DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

মিয়ানমার অনেক আগে থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাচ্ছে: র‌্যাব মহাপরিচালক

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ মিয়ানমার মাদক চোরাচালানের প্রধান রুট বলে উল্লেখ করেছেন র‌্যাব মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘এটি এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। মিয়ানমার অনেক আগে থেকেই চাচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য। রোহিঙ্গা ঢোকানো থেকে শুরু করে পায়ে পাড়া দিয়ে রাজনৈতিক উস্কানি দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ় মনোভাবের কারণে এটা থেকে রক্ষা পেয়েছি। এখন যুদ্ধে যাওয়া মনে দেশটা শেষ হয়ে যাওয়া। মিয়ারমারে এখন সামরিক সরকার রয়েছে। তারা আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ চালাচ্ছে। এই মুহূর্তে ওরা আমাদের সঙ্গে ঝামেলা সৃষ্টি করে ফয়দা লুটতে চাচ্ছে।’

শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজ মাঠে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।


র‌্যাব মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘মাদক এখন আকাশ, নৌপথ দিয়ে এবং মায়ানমার থেকে বেশি আসছে। এটি পরিকল্পিতভাবে পাঠানো হচ্ছে। আমরা জাল ফেলে রেখেছি, মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় গ্যাংস্টারকে জালের মধ্যে ফেলেছি, আমরা কিছু করতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণ এখন বড় চ্যালেঞ্জ। যে কোনো মূল্যে মিয়ানমার রুট বন্ধ করা হবে। মাদক হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসা। রাতারাতি ধনী হওয়ার ব্যবসা। এটা জনপ্রতিনিধিসহ সবাই জানে। বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী রয়েছে। কোনো একক বাহিনীর পক্ষে মাদক নির্মূল করা সম্ভব না। মাদক নির্মূল করতে হলে সকলে মিলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’


শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে শুধু বই খাতা দিলে হবে না। এই বাস্তবতা কিন্তু এখন আর নেই। তাই বাচ্চাদের শৈশব থেকে শিখাতে হবে। বিশ্ববিদ্যাল কলেজে পড়ে কিছুই শিখতে পরবে না। নীতি-নৈতিকতা পরিবার থেকেই শিখতে হয়। শুরু থেকেই বাচ্চাদের গড়ে তুলতে হবে। মূল নীতি নৈতিকতা পরিবার থেকে শিখতে হবে, এক্ষেত্রে অভিভাবকদের মূল ভূমিকা রয়েছে ও এরপর শিক্ষকদের।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তী প্রজন্মের কাছে মাদক চলে যাওয়া মানে এটা একটা জাতিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। ভারতীয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হলেও মায়নমার, ইয়াবা, আইসসহ বিভিন্ন মাদক সমানে পাচার করছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে সামাজিক আন্দোলন ও অল আউট অ্যাকশনে যেতে হবে। গডফাদার, কিশোরগ্যাং কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।’

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে র‌্যাব ডিজি বলেন, ‘আপনাদের মডেল হতে হবে। কারণ পরিবারের পরেই আপনারদের স্থান। আপনাদেরই সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। আপনাদের সুযোগ সুবিধা এখন একটু কম থাকলেও আগামীতে ঠিক হয়ে যাবে।  ছেলে-মেয়েকে স্কুল কলেজে পাঠিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। খবর রাখতে হবে মাদকের সহজলভ্যতা সন্তানটিকে শেষ করে দিচ্ছে কিনা।’

দেশে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশে বর্তমানে অভিজ্ঞ লোকের অভাব রয়েছে বলেই আমাদের মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। এখনকার প্রত্যেকটি ক্যাডারে মধ্যে পেশাদারিত্বের খুব ঘাটতি রয়েছে। যেমন লেখাপড়ায় ঘাটতি রয়েছে, পেশাদারিত্বে ঘাটতি রয়েছে, শৃঙ্খলায় ঘাটতি রয়েছে। এটাকে যদি আমরা ওভারকাম করতে হলে এখন থেকে চেষ্টা করতে হবে। যাতে যুব সমাজ বা নতুন প্রজন্ম অবাধ্য হয়ে না যায়।’

এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজ মাঠে র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফিরোজ কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা ও বৃত্তিপ্রদান অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, এম এ খালেক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কেএম মাহাবুব, ভাটিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক জাহিদুর রহমান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম তালুকদার, পুলিশ সুপার (অপারেশন) কাজী মাহাবুবুল আলম, বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভা শেষে ২০২৩ সালের কাশিয়ানী উপজেলার এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ১০৯ জন শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেষ্ট ও জন প্রতি ১০ হাজার করে বৃত্তির টাকা তুলে দেন র‌্যাব মহাপৃরিচালক এম খুরশীদ হোসেন।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!