ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এখন রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে প্রতিহিংসা আর প্রতিপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়া। তাই বিরোধী দলে থাকা যায় না, থাকতে হবে সরকারেই বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
আজ শনিবার বিকেলে ইনষ্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির ২৭ তম জাতীয় সম্মেলনে এরশাদ এসব কথা বলেন।
এরশাদ বলেন, ‘সমাজে শুধু অনাচার আর অবিচার চলছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ছাত্রদের ওপর নির্যাতন চলছে। হাতুড়ি পেটা করে পা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কোটা সংস্কারের জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছেন, এই কমিটি আরও আগে করলে এত কিছু হতনা। সামাজিক ব্যাধি, ঘুষ ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে দেশ। মাদকের কড়াল গ্রাসে যুব সমাজ ধ্বংসের মুখে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সাংস্কৃতিক চর্চার বিকল্প নেই। বাবা-দাদার সংস্কৃতিই আমাদের প্রকৃত সংস্কৃতি, সেখানেই ফিরে যেতে হবে আমাদের। ফিরে যেতে হবে ঐতিহ্যের কাছে।’
শিক্ষা ব্যবস্থার সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কিছু শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেন, কিন্তু ক্লাসে পড়ান না। তাদের কাছে কোচিং না করলে ছাত্ররা পাশ করতে পারে না। অথচ কোচিং করানো নিষিদ্ধ। একই সময়ে কিছু শিক্ষক বেতনের দাবিতে রাস্তায় শুয়ে অনশন করছে, এই বাস্তবতা মেনে নেওয়া যায় না।’
দেশীয় সংস্কৃতি প্রসঙ্গে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসনে দেশীয় সংস্কৃতি হুমকির মুখে। দেশে প্রায় ৫০টি টিভি স্টেশন আছে, কিন্তু পরিবারের সবাই বিদেশি চ্যানেলেই চোখ রাখেন। শুধু সংবাদ দেখার জন্য দেশি চ্যানেল দেখেন সবাই। আক্ষেপ করে বলেন, দেশি সিনেমা কবে দেখেছি, এখন আর মনে করতে পারছিনা।’ তাই দেশীয় সংস্কৃতি বিকাশে জাতীয় সংস্কৃতিক পার্টিকে আরও জোড়ালো ভূমিকা রাখতে আহ্বান জানান তিনি।
এরশাদ বলেন, ‘দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ণে জাতীয় পার্টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তিনদিনের পথ আমরা তিন ঘন্টায় নিয়ে এসেছি। দেশের প্রয়োজনে সেনাবাহিনী থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছি, মানুষকে ভালোবেসেছি তাই এখনো টিকে আছি। ২৭ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও আমরা টিকে আছি শুধু মানুষের ভালোবাসায়।’
চলচ্চিত্র নায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানাকে সভাপতি ও নাজমুল খানকে সাধারণ সম্পাদক করে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে নির্দেশও দেন তিনি।
এ সময় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির সভাপতিমন্ডলির সদস্য মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি.এম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু প্রমুখ।