DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সমালোচনা নয় দোয়া করবেনঃ মাশরাফি

image_81308_0ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা। শুধু তাই নয়, দেশের হয়ে ভালো কিছু করার জন্য দেশের মানুষের কাছে দোয়া চাইলেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ এ পেসার। মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে দুপুরে সাংবাদিকদের তিনি এমন কথাই বলেন। তার কথাগুলো  দৈনিক প্রথম বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

প্রশ্ন: আপনার ফিটনেসের অবস্থা কী এখন?
মাশরাফি: হ্যাঁ, আগের থেকে এখন অনেক ভালো। তিন দিন ধরে দশ ওভারের মতো বোলিং করেছি নেটে। আগের থেকে ভালো অনুভব করছি। প্রথম দিন যখন ব্যথা পেয়েছিলাম এর চেয়ে অনেকটা কমেছে। আগের দিন ধরেন আমি দলের সাথে ছিলাম। আজকে ওই রকম কিছু না আশিভাগ বোলিং করেছি পাঁচ ওভার। তেমন সমস্যা হয়নি।’
 
প্রশ্ন: বুধবার প্রস্তুতি ম্যাচে খেলবেন কি?
মাশরাফি: দলের যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তো খেলতেই হবে। আমি মানসিকভাবে সেভাবে প্রস্তুত হচ্ছি। দলের প্রয়োজনে যে কোন সময় আমি খেলতে প্রস্তুত।’
 
প্রশ্ন: এই যে প্রয়োজনের অনুভবটা আপনি এশিয়া কাপে দলে না থেকে কতটুকু বুঝতে পারছেন?
মাশরাফি: অভাব না। যারা আছে তাদেরকে আমি আমার চেয়ে সবমসময় বড় করে দেখি । আমি বিশ্বাস করি যারা ন্যাশনাল টিমে খেলে তারা অবশ্যই ভালো। সবার আলাদা দক্ষতা বা যোগ্যতা থাকা এই টিমকে দেয়ার জন্যে। আমি বিশ্বাস করি যারা বাংলাদেশ টিমের জার্সি গায়ে দেয় তাদের একটা দায়িত্ব থাকে দলকে জেতানোর। আমি তাদেরকে মিস করেছি কিন্তু আমাকে কে মিস করেছে সেটা আমি জানি না।’
 
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টিতে আপনার বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও দরকার হতে পারে। ব্যাটিংয়ের জন্যে কোনো কাজ করেছেন কি?
মাশরাফি: হ্যাঁ, আমাকে যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে আমি খেলবো। আমি আশা করি আমার পর্যন্ত ব্যাটিংয়ে আসা লাগবে না। তারপরও যদি আসতে হয় তাহলে আমি আমার নিজের সাধ্যমতো ব্যাটিং করার চেষ্টা করবো।’

প্রশ্ন: অনেক অভিজ্ঞতা আছে আপনার। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আপনাদের লক্ষ্য কী?
মাশরাফি: সত্যি কথা বলতে কি, ১৬ তারিখে আমাদের যে প্রথম ম্যাচটা আছে সেটা আমাদের জিততেই হবে। পরবর্তী যে দুইটা আছে এমন না যে সেগুলো হারলেও চলবে। তাদের সঙ্গেও জিততে হবে। সেকেন্ড রাউন্ডে যাওয়াটা আমাদের জন্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় রাউন্ডে যদি যেতে চাই তাহলে আমাদের আরো ভালো খেলতে হবে। কারণ দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে হলে প্রথম তিনটি ম্যাচই জিততে হবে। প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতলে আমাদের আত্মবিশ্বাসটা আরো ভালো হবে। আমার মনে হয় খেলার ধরনটা আরো বেশি ভালো হবে। তখন বড় টিমের সঙ্গে খেলবো তখন আলাদা রকম একটা জিনিস তো কাজ করবেই।’

প্রশ্ন: আফগানরা ছাড়া বাকি নতুন দুটি দল আছে তাদের সম্পর্কে কোনো ধারণা নেয়া যায় কি না?
মাশরাফি:
অবশ্যই এটা বিশ্বকাপ ম্যাচ। শুধু বিশ্বকাপ না, যে কোন ম্যাচের আগের তাদের সম্পর্কে আলোচনা হয়। দলের মধ্যে একটা পরিকল্পনা করতে হবে ।’
 
