শহীদুল আলম খান কাজল ও মনির হোসেন জয়। তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকার চেক ও অভিনন্দনপত্র দেন পুলিশ কমিশনার।