DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সরকার দেশে জঙ্গলের শাসন কায়েম করেছে

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আবাসিক হলে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

বিবৃতিতে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, গত ৯ বছরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বহিরাগত নারীকে শারীরিক হেনস্তার ১০টিরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। যার সব ঘটনায় জাবি শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করলেও অধিকাংশই সময়েই পার পেয়ে যায় ছাত্রলীগের অভিযুক্তরা। বারবার ছাড়া পাওয়ার কারণেই গত ৩ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) আবারও এক দম্পতিকে ডেকে নিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ওইদিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলসংলগ্ন জঙ্গলে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় প্রমাণ করে সরকার দেশে জঙ্গলের শাসন কায়েম করেছে।

তারা বলেন, শুধু ধর্ষণ-চাঁদাবাজিই নয়, জাবির পাবলিক হেলথ বিভাগে শিক্ষিকা হিসেবে সদ্য নিয়োগ পেয়েছেন উক্ত বিভাগের ৪২ তম ব্যাচের একজন ছাত্রী। সম্প্রতি এই শিক্ষিকার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তেরও একটি ছবি ভাইরাল হয়। ছবিতে ওই শিক্ষিকাকে জনি নামের এক শিক্ষকের কোলে বসে থাকতে দেখা যায়। এ রকম অনৈতিক একটা বিষয় জনসমক্ষে প্রকাশ পাওয়া এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও, উক্ত শিক্ষিকার নিয়োগ বাতিল হয়নি। অভিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা কারও বিরুদ্ধেই এখন পর্যন্ত কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই ঘটনা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

ইউট্যাব নেতারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো মানুষ গড়ার সর্বোচ্চ স্থান। কিন্তু সেই বিশ্ববিদ্যালয়ও আজ অনিরাপদ। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানুষকে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে স্ত্রীকে ধর্ষণ বর্বরতা ও ন্যক্কারজনক ঘটনা ছাড়া কিছুই নয়। বর্তমানে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় দলীয়করণের মাধ্যমে এসবের স্বকীয়তা বিনষ্ট করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারি একতরফাভাবে ডামি সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের জীবনকে আরও দুবির্ষহ করে তুলেছে। দেশে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা না থাকায় তাদের ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ বার বার অন্যায়-অপকর্ম করে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না। ছাত্রলীগ যেন সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি ও নারী নির্যাতনের অপর নাম হয়ে গেছে। ছাত্রলীগের নাম শুনলেই এখন দেশের মানুষ আঁতকে ওঠে। আসলে যেখানে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন নেই সেখানে বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে।

ইউট্যাবের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতা জবরদখলের পর প্রত্যেকটি খাতে দলীয়করণ করেছে। যে কারণে দেশে ন্যায় বিচার, মানবাধিকার, ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র নেই। দেশে চলছে একদলীয় শাসন ও এক ব্যক্তির শাসন। আমরা শিক্ষকসমাজ মনে করি, দেশে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র, জবাবদিহিমূলক সরকার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহাবস্থান না থাকার কারণে ছাত্রলীগ যা খুশি করছে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কর্তৃক স্বামীকে আটকে রেখে তার স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় শিক্ষক সমাজ হিসেবে আমরা বিব্রত এবং লজ্জিত। বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে হলে অবিলম্বে সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে ছাত্রলীগের কাছে দেশের সকল শিক্ষাঙ্গন অরাজকতায় পরিণত হবে। একইসঙ্গে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নারী ধর্ষণের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের অভিযুক্ত কুলাঙ্গারদের শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!