DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বাংলাদেশের ব্যাংকে রক্ষিত জনগনের টাকা কি গনিমতের মাল ?????

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর এখন বেশ টালমাটাল সময় পার করছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরা-খবর বের হচ্ছে।সরকারী পৃষ্টপোষকতায় এতো বড় ব্যাংক লুট বাংলাদেশের ইতিহাসে আর হয়নি।

বলা হচ্ছে,এসব কারনে বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকে নগদ টাকার সঙ্কট তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় বেসরকারি ব্যাংকগুলো একদিকে উচ্চ সুদে আমানত সংগ্রহ করছে এবং অন্যদিকে সরকারি অর্থ তাদের ব্যাংকে জমা রাখার দাবীও আদায় করেছে সরকারের কাছ থেকে।

বেসরকারি ফারমার্স ব্যাংকে ৬০০ কোটি টাকার অনিয়মের পর থেকেই ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতার শুরু হয়। ছয়-সাত মাস আগেও বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক, যেখানে আমানতের উপর পাঁচ থেকে ছয় শতাংশের বেশি সুদ দিতো না, এখন তারাই দ্বিগুণ হারে সুদের বিনিময়ে আমানত সংগ্রহ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বেসরকারি ব্যাংক মালিকদের সংগঠন বিএবি'র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার দাবী করেন, সব ব্যাংকে এ সঙ্কট নেই। যারা এ সংকটে পড়েছে তারা অতিরিক্ত বিনিয়োগ করেছে এবং পুরো খাতে ফারমার্স ব্যাংকে অনিয়মের প্রভাবও পড়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ব্যাংক মালিকরা সরকারের কাছ থেকে কৌশলে নানা সুবিধা আদায় করে নিচ্ছেন। আগে সরকারি ফান্ডের ৭৫ শতাংশ টাকা রাখা হতো সরকারি ব্যাংকে।

এখন নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সে টাকার ৫০ শতাংশ রাখা হবে বেসরকারি ব্যাংকে।

বিএবি'র সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদার মনে করেন, 'অলস টাকা' বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হলে অর্থনীতিতে গতি আসবে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে টাকা জোগানোর জন্য আরো একটি পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। একটি ব্যাংকে মোট আমানতের যে পরিমাণ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখা হতো এখন সেটি এক শতাংশ কমিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে করে ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত ১০ হাজার কোটি টাকা আসবে।

বাংলাদেশে ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খন্দকার ইব্রাহিম খালেদ মনে করেন, কিছু ব্যাংক মালিক কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন। মি: খালেদ বলেন, "যেসব ব্যাংকের মালিকরা এখন হইচই করছেন, সেসব ব্যাংকের মালিকরা জনগণের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন। ১০০ টাকা ডিপোজিট থাকলে ৮৫ টাকা ধার দেয়া যায়। কিন্তু সেসব মালিকরা ১০০ টাকার বিপরীতে ১২০-১১৫ টাকা অ্যাডভান্স করে বসে আছেন। তাদের তো শাস্তি হওয়া উচিত ছিল।" যারা অনিয়মের সাথে জড়িত তাদের শাস্তি না হয়ে উল্টো তাদেরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে বৈঠক করতে দেয়া হয় বলে মি. খালেদ উল্লেখ করেন।

মি. খালেদসহ অনেক বিশ্লেষক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকার সমালোচনা করছেন। এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যথাযথ দায়িত্ব পালন করেনি বলেও মি. খালেদ মনে করেন।

কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র দেবাশীষ চক্রবর্তী সেটি মানতে নারাজ। মি. চক্রবর্তী বলেন, "দু একটি ব্যাংকে এ ধরনের সঙ্কট তৈরি হতে পারে।" তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে খাদ্য-দ্রব্য আমদানি এবং রূপপুর পারমানবিক প্রকল্পের মতো বড় ধরনের প্রকল্পের যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য অনেক ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। ফলে আর্থিক খাতে কিছুটা সংকোচনের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে বলে মি: চক্রবর্তী উল্লেখ করেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের সাথে সম্পৃক্তদের যদি শাস্তি না হয় তাহলে এ অনিয়ম বন্ধ করা বেশ কঠিন হবে। আর সেটি না হলে গ্রাহকদের টাকা নিয়ে যথেচ্ছাচারকেই উৎসাহিত করা হবে বলে তাদের আশঙ্কা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!