DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সংলাপের মাধ্যমে দ্রুত নতুন নির্বাচন চায় বিএনপিঃ নির্দলীয় সরকার প্রশ্নে কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত

10254019_10203643333833025_7184391415674446518_nদৈনিক প্রথম বাংলাদেশ বিশ্লেষনঃ   দ্রুত নতুন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় সরকার দাবিতে কিছুটা ‘ছাড়’ দিতেও রাজি সংসদের বাইরে থাকা বিএনপি। এতদিন এ দাবিতে অনড় থাকলেও দলটি এখন সেখান থেকে কিঞ্চিত সরে আসার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ জন্য দ্রুত সংলাপে বসতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে দলটি। বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

 

বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান তারা। এ জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে। আগামী কয়েক মাস কূটনৈতিক তত্পরতা চালানোর পাশাপাশি আন্দোলনে মাঠে সক্রিয় থাকবে দলটি।

 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, ‘সংলাপে বসলে আমরা কিছু ছাড় দিতে প্রস্তুত আছি। সরকারের দায়িত্ব সংলাপের আয়োজন করা। তাহলে সমস্যার সমাধান হবে বলে আমি মনে করি।

সূত্রমতে, কয়েকদিন আগে সংলাপের বিষয়ে কয়েক ঘনিষ্ঠ নেতার সঙ্গে কথা বলেছেন খালেদা জিয়া। সেখানে নেতারা বলেন, চাইলেই সরকার সংলাপের আয়োজন করবে। এ জন্য তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। এ সময় সিদ্ধান্ত হয়, আপাতত সভা-সেমিনারে সংলাপের কথা বলে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে দলটি। ওই আলোচনার এক পর্যায়ে খালেদা জিয়া নির্দলীয় সরকার বিষয়ে ছাড় দেয়ার বিষয়ে তার সিদ্ধান্তের কথা নেতাদের জানান।

 

জানা গেছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করছেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ইতিমধ্যে লন্ডনে বিজেপির যে শাখা রয়েছে, তাদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন তিনি। কয়েক শিক্ষাবিদ তারেক রহমানের পক্ষে বিজেপি সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন— এমন খবরও শোনা যাচ্ছে।

 

এর বাইরে বিএনপির কয়েক নেতা শিগগিরই ভারত যাওয়ার কথা রয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি এবং কীভাবে ভারতের সহযোগিতা পাওয়া যায়, সে বিষয়ে কাজ করছেন চেয়ারপারসনের দুই উপদেষ্টা।

 

সবকিছুই করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে বলেছে, খুব দ্রুত আরেকটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে তারা উদ্যোগ নেবেন।

 

এ বিষয় সামনে রেখে এখন সংলাপের জন্য চাপ সৃষ্টি শুরু করেছে বিএনপি। দলটি মনে করছে, অব্যাবহভাবে চাপ সৃষ্টি করলে এ বিষয়ে একটি জনমতও তৈরি হবে। এক পর্যায়ে সরকার সংলাপের আয়োজন করতে বাধ্য হবে।

 

কিছুদিন আগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে নতুন নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন দুদিন আগে। এর জবাবে সোমবার রাতে খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘সঙ্কটের সমাধান চাইলে অবশ্যই আমার সঙ্গে আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলতে হবে। ৯৫ শতাংশ জনগণ আমার সঙ্গে আছে।’

 

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে খালেদা জিয়া আরও বলেন, ‘আমি বিরোধী দলের নেতা নই। আমি জনগণের নেতা। দেশের ৯৫ শতাংশ জনগণ আমার পক্ষে। যদি ৫ জানুয়ারি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতো তাহলে আমি বিরোধীদলীয় নেতা নয়, সংসদে প্রধানমন্ত্রী হতাম। আমার ডাকে সাড়া দিয়ে ৯৫ শাতাংশ মানুষ ভোট দেয়নি। আপনি (শেখ হাসিনা) মাত্র ৫ শতাংশের নেতা। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। জনগণের প্রধানমন্ত্রী নন। কাজেই আলোচনা যদি করতে হয় আমার সঙ্গেই করতে হবে।’

 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতরের পরপরই সরকার সংলাপের আয়োজন না করলে ধীরে ধীরে আন্দোলনে যাবে দলটি। সেই প্রস্তুতি নিয়ে দল গোছানোর কাজটি রোজার মধ্যেই সারতে চান দলের হাইকমান্ড।

খালেদা জিয়ার বরাত দিয়ে বিএনপি নেতারা দৈনিক প্রথম বাংলাদেশকে বলেন, আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, রোজার পর ঢাকায় একটি বড় সমাবেশ করে খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং সংলাপের আয়োজন করতে সরকারকে আল্টিমেটাম দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। এতে সাড়া না দিলে আন্দোলনে নামবে দলটি।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!