DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

কুখ্যাত অপরাধী ও জঙ্গিদের সঙ্গে রাখা হচ্ছে রাজবন্দিদের

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ কারাগারে কুখ্যাত অপরাধী ও জঙ্গিদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদ্য কারামুক্ত ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজ এমন অভিযোগ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৯০ দিন পর কাশিমপুর হাই- সিকিউরিটি কারাগার থেকে মুক্ত হলাম। কিন্তু মুক্ত হইনি এই ফ্যাসিবাদী জালিম সরকারের হাত থেকে। যে জেলে বাংলাদেশে সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী এবং জঙ্গি সংগঠনের লোকদের রাখা হয় সেই জেলে আমাকে রাখা হয়েছিল। কারাগারে থেকেও সার্বক্ষণিক নজরদারির মধ্যে রাখা হতো। পরিবার-পরিজনরা সাক্ষাৎ করতে এলে এনএসআই-সিআইডি, এসবি ও কারারক্ষীদের উপস্থিতিতে মাত্র ১৫ মিনিট সময় দিত কথা বলতে। অথচ আমার সঙ্গে দেখা করতে যেত আমার স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান। নির্যাতনের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করছে এই তাবেদার সরকার।’

মিরাজ বলেন, রাজনৈতিক বন্দিদের রাখার জায়গা কাশিমপুর-১, কাশিমপুর-২ ও কেরাণীগঞ্জ কারাগার। আমি রাজনৈতিক বন্দি হওয়ার পরও আমাকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের একটি পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় একটি রুমে রাখা হত। বাইরে বের হতে দিত না। ফাঁকি দিয়ে আমি কোনো রুমে গেলে সংস্থার লোকজন ঐ রুমে তল্লাশী চালাত, বন্দিদের হুমকি-ধামকি দিত।

তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতন যত বাড়বে, বিএনপি’র চলমান আন্দোলন ততই তীব্র হবে। মামলা দিয়ে, হামলা চালিয়ে বিএনপি’র আন্দোলন দমানো যাবে না। অত্যাচার-নির্যাতনের তীব্রতা মাথায় নিয়েই বিএনপি রাজপথে নেমেছে, অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত কেউ ঘরে ফিরে যাবে না। গায়েবী মামলা দিয়ে, কারাবন্দি রেখে আমাদের চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন ঠেকানো যাবে না।  বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তাবেদার সরকার দেশের কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে, মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’  তিনি আরও বলেন, ‘সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে আমাদের সোনার বাংলাদেশকে তুলে দেওয়া হয়েছে। যেখানে রাজনীতি, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতি, মানুষের বাকস্বাধীনতা এবং মূল্যবোধ সবকিছুতেই আজ পচন ধরেছে….। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন।

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে আন্দোলন-সংগ্রাম চলাকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘বিএনপির বন্দি নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন করে এবং সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্তুষ্ট করতে বিএনপির সব বন্দিদের সব ধরনের সাধারণ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার জন্য বর্তমান আইজি প্রিজন মৌখিকভাবে সব কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন। কারাবন্দি বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও অধিকার মারাত্মকভাবে লঙ্ঘন করে সারা দেশের কারাগারগুলোকে হিটলারের গ্যাস চেম্বার ও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত করা হয়েছে। নির্যাতনের কারণে কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন বিপাকে পড়েছেন।'

তিনি দাবি করেন, কারাবন্দি বিএনপির নেতাকর্মীদের কারাগারের ভেতরের কক্ষ থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে, তাদের জন্য জামাকাপড় দিতে এবং ফোনে কথা বলতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর কারাগারগুলো এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের দ্বারা পরিপূর্ণ হওয়ায় কারাগারগুলো এখন প্রকৃত সামাজিক অপরাধীদের জায়গা নয়। সুতরাং, তিনি সেখানে ফ্যাসিবাদের নিপীড়নের সব পদ্ধতি প্রয়োগ করছেন। জেলখানায় শেখ হাসিনা তার আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মকর্তা নিয়োগ করেছেন।'

রিজভী আরও বলেন, 'শেখ হাসিনা চান বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেপ্তারের আগে বাইরে যেমন হয়রানি, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হন, কারাগারেও তারা তেমনি নির্যাতিত হন।' তিনি বন্দীদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। একই সঙ্গে বন্দীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!