DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

টি-২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেটঃ সেলিব্রেশন কনসার্ট না উদ্বোধনী উৎসব? স্বাগতিক দেশের কৃষ্টি ও ঐতিহ্যের প্রতিফলন কই?

images t20 wcসবাই জানে বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিসিবির সেলিব্রেশন কনসার্ট। বিকেল থেকে সেভাবেই চলছিল অনুষ্ঠান। কয়েকটি ব্যান্ড গানও গাইল। কিন্তু সন্ধ্যা ৭টা ১৮ মিনিটে যখন প্রধানমন্ত্রী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন তখন উপস্থিত সাংবাদিকসহ সবার মুখ তো হা!
আবহমান  কাল ধরে আমরা দেখে এসেছি অলিম্পিক,বিশ্বকাপ ইত্যাদি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগতিক দেশের সংস্কৃতি ,কৃষ্টি ও ঐতিহ্য অত্যন্ত দৃষ্টি নন্দন ভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরা হয়। কিন্তু আজ টি২০ বিশ্বকাপ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখে বোঝার উপায় ছিলো না কে স্বাগতিক দেশ , বাংলাদেশ নাকি ভারত?
আইসিসির বিশ্বকাপ। অথচ মঞ্চে নেই আইসিসির কোনো কর্মকর্তা, নেই কোনো দেশের ক্রিকেট দলের কোনো সদস্য বা বোর্ডের কর্মকর্তা। অথচ প্রধানমন্ত্রী কয়েকজন মন্ত্রীকে নিয়ে কনসার্টে এসে বিশ্বকাপের উদ্বোধন ঘোষণা করলেন! তারপর যথরীতি আতশবাজি উড়ানো হলো, সিডিউল মতো অস্কারজয়ী সংগীতায়োজক এ আর রহমান মঞ্চ মাতালেন। এরপর একে একে আরো শিল্পী মঞ্চে এসে নেচে গেয়ে দর্শকদের বিনোদিত করলেন। কিন্তু এটা বিসিবির কনসার্ট নাকি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান তা কারো কাছে পরিষ্কার হলো না।

এ ব্যাপারে বিসিবি কর্মকর্তারাও কোনো ব্যাখ্যা দিলেন না। বিসিবির ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকতা (সিইও) নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সুজনের কাছে এর ব্যাখ্যা চাইতে গেলে তিনিও এড়িয়ে গেলেন।

তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত কনসার্টে স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ১৬ মার্চ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়ানোর দিনই ছোট আয়োজনে একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।

আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবি লুকোচুরি খেলেন মিডিয়ার সঙ্গে। উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানের কয়েক মিনিট আগেই বিসিবির কর্মকর্তারা জানিয়ে আসছে এ অনুষ্ঠান বিসিবি একক আয়োজন। এর নাম বিসিবি সেলিব্রেশন কনসার্ট। যদি তাই হয় তাহলে প্রধান মন্ত্রী কিভাবে বিশ্বকাপের উদ্ধোধনী ঘোষণা করলেন?।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বা বিসিবি সেলিব্রেশন কনসার্ট যাই বলা হোক অনুষ্ঠানটি শুরু হয় বিকেল ৫টায়। কনসার্টের শুরুতে মঞ্চে গান পরিবেশন করে অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস পরে মঞ্চে ওঠে সোলস। দুই ব্যান্ড তিনটি করে গান গায়। এরপর এলআরবি ও আইয়ূব বাচ্চু বেশ কিছুক্ষণ মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন।

মাগরিবের নামাজের বিরতি পর পরই সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন তিনি। এরপর বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেণ শিকদার ও অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সন্ধ্যা ৭টা ৩৮ মিনিটে বক্তব্য দিতে ডায়াসে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আয়োজন সফল করতে সবার সহযোগিতা চেয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়েই ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়। ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপে অংশ নেয়। পরের বছরই আমরা পাই টেস্ট খেলার মর্যাদা। আমাদের গত মেয়াদের সরকারের সময় ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজনের বিরল গৌরব অর্জন করে।এবার সরকার গঠনের পর আমরা দেশবাসীকে উপহার দিচ্ছি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই বর্ণাঢ্য আসর।’

এ বক্তব্যের পরই প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ইংরেজিতে পরে বাংলায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন। আর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে জমকালো আতশবাজির ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। প্রায় পাঁচ মিনিট চলে এ আলোর ঝলকানি।

এরপর মূল আকর্ষণ উপমহাদেশীয় অস্কারজয়ী সংগীত শিল্পী এ আর রহমান মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন। ফানা ও চালে চালু গানে মাতিয়ে তোলেন স্টেডিয়ামের উপস্থিত দর্শকদের। তার পরিচালনায় ১৩০ জনের একটি দল অংশ নেয়।

রাত সোয়া ৯টায় মঞ্চে উঠবেন যুক্তরাষ্ট্রের পপ সংগীত শিল্পী অ্যাকন। পরে দেশি শিল্পীদের মধ্যে আরো গান গান প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, কুমার বিশ্বজিৎ ও মমতাজ। এরপর ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাস তুলে ধরা হয়। কনসার্টের শেষে ছিলো ব্যয়বহুল আতশবাজি প্রদর্শনী।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!