DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রেমিকের স্বীকারোক্তিঃ প্রতারণামূলক প্রেমের বলি মিথি

 image_84858_0মোবাইল প্রেম অতঃপর দীর্ঘদিন লিভটুগেদার করার পর প্রতারক প্রেমিকের মুখোশ উন্মোচিত হয়। একসঙ্গে থাকতে গিয়ে প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়ায় প্রেমিকের হাতে খুন হন মেডিকেল কলেজছাত্রী সাউদিয়া আক্তার মিথি। প্রেমিক আরিফের স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
 
মিথি রাজধানীর জেডএইচ শিকদার মহিলা মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। গত বুধবার সকালে হাজারীবাগ সুলতানগঞ্জের ৩/৫ নম্বর সচিবের গলির বাসার ষষ্ঠতলার একটি কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রেমিক আরিফের সঙ্গে ওই কক্ষটিতে সাবলেট হিসেবে ভাড়া থাকতেন তিনি। এঘটনায় পর আরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 
 
শুক্রবার আরিফ আদালতের কাছে স্বীকার করেন, মোবাইল ফোনে তথ্য গোপন করে প্রতারণামূলক প্রেমের জের ধরেই মিথিকে হত্যা করেছেন তিনি। 
 
হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বাংলামেইলকে জানান, আরিফ মিথিকে হত্যার বিস্তারিত বিবরণ আদালতের কাছে দিয়েছেন। আদালত তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন। সাক্ষী হিসেবে মিথি যে বাসায় থাকতেন সেই বাসার বাসিন্দা নুসরাত সাথী, মিথির বান্ধবী রোমানা নাজনীন ও তার কথিত প্রেমিক অনিও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ খুব শিগগির এই মামলার চার্জশিট দেবে।
 
মিথির সহপাঠী, পুলিশ ও স্বজন সূত্রে জানা গেছে, পাবনার সাঁথিয়ায় পাশাপাশি গ্রামে আরিফ ও মিথির বাড়ি। ভুল নম্বরে কল চলে গেলে মোবাইলে মিথির সঙ্গে পরিচয় হয় আরিফের। বেকার আরিফ সেসময় নিজেকে স্নাতক পাস বলে দাবি করেন। নানা কথায় মিথির সঙ্গে সম্পর্ক গড়েন। মিথি আরিফের কথার ফাঁদে পড়েন। একপর্যায়ে তারা দেখা করেন এবং পরে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। মিথির বাড়িতে জানতো তিনি হোস্টেলে থাকেন। সে অনুযায়ীই বাড়ি থেকে টাকা আসতো। আর আরিফ সেই টাকায় আয়েশি জীবনযাপন করতে শুরু করেন। একসময় মিথির বুঝতে পারেন আরিফ মাদকাসক্ত। তার ফেনসিডিলের টাকাও দিতে হতো মিথিকে। আরিফের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পর্যন্ত তা-ও জেনে যান মিথি। 
 
এসব নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় কলহ। ভুল শুধরে নতুন জীবনে ফিরতে চেয়েছিলেন মিথি। এটা জানতে পেরেই গত ১ এপ্রিল রাতে আরিফ তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। 
 
প্রাথমিক তদন্ত ও আরিফের স্বীকারোক্তিতে এ তথ্য মিলিছে বলে জানান ওসি কাজী মইনুল।
 
সূত্র জানায়, মিথিকে হত্যার পর তার গলায় ওড়না বেঁধে সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন আরিফ। জবানবন্দিতে বলেন, রাতে মিথির বান্ধবী রোমানা ও তার কথিত স্বামী অনিসহ দীর্ঘ সময় আড্ডা দেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মিথির সঙ্গে তার ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় তারা নিজেদের কক্ষে চলে যান। ঝগড়ার বিষয়টি যেন বাইরে থেকে কেউ বুঝতে না পারে এজন্য উচ্চশব্দে গান বাজানো হয়। এসময় তারা দু’জনে মারামারি করে। একপর্যায়ে আরিফ মিথির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। বালিশ চাপা দিয়েও রাখেন কিছু সময়। মৃত্যু নিশ্চিত হলে গলায় ওড়না বেঁধে সিলিং ফ্যানে ঝোলানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু মিথির ওজন বেশি হওয়ায় তাকে ঝোলাতে ব্যর্থ হন। পরে মেঝেতে শুইয়ে দেন।
 
খবর পেয়ে পুলিশ ২ এপ্রিল (বুধবার) সকালে মিথির লাশ উদ্ধার ও আরিফসহ অপর তিনজনকে আটক করে।
 
এদিকে, বুধবার রাতেই মিথিকে পাবনার সাঁথিয়া এলাকায় গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। ডাক্তারি পড়ুয়া মেয়েকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন মিথির বাবা-মা ও ভাইবোন-স্বজনেরা। তারা খুনি আরিফের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!