DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

জিয়া-খালেদা-এরশাদ সবাই ভারতের দালাল:শেখ হাসিনা

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দলটির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও পতিত স্বৈরাচার, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং হাসিনার বিশেষ দুত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ভারতের দালাল বলে আখ্যায়িত মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, দালালির কারণে স্থল ও সমুদ্রসীমা চুক্তি, গঙ্গার পানিসহ বাংলাদেশের অধিকার আদায়ের কথা তারা উচ্চারণই করেনি।

শনিবার (১১ মার্চ) দুপুরে খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউটে যুব মহিলা লীগের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে এ মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সীমান্ত চুক্তি করে রেখে যান। আইন করে রেখে যান। সংসদে সেই আইন পাস হয়। কই বিএনপি, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া যারাই ক্ষমতায় ছিলো কেউ তো কখনো একবারের জন্যও সীমানার দাবিও করেনি। সীমানা নির্দিষ্ট করার কোনো পদক্ষেপও নেয়নি তারা।

‘করার সাহসও পায়নি আমি বলবো। দালালি এমনভাবে ছিলো যে, ওরা সে কথা উচ্চারণই করেনি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রসীমা আইনও জাতির পিতা করে রেখে যান। জিয়া, খালেদা, এরশাদ (এই তিনজনের) কারো সরকারই ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের সমুদ্রসীমার বিষয়ে কোনো আলোচনা, মামলা বা কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে? নেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন: ‘কেন নেয়নি? তারা যদি এতোই দেশপ্রেমিক হবে, তাহলে দেশের এই সমস্যার কথা তোলেনি কেন?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজকে শুনি খুব ভারতবিরোধী কথা।যারা ভারতের কাছ থেকে কিছুই আদায় করতে পারেনি, এখন আবার খুব ভারতের বিরুদ্ধে কথা বলে।এই সমস্ত খেলা তারা বহু খেলেছে। তাদের কোনো দেশপ্রেম নেই। ক্ষমতা তাদের কাছে ভোগের বস্তু।

‘২০০১ সালে খালেদা জিয়া মুছলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে’ মন্তব্য করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে যখন আমেরিকান কোম্পানি আমাদের গ্যাস বিক্রি করতে চাইলো ভারতের কাছে, তখন ভারতের কাছে গ্যাস বিক্রি করার মুছলেকা দিয়েছিল খালেদা জিয়া। দিয়েই তো ক্ষমতায় এসেছিল।

‘আমি তো দিইনি।’–উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম আগে আমার দেশের মানুষের কাজে লাগবে, ৫০ বছরের রিজার্ভ থাকবে। তারপরে আমরা ভেবে দেখবো বিক্রি করবো কি করবো না।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যাদের বিরুদ্ধে এতো কথা বলে, এখানে সেই ‘র’ (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এর প্রতিনিধি সে তো হাওয়াভবনেই বসে থাকতো। আমেরিকান এম্বেসির লোক হাওয়াভবনে বসে থাকতো। উদ্দেশ্য ছিল, ২০০১ সালের নির্বাচন আওয়ামী লীগকে হারানো এবং এখান থেকে গ্যাস নেওয়া।

তিনি বলেন, আমি বলেছিলাম, আল্লাহই গ্যাস দেবে না। বিক্রি তো দূরের কথা। গ্যাস পায়ওনি।

‘কিন্তু মুছলেকা তো দিয়েছিল (খালেদা জিয়া)। তাদের মুখে আবার এতো ভারতবিরোধী কথা!’

গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরেকটা প্রশ্ন রাখি, ‘৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এল। ক্ষমতায় এসে (খালেদা্) ভারত গেল। ভারত গিয়ে উনি বেশ ঘুরেটুরে আসলেন। যখন এখানে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করলো, গঙ্গার পানির কি হলো?

‘গঙ্গার পানির কথা?, ওহ হো, ওটা বলতে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম!

শেখ হাসিনা বলেন, (খালেদা জিয়া) ভারতবিরোধী কথা বললেন, তার আগে উনি গঙ্গার পানির হিস্যা আদায়ের জন্য ফারাক্কা পর্যন্ত লং মার্চও করেছিলেন। আন্দোলন করেছিলেন, কিন্তু ভারত গিয়ে গঙ্গার পানির কথা ভুলেই গেলেন। দালালিটা তাহলে করে কে?

‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরপরই আমরা কিন্তু গঙ্গার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করেছি।’

বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে তারা নির্বাচন নিয়ে কথা বলে। জিয়াউর রহমান তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল সংবিধান লঙ্ঘন করে। নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীর হাতে সৃষ্ট বিএনপি।

শেখ হাসিনা বলেন, তাদের ‘হ্যাঁ-না ভোট’, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, ‘৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন, মাগুরা উপ-নির্বাচন, মিরপুর উপ-নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনের তথ্য যদি দেখি এদেশে কবে-কখন অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন তারা করেছে বা করতে পেরেছে?

‘তাদের ইতিহাসে আছে ভোট কারচুপি, অতিরিক্ত ব্যালট পেপার ছাপানো ও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে ভোটের রেজাল্ট ছিনিয়ে নেয়ার।’

যুব মহিলা লীগ নামের সংগঠনটিকে সুসংগঠিত করার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যেকোনো অবস্থা মোকাবেলার করার মতো শক্তিশালী সংগঠন গড়ে তুলতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থানসহ নারীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া কাজগুলো ব্যাপকভাবে প্রচার করতে যুব মহিলা লীগ নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

বিএনপি আমলে যুব মহিলা লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন ও বিভিন্ন আন্দোলনে যুব মহিলা লীগের অবদানের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, যুব মহিলা লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে, হুলিয়া দেওয়া হয়েছে। অনেককে ধরে নিয়ে অত্যাচার করা হয়েছে।

‘যেভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমরা আজকে ক্ষমতায় আছি; কই বিএনপি’র কোনো মহিলা বা নেতা-কর্মীর ওপর অত্যাচার তো আমরা করি না। করলে তো আমরা করতে পারি, করতে পারতাম। আমরা তো তা করি না!’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি নেতা-কর্মীরা) নাকি ভয়ে রাস্তায়ই নামে না। এতোই যদি ভয় থাকে তবে রাজনীতি কেন?নারীর ক্ষমতায়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও সফলতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সমাজের অর্ধেক অংশ নারী। এ নারীদের পেছনে রেখে একটা সমাজ গড়ে ‍উঠতে পারে না।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী।েএরপর তিনি শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করেন।অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, যুব মহিলা লীগ সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল প্রমুখ।অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন।বিকেল তিনটা দিকে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। এ অধিবেশনে যুব মহিলা লীগের নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।

২০০২ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠার পর ২০০৪ সালের ৫ মার্চ যুব মহিলা লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এটি দ্বিতীয় সম্মেলন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!