DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

হাতকড়া নিয়ে সন্তানের জানাজায় খুলনা যুবদল নেতা ইয়াকুব

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ এবার প্যারোলে মুক্তি নিয়ে হাতকড়া পরা অবস্থায় সদ্য মৃত সন্তানের জানাজায় অংশ নিলেন খুলনা মহানগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী পাটোয়ারী।

শুক্রবার জুমা নামাজ শেষে নগরীর হাজী আব্দুল মালেক মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানের সামনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১টায় খুলনা জেলা কারাগার থেকে হাতকড়া পরা অবস্থায় ইয়াকুব আলীকে পুলিশ ভ্যানে হাজী মালেক মসজিদে নেয়া হয়। সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাকর্মীদের অনুরোধে পুলিশ ইয়াকুবের হাতকড়া খুলে দেয়। জুমার নামাজ আদায়ের পর জানাজায় শরিক ও পরবর্তীতে সন্তানের দাফনে অংশ নেন তিনি। এরপর পুনরায় তাকে হাতকড়া পরিয়ে জেলহাজতে নেয়া হয়।  মহানগরীর টিঅ্যান্ডটি অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে করা মামলায় গত ৮ই ডিসেম্বর ইয়াকুব আলীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

খুলনা জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শেখ আবু হোসেন বাবু জানান, মামলাটি ছিল গায়েবি ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘হাতকড়া পরিয়ে সন্তানের জানাজায় অংশগ্রহণ করা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। বর্তমান সরকার একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, যা দেশ-বিদেশে নিন্দনীয় হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত গায়েবি মামলায় ইয়াকুবকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  দুশ্চিন্তায় তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী অসুস্থ হয়ে বিজয় দিবসে (১৬ ডিসেম্বর) সন্তান প্রসব করেন।

ওই সময় থেকেই নবজাতক অসুস্থ থাকায় তাকে সিসিইউতে ভর্তি রাখা হয়। ২০ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে সে মারা যায়। ইয়াকুব পাশে থাকলেও শিশুটি হয়তো সঠিক চিকিৎসা পেতো। তাকে পরোক্ষভাবে হত্যা করা হয়েছে।’

খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলেন, ‘আইনজীবীর মাধ্যমে তিন ঘণ্টার জন্য যুবদল নেতাকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হলেও তার হাতে হাতকড়া পরিয়ে রাখা হয়। নেতাকর্মীদের অনুরোধে জুমার নামাজ ও জানাজা নামাজের সময় পুলিশ তার হাতকড়া খুলে দেয়। হাতকড়া পরিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া দেখে পরিবারের সদস্যদের মতো আমরাও ব্যথিত হয়েছি। এর জন্য বাংলাদেশ দায়ী নয়, বাংলাদেশের জনগণ দায়ী নয়, দায়ী ফ্যাসিবাদী সরকার।’

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনপূর্বক প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার পরও একজন বন্দিকে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যাওয়া কেবল অমানবিকই নয়, বরং বাংলাদেশের সংবিধান ও মৌলিক মানবাধিকারের পরিপন্থী। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বিচার বা দন্ড প্রদানের ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না কিংবা নিষ্ঠুর, অমানবিক বা লাঞ্ছনাকর দন্ড দেওয়া যাবে না উল্লেখ থাকলেও, বর্তমান সরকার সংবিধান পরিপন্থি কাজ করেই যাচ্ছে। প্রতিটি নিষ্ঠুর আচারণের কথা দেশের জনগণ মনে রাখবে। প্রতিটি ঘটনার বিচার একদিন এদেশের মাটিতেই হবে।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!