আমরা যারা সাধারণ মানুষ, যাদের আয় সীমিত তারা পকেটে দু’চার পয়সা জমলে কী করি? টাকা বাড়ানোর ধান্দা থাকলে সাধারণত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করি। আর যদি প্রযুক্তিতে মোহ থাকে তাহলে বাজারে আসা আনকোরা গ্যাজেটটি কিনে ফেলি। যাদের অনেক টাকা, অনেক সম্পদ সমাজে উচ্চবিত্ত বলে পরিচিত তাদের বিনিয়োগের ধরনটা কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। আর এ কারণেই এদের অর্থবিত্ত দিন দিন ফুলে ফেঁপে ওঠে, একসময় সাধারণের জ্ঞাত সীমার বাইরে চলে যায়।
সম্প্রতি একটি ব্যবসা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এমন তথ্যই দিয়েছে। তারা ব্যাখ্যা করেছে, ধনীরা কী করে ধনীই থেকে। শুধু তা-ই নয় বিত্ত বৈভব দিন দিন বাড়ছেই তাদের। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে, পয়সাওয়ালাদের বিনিয়োগ কৌশলেই রয়েছে মূল রহস্য।
যেমন ধরা যাক: জশুয়া কোলম্যানের কথা। ২০০৪ সালে তার পরিবার তাদের শিকাগোভিত্তিক টেলিকম কোম্পানিটি ৪০ কোটি ডলারে বিক্রি করে দেয়। এই টাকা কিন্তু তারা খুব দামি বিলাসদ্রব্য বা অন্য কোনো কিছু কেনার জন্য খরচ করেনি। তারা তখন খুঁজতে থাকেন নতুন কোনো সম্পদ এবং কীভাবে তা আরো বাড়ানো যায় সেই পথ।
তাদের এই আচরণটিই কোলম্যানের (২৭) মনে নতুন এক আইডিয়া দেয়। ২০১১ সালে তিনি খুলে বসেন একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। মোমেন্টাম অ্যাডভান্সড প্ল্যানিং নামে কনসালটেন্সি ফার্মটির কাজই হলো টাকাওয়ালাদের আয়কর, আইন এবং সম্পদ বিশেজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করিয়ে দেয়া। ধনীদের আচরণই হচ্ছে- তারা যদি কখনো চলতি ব্যবসাটা বেচে দেয় তাহলে নতুন কোনো ব্যবসায় আগের চেয়ে বেশি মুনাফার লাভের চিন্তা মাথায় রেখেই তা করে।
ধনীরা চান বাজারে একাধিপত্য
কোলম্যান বলেন, আপনি যদি মনে করেন যে, নতুন ব্যবসা শুরু করা অর্থ বিনিয়োগের বাজে একটা পথ তাহলে বলবো আপনি সম্ভবত অতি বিত্তবানদের (আল্ট্রা ওয়েলদি) দলে নন। যাদের কমপক্ষে ৩০ কোটি ডলার মূল্যমানের সম্পদ আছে তাদের উচ্চবিত্ত বলা যায়। এরা সবসময়ই শেয়ারবাজার এবং বন্ড কেনায় অর্থ বিনিয়োগ করে। কিন্তু টাকা বাড়ানোর কৌশল হিসেবে তারা বিভিন্ন কোম্পানি এবং ব্যতিক্রম কিছুর শেয়ার কেনে যেমন: এয়ারলাইন ইজারা তহবিল। এছাড়া তারা দামি চিত্রশিল্প এবং গাড়িরও মালিক হয় যার অর্থমূল্য তাদের সামাজিক মর্যাদা বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে দামি সম্পদ হিসেবে বাড়িতে শোভা পায়।
সামাজিক মর্যাদা বাড়নোর জন্যই তারা কিনেন দামি গাড়ি
কোলম্যান বলেন, ‘এটাকে বলে আলফা ঝুঁকি। এটা এমন একটা ঝুঁকি যার সামনে ব্যাপক উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে।’
এমন বিনিয়োগের নেতিবাচক দিকটি হচ্ছে, অন্য সব সাধারণ বিনিয়োগের চেয়ে এ ধরনের বিনিয়োগে ঝুঁকিটা বেশি। বড় লোকসানের সমূহ আশঙ্কা থাকে। এছাড়া এসব বিনিয়োগ কিন্তু শেয়ারবাজারের তরল বিনিয়োগের মতো নয়। এসব বিনিয়োগে মুনাফা পেতে কয়েক মাস বা বছর লেগে যেতে পারে।
সাধারণের জন্য একটা পরামর্শ হলো- লাখ লাখ টাকা না থাকলেও আপনি কিন্তু ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে পয়সাওয়ালাদের কৌশল অনুসরণ করতে পারেন। আপনার স্বল্প সঞ্চয় দিয়েই এমন একটা বিনিয়োগ করেই দেখুন না!