DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

খালেদা জিয়া সাজা স্থগিতের আবেদন করলে সরকার বিবেচনা করবেঃ এটর্নী জেনারেল মাহবুবে আলম

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কারাবন্দি ও অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যদি সাজা স্থগিতের আবেদন করেন তাহলে সরকার সক্রিয়ভাবে তা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘সাধারণত সাজা সাসপেন্ড (স্থগিত) করা হয় অনেকদিন সাজা খাটার পরে। অনেকদিন সাজা খাটার পরে সরকার বিশেষ বিবেচনায় এটা (সাজা স্থগিত) করে, করতে পারে।’
তিনি বলেন, জেলখানায় যারা থাকেন এবং বহুদিন কারাভোগ করেন, ৪০১ (১) ধারা (ফৌজদারি কার্যবিধি) অনুযায়ী তাদের নানাবিধ বিবেচনায় অনেক সময় সাজা স্থগিত করা হয়। কিন্তু তারা যদি প্রমাণ করতে পারেন তবে সে ব্যাপারে সরকার দেখবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারায় সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহবায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
ওইদিন খালেদা জিয়ার অন্যতম এই আইনজীবী বলেছিলেন, ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে আছেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারা মোতাবেক খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত করে তার ইচ্ছামতো চিকিৎসা নিতে দেশে/বিদেশে সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

যেহেতু সম্প্রতি বেগম খালেদা জিয়ার স্বজনরা দেখা করে এসে দাবি করেন, খালেদা জিয়ার হাত ও আঙুল বাঁকা হয়ে গেছে, ডায়াবেটিস ১৮, হাঁটু ফুলে গেছে, তিনি এখন স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে পারছেন না, এমন পরিস্থিতিতে তিনি বাঁচবেন কি না— এমন প্রশ্নও তোলেন। ৫ বছরের সাজার মধ্যে খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে প্রায় দুবছর সাজা ভোগ করেন।

এছাড়া তিনি বয়স্ক নারী, গুরুতর অসুস্থ, সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী, তিনবারের প্রধানমন্ত্রীর এসব দিকগুলো বিবেচনা করে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে রাষ্ট্র ইতিবাচক বলে মনে করছেন বিশেষ মহল।

তবে হঠাৎ করেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার মুখে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের বিষয়টি শুনে সকলেই আশ্চর্যান্বিত। তারা মনে করছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল হলো সাংবিধানিক পদ। সরকার যাবে আসবে কিন্তু এই পদটি থাকবে। তার মুখে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি রহস্যজনক মনে করা হচ্ছে। তারা হুট করেই অ্যাটর্নি জেনারেলের কথায় আবেদন করবে না।

তবে তারা বলছেন, যেহেতু আদালত বলেছেন, খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসা দিতে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সুযোগ সুবিধার অভাব রয়েছে সেহেতু সরকারের একক ক্ষমতা রয়েছে সাজা স্থগিত করার।

এ নিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন  বলেছেন, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের জন্য আবেদনের দরকার নেই।  আমরা গেল বছরের নভেম্বরেই গুরুতর শারিরিক অসুস্থতার কারনে তাঁর সাজা স্থগিতের আবেদন করে রেখেছি। সাজা স্থগিত করা সরকারের একক ক্ষমতা। বিএনপি আবেদন করলে সরকার ভেবে দেখবে এরকম কোনো বিধান নেই। খালেদা জিয়া যেহেতু গুরুতর অসুস্থ। এটা আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি।  আমরা বরাবরই আদালতে বেগম জিয়ার নির্দোষিতা প্রমানের চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আদালত তার উন্নত চিকিৎসার কথা বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সুযোগ সুবিধার অভাব রয়েছে। যেহেতু খালেদা জিয়া সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, এখানে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা নাই। এ পরিস্থিতিতে সরকার তার জামিন স্থগিত করে দিয়েও মুক্তির ব্যবস্থা করতে পারেন। আমি আবারও বলছি, সাজা স্থগিতের বিষয়টা সরকারের একান্ত নিজস্ব দায়িত্ব, যেহেতু খালেদা জিয়া মারাত্মক অসুস্থ, সেহেতু এটা সরকারের মানবিক দায়িত্ব এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব তার চিকিৎসা করা।

সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন সম্পাদক অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার এ বিষয়ে  বলেন, আমার মনে হয় তারা এ ব্যাপারে অতীতে অনেকবার নানাভাবে আবেদন করেছে। আদালতের জামিন দেয়ার ব্যাপারে এখতিয়ার রয়েছে। আদালত ইচ্ছা করলে জামিন দিতে পারতো কিন্তু আদালত দেয় নাই। দুর্ভাগ্যজনক আমাদের দেশেতো আদালত স্বাধীন না, এটাতো আদালতের ওপর নির্ভর করে। কিন্তু সরকারের সবুজসংকেত না থাকলে আদালত মুক্তি দেবে কেন— আমি নিশ্চিত না।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!