DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

চির বিদায়,খলিল ভাই

 
কিংবদন্তি অভিনেতা খলিলের মৃত্যুতে চলচ্চিত্রাঙ্গন শোকাচ্ছন্ন। এ প্রিয় মানুষ ও প্রিয় অভিনয়শিল্পীর মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েছেন সবাই। অভিনেতা খলিলকে নিয়ে তার সহশিল্পী ও কাছের মানুষেরা জানিয়েছেন তাদের অনুভূতি। তার কিছু অংশ দৈনিক প্রথম বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ
খলিল উল্লাহ খানজন্ম : ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২, মৃত্যু : ৭ ডিসেম্বর ২০১৪

আলমগীর : খলিল ভাই ছিলেন আমাদের পিতৃতুল্য মানুষ। তার বিকল্প আর কেউ হতে পারে না। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। তারপরও সবার খোঁজখবর রাখতেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার পুরো দায়িত্বও নিয়েছিলেন। তিনি সুচিকিৎসাই পেয়েছিলেন। দেশবাসীর কাছে তার জন্য দোয়া প্রার্থনা করছি।

 

কাজী হায়াত : খলিল ভাই একাধারে যেমন ভালো শিল্পী ছিলেন, তেমনি ভালো মানুষ হিসেবেও সুখ্যাতি ছিল তার। তিনি শুটিং স্পটে থাকলে সবাই উৎফুল্ল থাকতাম। তার মতো অভিনয়শিল্পীরা যেসব জায়গা থেকে আমাদের অভিনয় জগতে এসেছিলেন, এখন আর সেভাবে কেউ আসছে না।

 

গাজী মাজহারুল আনোয়ার : খলিল ভাই জাত শিল্পী। তিনি চার দশকের চলচ্চিত্রের সেতুবন্ধন। আমাদের চলচ্চিত্রের উত্থান-পতন থেকে শুরু করে সবই তার জীবনে দেখা। অভিনয়ে তিনি শুধু নায়ক নন। একজন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রাভিনেতা হিসেবে প্রশংসিত হয়েছিলেন। সদালাপি এ মুক্ত মনের মানুষটি দর্শকের পাশাপাশি কলাকুশলীদের মনের মানুষ হিসেবেও জায়গা করে নিয়েছিলেন। অভিনয়ের সময় যখন আমরা বিশেষ সঙ্কটে পড়ে যাই তখন তার বিকল্প এখনও খুঁজে পাই না। তিনি ছিলেন শিব রাত্রের সলতের মতো।

 

আমজাদ হোসেন : আমার পরিচালনায় কোনো ছবিতে তিনি কাজ করেননি। তারপরও তার সঙ্গে আমার পিতা-পুত্রের মতো সম্পর্ক ছিল। একজন ভালো মানুষ বলতে যা বোঝায়, খলিল ভাই তাই ছিলেন। তার অভিনয়ের দর্শক হিসেবে আমি সব সময়ই অভিভূত হয়েছি।

 

শবনম : একজন মার্জিত শিল্পী খলিল ভাই। তার বিপরীতে নায়িকা হিসেবেও আমি অভিনয় করেছি। সব সময়ই চিরাচরিত হাসি তার মুখে লেগেই থাকত। তার মতো এমন গুণী অভিনয়শিল্পী আমাদের চলচ্চিত্রে খুব কমই আছেন।

 

কবরী : খলিল ভাইয়ের অভিনয়ের মধ্যে এক ধরনের আকর্ষণ ছিল। খলিল ভাই কখনোই তাকে দেয়া চরিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে বাড়তি কিছু করার চেষ্টা করতেন না। খলিল ভাইয়ের মতো অভিনেতা আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আর দ্বিতীয় জন নেই। সত্যিই তার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।

 

সুচন্দা : আসলে সবাই আমরা এখন তাড়াতাড়িই চলে যাচ্ছি। এটাই হয়তো নিয়ম, বয়স হলে চলে যেতে হয়। নায়িকা হওয়ার অনেক আগে থেকেই আমি খলিল ভাইয়ের চলচ্চিত্র দেখেছি। খলিল ভাই সব সময়ই একজন হাসিখুশি প্রাণোচ্ছল মানুষ ছিলেন। খলিল ভাইয়ের সামনে এলে সব দুঃখ ভুলে যেতেই হতো। আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।

 

উজ্জ্বল : আমি খলিল ভাইকে দর্শক থাকা অবস্থায় থেকেই চিনি। পরে তাকে নায়ক হিসেবে দেখার সৌভাগ্য হয়। এরপর তার সহশিল্পী হিসেবে একসঙ্গে কাজ করেছি বেশ কিছু ছবিতে। তিনি ছিলেন বন্ধুবৎসল। তার সঙ্গে আমাদের অনেকেরই একটা পারিবারিক বন্ধন ছিল। আমার প্রযোজনার সব ছবিতেই তিনি অভিনয় করেছেন।

 

ববিতা : সেই পুতুল খেলার বয়স থেকে খলিল ভাইয়ের সঙ্গে আমার কাজ করা শুরু। খলিল ভাই আমার অভিভাবক ছিলেন। সব সময়ই আমার, আমার ছেলে অনিকের খোঁজ খবর রাখতেন। হজে যাওয়ার আগে তার সঙ্গে কথা হয়েছিল, ফিরে এসেও কথা হয়েছে। তার সঙ্গে আলোর মিছিল, বাঁদি থেকে বেগমসহ আরও অনেক চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। আমাকে প্রায়ই বলতেন, আপনার জন্য পাত্র দেখছি। এই বলে বলে তিনি মজা করতেন। সত্যিকারের একজন গুণী শিল্পী ছিলেন খলিল ভাই।

 

ওমর সানী : আমাদের একজন পথপ্রদর্শক ছিলেন খলিল ভাই। পাশাপাশি তিনি অভিনয়ের শিক্ষকও ছিলেন। এখন শিক্ষা নেয়ার মতো পরিবেশ আছে। কিন্তু শিক্ষকরাই চলে যাচ্ছেন। আমাদের মিডিয়াতে ১০ থেকে ১২ জন শিল্পীকে যদি অনুসরণ করতে হয়, তাহলে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন খলিল ভাই। তার অবদান এবং কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অনুসরণীয়।

 

মিশা সওদাগর : খলিল ভাইয়ের মৃত্যু আমাকে দারুণভাবে মর্মাহত করেছে। তার জন্য জীবনে প্রথমবারের মতো শুটিং বাদ রেখে চলে এসেছি। আমি তার ব্যক্তিত্বের কাছে বরাবরই পরাজিত হয়েছি। তিনি পরিপূর্ণ একজন মানুষ। এবং অভিভাবক হিসেবেও আমাদের চলার পথগুলো সঠিকভাবে বাতলে দিতেন। তার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি। তিনি যেন পরপারে শান্তিতে থাকেন।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!