DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ঢাকায় যাদের জায়গা-বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে তারা সবাই কালো টাকার মালিকঃ মুস্তফা কামাল

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ সরকারের বিদ্যমান সিস্টেমকে দায়ী করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ঢাকায় যাদেরই জায়গা-বাড়ি বা ফ্ল্যাট আছে সবাই কালো টাকার মালিক।

তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, যে জমি আপনি কিনবেন, সেই জমি অল্প দামে রেজিস্ট্রি বা নিবন্ধন করতে হবে। যেই দামে কিনবেন, তার চেয়ে কম দামে রেজিস্ট্রি করতে হবে। আপনি বেশি দাম দিয়ে রেজিস্ট্রি করতে পারবেন না। কারণ, প্রত্যেকটা মৌজায় দাম ঠিক করে দেয়া আছে। এর চেয়ে বেশি দামে নিবন্ধন করা যায় না। এই যে বেশি দামে রেজিস্ট্রি করা যায় না, এখানেই তো কালো টাকা হয়ে আছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, যে ফ্ল্যাট দুই বা তিন কোটি টাকায় নিবন্ধিত হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটের প্রকৃত দাম ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি প্রকৃত নিবন্ধন ফি ও কর পাচ্ছে না। এখানেই কালো টাকা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। তবে বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হলে পুঁজিবাজার চাঙ্গা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি। পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ রাখা হয়েছে তার সুফল পাওয়া যাবে পুঁজিবাজারে। সেটি ছাড়াও অন্যান্য সিদ্ধান্ত পুঁজিবাজারকে চাঙা করবে।

গতকাল অর্থনৈতিক বিষয় ও সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন। বৈঠকে ২ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য দেশের ৮টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২৮ হাজার ৫০০ টন চিনি ও মশুর ডাল কেনার দুটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি ৬৮ লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা ও মরক্কো থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টন সার ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৯৪ কোটি ৫৮ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা। খুলনা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নের পূর্ত কাজ যৌথভাবে পেয়েছে ভারত এবং বাংলাদেশের দুই প্রতিষ্ঠান। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আক্ষেপ করে বলেন, সরকারের সিস্টেম বা পদ্ধতিগত কারণে ঢাকায় যাদের বাড়ি, ফ্ল্যাট বা জমি আছে তারা সবাই কালো টাকার মালিক হয়ে গেছেন। তবে পুরো বিষয়টি সঠিকভাবে অটোমেশন করা গেলে এ খাতে কালো টাকার উৎস বন্ধ করা যেত। সিস্টেম বা পদ্ধতিগত সমস্যার কারণে সরকার যথাযথভাবে ফি ও কর পাচ্ছেনা। তবে আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে কাজ করতে হবে। তিনি জানান, মৌজা মূল্য বাড়ানোর চেষ্টা করেও তিনি পারেননি। ফলে যে ফ্ল্যাট ৩ কোটি টাকায় রেজিস্ট্রি হচ্ছে, সেটার দাম ১০ কোটি টাকা। স্ট্যাম্প ডিউটি বাড়ছে না, মাঝে রেজিস্ট্রেশন ফি সরকার পাচ্ছে। মাঝখানে টাকা হয়ে গেলো কালো টাকা। এই যে বিপুল পরিমাণ টাকা গোপন করা হলো, তাতে কালো টাকার উৎস তৈরি হচ্ছে, যাকে আমরা বলি অপ্রদর্শিত আয়। এটা হয়েছে সিস্টেমের কারণেই।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!