DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

পুলিশের সেই তিন সাক্ষী সিনহা হত্যায় সহযোগিতা করেছিল: র‌্যাব

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  কক্সবাজারের টেকনাফে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান নিহতের ঘটনায় পুলিশ যে তিনজনকে তাদের মামলায় সাক্ষী রেখেছিল, সেই সাক্ষীরাই সিনহা হত্যায় সরাসরি জড়িতদের সহযোগিতা করেছিল বলে প্রমাণ পেয়েছে র‌্যাব।

চলতি সপ্তাহে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ দাবি করেন।

আশিক বিল্লাহ বলেন, র‌্যাব শুধু হত্যাকেন্দ্রিক মামলা তদন্ত করবে। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মামলাটি তদন্ত করা হবে। পর্যায়ক্রমে রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

ঘটনার দিন সিনহার সঙ্গে থাকা সিফাত ও শিপ্রাকে শিঘ্রই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা।

এর আগে মঙ্গলবার র‌্যাব-১৫ সদস্যরা পুলিশের ওই তিন সাক্ষীকে গ্রেফতার করেন। সিনহা হত্যায় ওই তিন সাক্ষীর সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানায় র‌্যাব। তিন আসামি হলেন- নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াদ। তারা টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা দুই মামলার সাক্ষী।

বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিনহা হত্যা মামলায় পুলিশের করা মামলার ওই তিন সাক্ষীর ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এর আগে পরে মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টায় তাদের কক্সবাজার জেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে র্যা ব।

 

ওই তিন সাক্ষী গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেছিলেন- এ হত্যার ঘটনা তারা কেউ নিজের চোখে দেখেননি। ঘটনার পর স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের ডেকে নেয়া হয়। পরে সকালে টেকনাফ থানায় নিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন তারা। পরে জানতে পারেন তাদের সাক্ষী করা হয়েছে।

পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীকে ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মঙ্গলবার সকালেই গ্রেফতার করে তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব। এই তিনজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

সিনহা হত্যার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলার তদন্তভার ইতিমধ্যে র‌্যাবকে দেয়া হয়েছে। এত দিন মামলা দুটির তদন্ত পুলিশ করছিল।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মেজর (অব.) সিনহা নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়। একটি মামলা হয় টেকনাফ থানায়। এই মামলায় সরকারি কাজে বাধা ও গুলিতে নিহত হওয়ার অভিযোগ আনা হয়। সেই মামলার আসামি করা হয় সিফাতকে। আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে রামু থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় আসামি করা হয় শিপ্রা দেবনাথকে।

৫ আগস্ট সিনহার বড় বোন বাদী হয়ে একই আদালতে টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, থানার এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

পরের দিন বৃহস্পতিবার বিকালে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত, এসআই নন্দলাল রক্ষিতসহ ৭ পুলিশ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। একই আদালত র‌্যাবের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি প্রদীপ, পরিদর্শক লিয়াকত ও এসআই নন্দলাল রক্ষিতকে সাত দিনের রিমান্ড এবং অপর চার আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও এসআই লিটনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।

এ মামলার অপর দুই আসামি এসআই টুটুল ও মো. মোস্তফা আদালতে হাজির হননি। পুলিশের দাবি, এই নামে জেলা পুলিশে কেউ নেই। তবে আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!