DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

আসন্ন সিটি নির্বাচনে হেফাজত ফ্যাক্টর!

hefazot ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ গাজীপুর সিটি নির্বাচনের পর এবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম তিন সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপির পক্ষে মাঠে নেমে প্রচারণা চালাচ্ছে হেফাজত নেতারা। যার ফলে এই নির্বাচনেও হেফাজত ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে।

 

তবে প্রকাশ্যে না হলেও অনেকটা গা ঢাকা অবস্থাতেই বিএনপির প্রচারণায় আছেন হেফাজতের নেতারা। হেফাজত নেতারা মূলত মসজিদ, মাদ্রাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন স্থানে আদর্শ ঢাকা আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও মির্জা আব্বাসের সমর্থনে ভোট চাইছেন।

এছাড়া জোটের প্রচারণার টিমের সঙ্গে সরাসরি থেকেও কোথাও কোথাও নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন। তবে এই অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখান করেছেন হেফাজতের উর্ধ্বতন নেতারা। বিষয়টিকে এক ভিন্ন যুক্তিতেই ব্যাখ্যা করছেন তারা। বলছেন, হেফাজত নেতাকর্মীরাও দেশের নাগরিক। আর তাই তারাও ভোটের অধিকার রাখে। দলীয়ভাবে যেকোন প্রার্থীর পক্ষে থেকে তারা নিজেদের ভোট দিতে পারেন।

 

জানা গেছে, তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে থাকবে হেফাজত। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহসভাপতি, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী আদর্শ ঢাকা আন্দোলন মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে হেফাজতের তৎপরতা চালাতে দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন।

 

কর্মপদ্ধতি ঠিক করতে আদর্শ ঢাকা আন্দোলনে অধ্যাপক এমাজউদ্দীন, তাবিথের বাবা ও বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুসহ জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় করে বৈঠক করেছেন। এর আগে গত ১৭ এপ্রিল হেফাজত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। মাওলানা নূর হোসেন কাসেমীর নেতৃত্বে পাঁচ হেফাজত নেতা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে খালেদার সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রমতে, হেফাজত নেতারা কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাদের প্রচারণায় তুলে ধরা হচ্ছে আওয়ামী লীগের অধীনে মুসলিম পরিচয়ে মুক্তভাবে চলাফেরা করা সম্ভব নয়। কথায়-কথায় ‘জঙ্গিবাদের দায় আসে আলেমদের ওপর, নাস্তিক্যবাদের পৃষ্ঠপোষক এই সরকার। বিএনপি জোটে ভোট দিলে মসজিদ-মাদ্রাসায় নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালনের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

 

এছাড়া বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসার আলেমদের আওয়ামী লীগ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হচ্ছে। তাদের দাবি, বিএনপি কোনও ইসলামি সংগঠন না হলেও মুসলমানদের স্বাধীন ধর্মকর্মে বাধা দেয় না। সেজন্য ঢাকা উত্তর সিটিতে তাবিথ আউয়ালকে বাস মার্কায় এবং দক্ষিণে মির্জা আব্বাসকে মগ মার্কায় ভোট দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয় হেফাজতের প্রচারণায়। হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান বলেন, হেফাজতের পক্ষে থেকে কারও জন্য ভোট চাওয়া হচ্ছে না। হেফাজতের এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেই ভোট চাওয়ার। তবে হেফাজতের অনেক নেতা রাজনীতি করেন, তারা ব্যক্তগিতভাবে নির্বাচনের মাঠে থাকতে পারেন।

 

তার মানে এই নয়, হেফাজত আছে নির্বাচনী প্রচারণায়। ব্যক্তিগত পরিচয়ের বাইরে কেউ হেফাজতের নাম ব্যবহার করছে এমনটি আমার জানা নেই। সরেজমিনে দেখা গেছে, আদর্শ ঢাকা আন্দোলন মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও মির্জা আব্বাসের সমর্থনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতারা রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ করছেন। প্রচারণায় অংশ নেওয়া অধিকাংশ নেতা হেফাজতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

 

তাদের মধ্যে রয়েছেন হেফাজতের ঢাকার প্রচার সেলের সদস্য ও কেন্দ্রীয় জমিয়তের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দীন ইকরাম, হেফাজতের ঢাকার প্রচার সেলের সদস্য ও জমিয়তের প্রচার সম্পাদক ওয়ালী উল্লাহ আরমান, হেফাজত নেতা ও জমিয়তের ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা নাজমুল হাসান প্রমুখ। এই নেতাদের সরাসরি উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে থেকে গণসংযোগ করতে দেখা গেছে।

 

এ প্রসঙ্গে হেফাজতে ইসলাম যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচনে হেফাজতের পক্ষ থেকে সমর্থন, প্রচারণায় অংশ নেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। হেফাজত অরাজনৈতিক সংগঠন। তবে হেফাহতের নেতারাও ভোটার, তাই তারা ভোট দিতে পারেন যাকে খুশি। তেমনি ব্যক্তিগতভাবে কারও পক্ষে ভোট চাইতেও পারেন। তবে হেফাজতের নামে ভোট চাওয়ার সুযোগ নেই, যদি কেউ করেন, তবে ঠিক করেননি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!