DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

১৮ই অক্টোবর দেশে ফিরছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  একাধিক গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়েই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ১৮ অক্টোবর দেশে ফিরছেন। ১৭ অক্টোবর এমিরেটস এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে খালেদা জিয়া তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যুক্তরাজ্য ছাড়বেন। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ১৮ই অক্টোবর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে তিনি অবতরণ করবেন বলে লন্ডন সূত্রে জানা গেছে।
 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া শিগগিরই দেশে আসছেন। আমি আশা করি, এ সপ্তাহেই তিনি দেশে ফিরছেন।

এদিকে দলীয় চেয়ারপারসনকে অভ্যর্থনা জানাতে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেতাকর্মীদের বিশাল জমায়েত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার রাতে দলের সিনিয়র নেতারা গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেন। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান,মির্জা আব্বাস এবং গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর বৃহস্পতিবার রাতে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উচিত কিনা- সে বিষয়ে সিনিয়র নেতাদের মতামত চাওয়া হয়। এখানে সবাই একমত পোষণ করে বলেছেন, দ্রুতই খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উচিত। দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষও তাই মনে করেন। এটা রাজনৈতিক মামলা, রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে হবে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে আইনজীবী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই বৈঠকেও আইনজীবী নেতারা সিনিয়র নেতাদের মতো একই ধরনের মত দেন। তারা (আইনজীবী নেতারা) বলেন, খালেদা জিয়ার দেশে এসে আইনিভাবে এসব মামলা মোকাবেলা করা উচিত। উভয় বৈঠকের বার্তা খালেদা জিয়াকে অবহিত করতে মির্জা ফখরুলকে দায়িত্ব দেন সিনিয়র নেতারা। শুক্রবার রাতেই উভয় বৈঠকের বার্তা খালেদা জিয়াকে জানিয়ে দেন বিএনপি মহাসচিব। এর পরই দেশে ফেরার তারিখ চূড়ান্ত করেন খালেদা জিয়া।

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া যুগান্তরকে বলেন, খালেদা জিয়া আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি দেশে ফেরার পর সংশ্লিষ্ট (কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ও ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত) আদালতগুলোতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইবেন। তবে কোন আদালতে কবে আত্মসমর্পণ করবেন, তা তিনি দেশে ফেরার পর সিদ্ধান্ত নেবেন।

বিএনপির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ১৯ অক্টোবর ঢাকার বকশিবাজর বিশেষ জজ আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ওই দিনই তিনি এ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পারেন।

প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তিনটি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন পৃথক তিনটি আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান জিয়া অরফাজেন ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একই দিন বাংলাদেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিযোগে করা মানহানি মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম মো. নূরনবী তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এর আগে চলতি মাসের ৯ অক্টোবর বাসে পেট্রুলবোমা মেরে আটজনকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় খালেদা জিয়াসহ বিএনপির ৭৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগম।

গত ১৫ জুলাই চোখ ও পায়ের চিকিৎসা করতে বিএনপি চেয়ারপারসন যুক্তরাজ্য যান। ৮ আগস্ট লন্ডনের মুরফিল্ড হাসপাতালে তার ডান চোখের সফল অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তিনি কয়েক দফা চিকিৎসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। লন্ডনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তার বড় ছেলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় উঠেছেন। সেখানে তারেক রহমান ছাড়াও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমানের স্ত্রী শর্মিলা রহমান ও দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমানও আছেন।

খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা তাবিথ আউয়াল, খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও গৃহকর্মী ফাতেমা। ১/১১-এর পর ২০১৫ সালে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে ছিলেন দুই মাস।

খালেদা জিয়াকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতির বিষয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার যুগান্তরকে বলেন, দেশনেত্রী মাটি মানুষের নেতা। আমরা একটা প্রতিকূল রাজনৈতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এর পরও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে আমাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রয়েছে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!