DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ক্ষমতায় গেলে সকল কুইক রেন্টাল চুক্তি বাতিল করবে বিএনপি

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ ক্ষমতায় গেলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বাড়ানোর(কুইক রেন্টাল) বিশেষ আইনটি বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আইনকে ‘দায়মুক্তি’ উল্লেখ করে  অভিযোগ তোলেন, ‘এই আইনের বলে সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের লাগামহীন দুর্নীতি করে জনগণের জন্য সঙ্কট তৈরি করেছে।’

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এ ঘোষণা দেন।

ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতায় গেলে আমরা বিদ্যুতের এই সমস্যার সমাধান করব। আশার বাণীটা বলি, আমরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনসহ সব কালা-কানুন বাতিল করব।রেন্টাল-কুইক রেন্টাল কোম্পানির সঙ্গে সব চুক্তি বাতিল করা হবে। স্বচ্ছ প্রতিযোগিতামূলত আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ও অন্যান্য কাজ সম্পাদন করা হবে।’

২০০৯ সালে বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত বাড়াতে আইন করে আওয়ামী লীগ সরকার। সেই আইনের অধীনে ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো স্থাপিত হয়।এই আইনের একটি ধারায় বলা আছে- ‘এই আইনের অধীন কৃত, বা কৃত বলিয়া বিবেচিত কোনো কার্য, গৃহীত কোনো ব্যবস্থা, প্রদত্ত কোনো আদেশ বা নির্দেশের বৈধতা সম্পর্কে কোনো আদালতের নিকট প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।’

চলমান বিদ্যুৎ সঙ্কট নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি আর হরিলুটের খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। এখন শহরে দুই-তিন ঘণ্টা এবং গ্রামাঞ্চলে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা লোডশেডিং জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।একদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, বিদ্যুতের লোডশেডিংজনিত জনদুর্ভোগ মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়েছে। মানুষ দিশেহারা হয়ে উঠেছে, দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে।’

বিদ্যুতে সঙ্কটের জন্য সরকারি নীতিকে দায়ী করেন ফখরুল। তিনি বলেন, ‘১৯টি রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট চালুর দুই-তিন বছর পর বন্ধ হওয়ার কথা থাকলেও প্রয়োজন ছাড়াই এখনো চালু আছে। বেশকিছু রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদন না করেও ক্যাপাসিটি ট্যাক্স বাবদ বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছে।বিদ্যুৎ ছাড়াই সরকারকে এই পর্যন্ত ৯০ হাজার কোটি টাকার গচ্ছা দিতে হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের পকেটেই গেছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। গত ১২ বছরে ক্যাপাসিটি ট্যাক্স বাবদ গেছে প্রায় ৮ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। গত তিন বছরেই গেছে ৫৪ হাজার কোটি টাকা।’

‘বিদ্যুতের চাহিদা সঠিকভাবে নির্ধারণ না করে চাহিদার অনেক বেশি পাওয়ার প্ল্যান্টের সঙ্গে চুক্তি করে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যবসায়ীদের অর্থ লুট করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

এ সময় ফখরুল আরও বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মোট বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাত্র ৪৩ শতাংশ বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। বাকিগুলো অলস বসিয়ে রেখে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ না কিনে গত অর্থ বছরে বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা, তার আগে বছর করা হয়েছে ১৪ হাজার ২৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয়েছে ২১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জ পরিশোধ বেড়ে হয়েছে ১৮ শতাংশ। ক্রমেই ক্যাপাসিটি চার্জের বিল বেড়েই যাচ্ছে।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!