DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রফেসর ইউনূসকে হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে মার্কিন ১২ সিনেটরের চিঠি

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হয়রানি বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১২ জন সিনেটর।

তারা হলেন সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ হুইপ ইলিনয়ের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর ডিক ডারবিন, ইন্ডিয়ানা রাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটর টড ইয়াং, নর্দান ভার্জিনিয়ার ডেমোক্রেট সিনেটর টিম কেইন, আলাস্কা রাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটর ড্যান সুলিভান, অরিগন রাজ্যের ডেমোক্রেট সিনেটর জেফ মার্কলি, নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডেমোক্রেট সিনেটর জেন শাহিন, ম্যাচাচুসেটসের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর এড মার্কি, ওহাইও রাজ্যের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর শেরোড ব্রাউন, ভারমন্ট রাজ্যের ডেমোক্রেট সিনেটর পিটার ওয়েলস, রোডস আইল্যান্ডের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর শেলডন হোয়াইটহাউস, অরিগনের ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর রন উয়াইডেন এবং নিউজার্সির ডেমোক্রেট সিনেটর কোরি বুকার।

তারা যৌথভাবে স্বাক্ষরিত একটি চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তাতে প্রফেসর ইউনূসকে বিদ্যমান হয়রানি বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারের সমালোচকদের টার্গেট করে বিচার ব্যবস্থার যে লঙ্ঘন করা হচ্ছে বিস্তৃতভাবে সেই ধারা বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, কমপক্ষে এক দশক ধরে বাংলাদেশে অন্তত ১৫০টি অপ্রমাণিত বিষয়ে মামলা করা হয়েছে প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে। চিঠির এই বিষয়বস্তু প্রকাশ হয়েছে ডিক ডারবিনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা লিখেছেন, প্রফেসর ইউনূসের বিরুদ্ধে এসব মামলায় প্রক্রিয়াগত ত্রুটির বিষয় তুলে ধরেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো। এমন বিচারে প্রফেসর ইউনূসকে সম্প্রতি শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য ৬ মাসের জেল দেয়া হয়েছে, যার বিরুদ্ধে তিনি আপিল করছেন। স্বনামধন্য এসব সংস্থার যুক্তি ফৌজদারি কার্যপদ্ধতিতে যে গতি এবং বার বার রাজনৈতিক উদ্দেশে বিচারিক প্রক্রিয়ার অপব্যবহারের ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে।

তারা বলেছেন, বার বার এবং নিরন্তর ইউনূসকে হয়রানি এটাই প্রতিফলিত করে যে, বাংলাদেশের বহু নাগরিক সমাজের সদস্যরা ক্রমবর্ধমান প্রতিকূল পরিবেশের মুখোমুখি।

প্রফেসর ইউনূসের বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি দিতে তাকে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল পুরস্কার দেয়ার প্রচেষ্টায় ডিক ডারবিন মার্কিন কংগ্রেসে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। এই সম্পর্কে আছে ঘনিষ্ঠ দ্বিপক্ষীয় এবং অভিন্ন স্বার্থের বিষয়ে বহুজাতিক সহযোগিতা। প্রফেসর ইউনূসের হয়রানি বন্ধ করে এবং অন্যদেরকে সরকারের সমালোচনা করার ক্ষেত্রে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিলে এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে। অন্য যেসব দেশে গণতন্ত্রের বাধা আছে, মুক্ত মত প্রকাশে বাধা আছে তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহতভাবে কথা বলে যাচ্ছেন ডিক ডারবিন। সম্প্রতি তিনি রাশিয়া, বেলারুশ, আলজেরিয়া, কম্বোডিয়া এবং গুয়াতেমালা থেকে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্ত করার আহ্বান জানান সিনেটে।

২২শে জানুয়ারি পাঠানো ওই চিঠিতে তারা আরও বলেছেন, বাংলাদেশে এবং সরাবিশ্বে লাখ লাখ মানুষকে উন্নত অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতিতে ক্ষুদ্রঋণের প্রবক্তা ইউনূস কাজ করছেন।

বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে তার ঐতিহাসিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৩ সালে তাকে কংগ্রেসশনাল গোল্ড মেডেল পুরস্কার দেয় মার্কিন কংগ্রেস। চলমান রাজনৈতিক প্রতিশোধ নেয়ার ফলে, বিশেষ করে একটি গণতান্ত্রিক দেশের আইনে-  এসব উদ্যোগ বাধা দেয়া উচিত হবে না।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!