DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

একজন শফিক রেহমান এবং তার যায়যায়দিন

download (84)প্রতিতযশা সাংবাদিক ও কলামিস্ট শফিক রেহমানের শুভ জন্ম জয়ন্তিতে আমাদের নিবেদনঃ

  দেশ বরেণ্য সাংবাদিক শফিক রেহমান। ‘যায় যায় দিন’ সাপ্তাহিক পত্রিকার মাধ্যমে তিনি এ দেশের সকল স্তরের মানুষের কাছাকাছি চলে আসেন। সাপ্তাহিক পত্রিকাটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল সব শ্রেণীর পাঠকদের কাছে। BBC বাংলাতে যখন দায়িত্ব পালন করতেন, তখন থেকেই দেশে অনেক ভক্ত তৈরি হয় এই সাংবাদিকের।


‘যায় যায় দিন’ তসলিমা নাসরিন লিখতেন ‘নির্বাচিতার কলাম’ নামে। শফিক রেহমান তসলিমা নাসরিনকে নিষেধ করতেন কারো ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত না দিতে। তখন তো আর এতো হাজার টিভি চ্যানেল ছিলনা। বিটিভিতে প্রচারিত অনুষ্ঠানের সমালোচনা থাকতো পত্রিকাতে। নির্মাতারা যত্ন নিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করতেন। শফিক রেহমানের লেখনির কাছে টিকতে না পেরে এরশাদ সরকার বন্ধ দিয়েছিল সাপ্তাহিক পত্রিকাটি। যতটুকু মনে পড়ে আইনি লড়াই করে জিতে যান, আবার পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন। আমার ভুল হতে পারে, অনুগ্রহ করে কেউ সঠিক তথ্য জানলে তুলে দেবেন।

সমসাময়িক বিষয় নিয়ে লেখা হোতো। সব শেষ পাতায় থাকতো ‘দিনের পর দিন’। মিলা মইনের টেলিফোন আলাপচারিতায় উঠে আসতো সারা দেশের না শুধু মোটামুটি সারা দুনিয়ার খবর!

র্যা ব প্রতিষ্ঠার পর তিনিই প্রথম আশংকা প্রকাশ করে বলেছিলেন, “বিচার বহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ড সাময়িক স্বস্তি নিয়ে এলেও এর সুদুর প্রসারী ফলাফল মোটেও শুভকর নয়।” বলার অপেক্ষা রাখেনা উনার ভবিষ্যৎ বাণী কতটুকু বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছিল। তিনি যে সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে ভবিষৎবাণী করেছিলেন তাঁর সবই আসতে আসতে ঠিক হয়েছে।

জীবনের সমস্ত উপার্জন দিয়ে তেজগাঁতে অফিস করেছিলেন। তেজগাঁয় অফিস যেখানে ছিল, রাস্তার নাম দিয়েছিলেন LOVE ROAD. 

সাপ্তাহিকটি ঠিক রেখেই বের করেন ‘যায় যায় দিন’ ট্যাবলয়েড আকারে। কিন্তু কিছুদিন পর টাকার অভাবে বন্ধ করে দেন ট্যাবলয়েডটি। 

এরপর জোট সরকারের সময় ‘দৈনিক যায় যায় দিন’ বের করেন। বেশ চলছিল উনার স্বপ্নের বাস্তব রূপ। কিন্তু মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের বিষাক্ত ছোবলে শেষ হয়ে যায় তাঁর সারা জীবনের সাজানো স্বপ্ন। পত্রিকার মালিকানা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এখন প্রকাশিত হয় ‘মৌচাকে ঢিল’।

টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নিয়ে আসেন নতুন মাত্রার ভিন্নধর্মী টক-শো ‘লাল গোলাপ’।

আসুন,বসুন উপভোগ করুন আজকের ‘লাল গোলাপ’ এইভাবে শুরু করতেন। অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পায় এই অনুষ্ঠান। দেশ-বিদেশের ক্ল্যাসিক মুভি, সঙ্গীত, নানান সামাজিক অসঙ্গতি তুলে আনা হতো এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।

আমি কোন লেখার উপসংহার দেইনা। তবে আজ একটু লিখতে চেষ্টা করবো। ‘যায় যায় দিন’ মাঝে মাঝে কিছু বিশেষ সংখ্যা বের করতো। যেমন রেলগাড়ি, চা ঈদ, টেলিফোন, শাড়ি ইত্যাদি আরও অনেক নামে। সেখান থেকে অনেক ভাল লেখক- লেখিকা বের হয়ে এসেছে তেমনি কিছু কুরুচিপূর্ণ লেখাও ছড়িয়েছে। সমাজে কতো রকম অনাচার-ব্যাভিচার হতে পারে তাও অনেকেই জানতে পারে এই সংখ্যাগুলির লেখা পড়ে। আমরা অনেকেই সচেতন হয়েছি সে সব লেখা পড়ে। কেউ কেউ বলেন উনি এর মাধ্যমে পর্ণ পত্রিকার প্রচার করেছেন। 

আরেকটি দিন চালু করেন VALETINE DAY ( বিশ্ব ভালবাসা দিবস) যা প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে পালন হয়। এই দিবসের সুফল-কুফল সম্পর্কে কিছু আর না বলি। সুফল কিছুই দেখিনি এখন পর্যন্ত। আশা করি এই দিন তিনি যেমনি ভাবে চালু করেছেন ঠিক তেমনিভাবে বন্ধও করবেন। র্যালব যেমন ক্ষমতার অপব্যাবহার করছে, ‘ভালবাসা দিবস’ ও তেমনি কি দিবসে রূপান্তর হয়েছে বলার অপেক্ষা রাখেনা। সুন্দর -সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে আশা করবো তিনি আবার কাণ্ডারির ভুমিকা পালন করবেন।

আল্লাহপাক উনাকে সুস্থতার সাথে আরও অনেকটা সময় আমাদের মাঝে রাখুন। দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য তিনি ভাল কিছু করবেন এই কামনা তাঁর এক নগণ্য ভক্তের।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!