DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

চীনা ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করায় খেলাপী ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এবার চীনা ব্যাংকের কাছে ঋণ খেলাপী হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই মধ্যে মার্কিন গ্যাস কোম্পানী শেভরনের বিল পরিশোধ করতে না পারায় খেলাপী হয়েছে বাংলাদেশ।  মূলত ডলার সংকটের কারণে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হতে হচ্ছে সরকার। এ কারণে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক বাংলাদেশ-চীনের একটি যৌথ-উদ্যোগের বাংলাদেশী বিদ্যুৎ কোম্পানিকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করার চিন্তা করছে। এতে বাংলাদেশের অন্যান্য নতুন মেগা প্রকল্পের অর্থায়নও ঝুঁকিতে পারতে পারে। ফলে বাংলাদেশের নতুন প্রকল্পগুলি নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিবে। এমন কি মুখ থুবড়েও পরতে পারে।

বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের আর্থিক সংকট অব্যাহত থাকায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় এই উদ্যোগ নেয়ার কথা ভাবছে চীনের ব্যাংকটি।

নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটেড এবং চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগ বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড (বিসিপিসিএল) ঋণ পরিশোধে বারবার ব্যর্থ হওয়ার কারণে এই সতর্ক বার্তা দিয়েছে চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক।

কর্মকর্তারা বলছেন, সময় মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় বারবার ইমেইলে বাংলাদেশকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। এখন চীনের এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশী কোম্পানিকে খেলাপি করার চিন্তা করছে।

জানা গেছে, ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তির আকার হল ১৪০ দশমিক ৮৯২ মিলিয়ন ইউএস ডলার যার মধ্যে ৮৮ দশমিক ৪৪৫ মিলিয়ন ৩০শে নভেম্বর পর্যন্ত পরিশোধ করা হয়েছে এবং ৫২ দশমিক ৪৪৭  মিলিয়ন ইউএস ডলার অপরিশোধিত রয়ে গেছে।

পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বিসিপিসিএল চীনা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল যার প্রথম ইউনিটটি ২০২০ সালের মে মাসে এবং দ্বিতীয় ইউনিটটি একই বছরের ডিসেম্বরে বাণিজ্যিকভাবে চালু হয়েছিল। পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ এখন দক্ষিণ উপকূলীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণাধীন রয়েছে।

চীনা ব্যাংক তাদের চিঠিতে বলেছে, আমরা আপনাদের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের বিলম্বকে অনেক উদ্বেগের সাথে পর্যবেক্ষণ করছি। এক্সমি ব্যাংক দেরীতে ঋণ পরিশোধের বিষয়ে হতাশ। তাই কর্তৃপক্ষের ইভেন্ট অফ ডিফল্ট (ইওডি) ব্যবহার করার অধিকার রয়েছে। তবে আপনাদের আবেদনের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি হিসাবে দেখা হয়ে থাকে। যাতে আমাদের মধ্যে একটি শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তি গড়ে উঠে।

ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বিসিপিসিএল ম্যানেজমেন্টকে অনুরোধ করেছিলেন যে, ভবিষ্যতে অনুরূপ আচরণ "বন্ধুত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি" স্থাপনে সহায়তা করবে না। হুমকির সুরে তিনি বলে দিয়েছেন, ৬ষ্ঠ কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থতার ফলে প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে অর্থায়নে সম্ভাব্য অনিশ্চয়তা  দেখা দিতে পারে।

তাই এই বিষয়ে আপনার দ্রুত এবং ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া আমাদের সম্পর্কের স্থায়ীত্ব বজায় রাখতে সাহায্য করবে বলে চিঠিতে বলা হয়েছে।কারণ বাংলাদেশে অসংখ্য মেগাপ্রজেক্ট হাতে নিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করেছে বলেও মেইলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিসিপিসিএলের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতির কারণে অর্থ প্রদানে বিলম্ব হলেও ৬ষ্ঠ কিস্তির অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হব না। ফলে আমরা শাস্তির মুখোমুখি হব না। কিস্তি দিতে বিলম্ব হলে জরিমানান বিধান রয়েছে।

খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ঝুঁকি স্বীকার ওই সূত্রটি জানিয়েছে, যদি আমরা সময়মতো অর্থ প্রদান করতে ব্যর্থ হই, তবে ব্যাংক অন্যান্য প্রকল্পের জন্যও তহবিল ছাড়বে না।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!