DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

র‌্যাব নিয়ে কিছু কথা

1896753_535469709894653_874842762_nর‌্যাব নিয়ে কিছু কথা:আবু রুশদ।

 


একজন সিনিয়র জেনারেল ও মুক্তিযোদ্ধা আমাকে আজ ফোন করে র‌্যাব নিয়ে আলাপ করলেন।মোবাইলে আলাপ করা ঝুকিপূর্ণ। কে যে কোন কথার কি মানে করে বড় কর্তার কাছে নোট শিট পাঠায় আল্লাহ জানেন।

 

আমার কোর্সমেট মেজর জেনারেল আকবর ডিজিএফআই য়ের ডিজি। বিএমএতে ও ছিল বিএসএম। আমি ছিলাম আন্ডার অফিসার। কিন্তু বিএসএম এপয়েন্টমেন্টা যেমন ক্যাডেটদের কাছে আতংকের নাম আকবর কিন্তু ছিল তার উল্টো্।

 

নম্র,ভদ্র ও ফাদার লাইক।

আর্মিতেও ও খুবই ভাল করেছে। প্রফেশনাল অফিসার। সবার উপকার করে। এমন একজন কোর্সমেট গোয়েন্দা প্রধান হওয়ার পরও আমি কিন্তু ভয়ে আছি। ওর তরফে নয়। অন্য পক্ষ থেকে। কোন আমলে সেই ১৯৯২-৯৩-৯৪ সালে কি লিখেছি তা নিয়ে বহুবার হেনস্তা হতে হয়েছে।

মোদ্দা কথা আওয়ামীদের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। তা যদি আবার র‌্যাব হয় তো কম্মো সাড়া।

 


র‌্যাব গঠিত হওয়ার সময় বিএনপি’র নেতারা নেতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছিলেন। বলেছিলেন তা একসময় হিতে বিপরীত ফল বয়ে আনবে। আমি তখন একটিভ সাংবাদিকতায়। র‌্যাবের ইমেজ বৃদ্ধির জন্য যৎসামান্য কাজ করেছি। কারন তখন র‌্যাব রাজনীতির বাইরে ছিল। আর্মি থেকে যেসব অফিসার গিয়েছিলেন তাদের মন্ত্রীরা পর্যন্ত ফোন করতে সাহস পেতেন না। কর্নেল গুলজার,আসিফ এর মতো অফিসাররা তার উদাহরন।

 

 

downloadলক্ষ্য করলে দেখবেন র‌্যাব তখন ক্রিমিনালদের কতল করছিল। তার আবার বেশিরভাগ ছিল বিএনপি’র ক্যাডার। অথচ আওয়ামী ক্যাডারদের টিকিটি ছুতে পারেনি র‌্যাব। তারা সব নিশ্চিন্তে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দাদাদের দেশে আশ্রয় নিয়েছিল। ২০০৫ সালের গোয়েন্দা হিসাব মতে কেবলমাত্র ভারতেই আশ্রয় নিয়েছিল ১০৮২ জন ক্রিমিনাল। আমি তাদের নিয়ে দৈনিক যায় যায় দিনে লিড রিপোর্ট করেছিলাম।

 

 

যাহোক, নিরপেক্ষ অফিসাররা বিএনপি মেরে শেষ করে দিলো, আওয়ামীদের কিছুই করতে পারেনি। যেমন নারায়নগঞ্জে বিএনপি’র ক্যাডার ছিল ডেভিড। শামীম ওসমানের সাথে তাই ছিল ব্যালান্স। কিন্তু শামীম ওসমানকে ধরতে পারেনি র‌্যাব। মেরেছে ডেভিডকে।

 

তারপর থেকে নারায়নগঞ্জ আওয়ামীদের চারনক্ষেত্র। এরপর ২০০৯ সালে আ’লীগ পাওয়ারে এলে ভারতে লুকিয়ে থাকা তাদের ক্যাডাররা বীরদর্পে ফিরে আসে। ততোদিনে তাদের কাউন্টার করার মতো বিএনপির সব খতম। তাই গত বছর আন্দোলনের সময় দেখা গেছে আওয়ামী ক্যাডারদের মোকাবিলায় বিএনপির কেউ নেই। আমি বলছি না বিএনপি’র ক্রিমিনালদের ছাড় দিতে হবে। তবে যা বললাম তাই হলো বাস্তবতা। 


আজ র‌্যাব নিয়ে যাতা কথা শুনতে পাই। এখন তো আওয়ামী নেতারাও বলতে শুরু করেছেন। তবে বিস্ময়ের ব্যাপার সবাই কেবল র‌্যাবের আর্মি অফিসারদের নিয়ে কথা বলছেন।

 

পুলিশের যারা আছেন তারা সবাই যেন ধোয়া তুলসি পাতা! এটাকি সবাই এড়িয়ে যাচ্ছেন যে, র‌্যাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। র‌্যাবের ডিজি পুলিশের। র‌্যাব মুলত: আইন শৃংখলা বাহিনীর অংশ। সশস্ত্র বাহিনীর যারা ওখানে আছেন তারা মুল পরিচালক নন যদিও এডিজি আর্মির। আমি বলছি না যে আর্মির যারা ওখানে আছেন তারা কোড অফ কনডাক্টের বরখেলাপ করনেনি। বরং একটি অংশ যেন রাজনৈতিক ক্যাডারের মতো আচরণ করছেন।

 

 

যাহোক, সশস্ত্রবাহিনীর বদনাম হচ্ছে। পুলিশ আড়ালে থাকছে। কারন তারা যানে কিভাবে সিভিল এ্যাফেয়ার্স মেইনটেইন করতে হয়। তাছাড়া পুলিশ জনগণকে ভালো চিনে। তারা সবার সাথেই সম্পর্ক রাখে। বিপরীতে ইদানিং আমার কমরেডদের অনেকে ভিন গ্রহের মানুষে পরিণত হয়েছেন। আমরা তাদের কাছে হয়ে গেছি শত্রু তুল্য। আমাদের সাথে নিদেন কথা বললেও যেন চাকুরী চলে যাবে এমন ভাব। 

 


শেষ কথা, র‌্যাব যদি অরাজনৈতিকভাবে জাতীয় প্রয়োজনে কাজ করে তাহলে অবশ্যই সাধুবাদ জানাবো। কিন্তু তাদের সতর্ক হতে হবে। কয়েকজন সেনা অফিসারের নামে বদনাম রটলে তা যে পুরো সেনাবাহিনীর সুনাম নিয়ে টান দেয় তা তাদের বুঝতে হবে। আজ যারা তোমরা র‌্যাবে আছো তারা সবাই আমার জুনিয়র হবে।

 

তোমাদের কাছে অনুরোধ তোমরা সতর্ক হয়ে কাজ করো। আর্মির কমরেডশীপ ভুলে যেয়ো না। মনে রেখো জনগন ভাল না বললে কেউই রক্ষা করতে পারে না। আর জনগন যদি তোমাদের ভাল বলে তাহলে মিডিয়া হাজারো প্রচারণা চালালেও কিছু যায় আসে না যেমন যায় আসেনি কর্নেল গুলজারের।

 

 

 

 

লেখকঃসাংবাদিক ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা।

 

 

 

 
 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!