DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

জামাত নিষিদ্ধ হলে লাভ বিএনপিরঃ তাই জামায়াত নিয়ে খেলছে আওয়ামী লীগ

1395751112.দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ বিশ্লেষনঃ এবার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা নয় বরং ইস্যুটি টিকিয়ে রেখে, ‘পঙ্গু গণতন্ত্র’কে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। এতদিন এই ইস্যুটি কাজে লাগিয়েই নানান ব্যর্থতা, সমালোচনা ও দুর্নীতি সত্ত্বেও নিজেদের রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার পেছনে যৌক্তিকতা দেখিয়ে আসছিল তারা। এবার একই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে গণতন্ত্রের অঙ্গহানিকেও সহনীয় করে তোলার চেষ্টা করছে দলটি।

দশম সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিয়েছে, জামায়াতের পক্ষাবলম্বনের অভিযোগ তুলে বিএনপির সাথে কোন রকম সমঝোতায় যাবে না দলটি। ফলে, বেড়ে যাবে আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় টিকে থাকা ও পঙ্গু গণতন্ত্রের আয়ুষ্কাল। এতদসত্ত্বেও রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কোন পদক্ষেপ নেবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার রাজনৈতিক ম্যান্ডেট, সাংবিধানিক ক্ষমতা ও আইনগত সুবিধা সবই রয়েছে আওয়ামী লীগের একান্ত অনুকূলে।

আওয়ামী লীগের এই কুশলী অবস্থানের কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলছেন, জামায়াত ইস্যু টিকে না থাকলে আচমকা একটি মোক্ষম রাজনৈতিক অস্ত্র হারিয়ে ফেলবে দলটি। তখন, বিএনপির সাথে সমঝোতায় না গিয়ে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার কারণটি উবে যাবে। এর বিপরীতে জামায়াত নিষিদ্ধ হলে বিএনপি অনেক বেশি সংহত ও শক্তিশালী হয়ে পড়বে। তাই, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করবে না আওয়ামী লীগ।

এছাড়া, বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্ককে প্রধান করে তুলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও প্রহসনের ভোট ও নির্বাচনকে অনেক বেশি সহনীয় রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যৎয়েও নিজেদের এই চেষ্টা জারি রাখবে তারা।

একারণে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা লুটার পথ বন্ধ করে দিতে চাইবে না আওয়ামী লীগ। তখন মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সহযোগী আখ্যা দিয়ে বিএনপিকে কোণঠাসা করে রাখতে এবং বিএনপিকে পাশ কাটিয়ে নিজেদের নিরবিচ্ছিন্ন ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে পারবে না আওয়ামী লীগ।

পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে ভোটের রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হয়ে পড়বে বিএনপি। কেননা, জামায়াত-শিবিরের অধিকাংশ ভোট আওয়ামী লীগ বা অন্য কোন ইসলামী রাজনৈতিক দলের পক্ষে না গিয়ে যাবে বিএনপির পকেটে। ফলে, জামায়াত নিষিদ্ধ হলে ভোটের রাজনীতিতে অনেক বেশি লাভবান হবে বিএনপি। একইভাবে রাজনীতির ইমেজের বিচারেও নিজেদের সংহত করতে পারবে বিএনপি। বিএনপির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা-কর্মীরা জামায়াতকে গলার কাঁটা হিসেবেই মনে করে। জামায়াতের সাথে জোটবদ্ধতার কারণে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ব্যাপক বিরোধ ও সমালোচনা গিলতে হয় বিএনপিকে। এই কারণেই, আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিলে সহজেই নিজেদের ইমেজ সংকট থেকে মুক্তি পাবে বিএনপি। তাই, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে বিএনপির রাজনীতিকে এগিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করবে না আওয়ামী লীগ।

এই সমস্ত কারণে, জামায়াতকে নিষিদ্ধ না করে, এই ইস্যুটিকে জিইয়ে রেখে ফায়দা লুটার চেষ্টা করতে থাকবে আওয়ামী লীগ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!