প্রশ্ন: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেকে কতটুকু প্রস্তুত মনে করছেন?
মাশরাফি: শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ না। আমি যদি বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলতে চাই তাহলে সব জায়গায় খেলবো। আমার প্রতি সবার প্রত্যাশা আছে। অনেকের চাওয়া পাওয়া আছে। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়েই খেলতে চাই।’
 
প্রশ্ন: আপনাকে নিয়ে অনেকেই জানতে চায় আপনার ওজন কমে গেছে। এটা কোনো দুর্বলতার কারণে কি না?
মাশরাফি: না, শেষ দুই তিন মাস ধরে আমার ওজন ৭৮,৭৯ কেজিতে আছে। আমি এখন একটু সম্পূর্ণ ডায়েট থেকে বের হয়ে এসেছি। আমি একটু খাওয়া দাওয়া করি। তারপরও গেইন করছি না আমার ডায়েটটা ভালো থাকবে। আমার মনে হচ্ছে, আমার ওয়েট গেইন করলে আমার জন্যে খারাপ হবে। কারণ আমার প্রধান ইনজুরি হচ্ছে হাঁটুতে। যদি গেইন করি সে ক্ষেত্রে আমার সমস্যাটা বেশি হবে।’
 
প্রশ্ন: চোটের কারণে দেশের মাটিতে তিন বছর আগে বিশ্বকাপে খেলতে পারেননি। আপনার খারাপ লেগেছে। দেশের মাটিতে এতো বড় একটি টুর্নামেন্ট হচ্ছে,আপনার মন্তব্য কী?
মাশরাফি: যদি সত্যি কথা পারি যে আমি কখন ২০১১ বিশ্বকাপ খেলতে পারিনি। সেটা ছিল ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ। আর এটা পুরা আলাদা। টি-টোয়েন্টির সাথে সেটার কোন মিল নেই। টি-টোয়েন্টি হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে মানুষের প্রত্যাশা বেশি থাকে। আমি আগেও বলেছি। আমি কী পেয়েছি বা কী পাইনি সেটা বড় কথা না। আমি যদি খেলি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়েই খেলবো। বিশেষ করে বাংলাদেশ টিমে আমার একটি দায়িত্ব আছে। ১০০ ভাগ দিয়ে খেলবো। আর তখন খেলতে পারিনি সেটা ছিল অনেক কষ্টের।’
 
প্রশ্ন: আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে আমরা দেশের মাটিতে খেললে আমরা বেশি সুবিধা পেয়ে থাকি কিন্তু আফগানিস্তানের সঙ্গে কি সেটা সম্ভব?
মাশরাফি: আফগানিস্তানের এর আগে যতটুকু খেলা দেখেছি যে ওরা বেশি শট খেলতে পছন্দ করে ওরা। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ওদের জন্য বেশি উপযুক্ত। আমিও মনে করি শেষ দুইটা মাস আমাদের খারাপ গেছে। সবাই ফলাফলটা দেখতে চায়। ফলাফল আমাদের ছিল না। আমি যদি বলি খুব বাজেভাবে হেরেছে দল সেটাও কিন্তু না। যেই ভুলগুলো করেছি সেগুলো বাদ দেয়া। আশা করি আমরা পারবো ভুলগুলো বাদ দিয়ে ভালো কিছু করতে। আমরা এমনটি চিন্তা করছি না যে ওরা আমাদের সঙ্গে জিতেছে। আমাদের পজিটিভ চিন্তা ভাবনা করতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো কিছু হতে পারে। আমার মনে হয় না সেদিকে ভেবে লাভ হবে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে তারপর ফলাফল তো একটা আসবেই।’
 
প্রশ্ন: হার-জিত নিয়ে অনেকের মন্তব্য থাকে। এটা কীভাবে নিচ্ছেন?
মাশরাফি: আমি বলবো না যে আমরা যদি হারি তাহলে দর্শকরা কোনো মন্তব্য করবে না। টি-টোয়েন্টিতে যে কোন কিছু হতে পারে। তবে আমি মনে করি যে আমাদের এই রকম আত্মবিশ্বাস আছে আমরা যেকোন টিমকে হারাতে পারি। তাই আমরা নেগেটিভ চিন্তা করতেই পারি না। মানুষের প্রত্যাশা তো আর কথা বলে বদলানো যায় না। আমি মনে করি মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা খেলতে পারবো। আমি বলবো আমাদের জন্যে দোয়া করেন। কারণ সমালোচনা করলে কাজটা কঠিন হয়ে যাবে।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!