DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

আইনসচিব থাকাকালে বিচারকদের বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান নেয়া কে এই কাজী হাবিবুল আউয়াল???

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল আইন মন্ত্রণালয়ের লিগ্যাল অ্যান্ড ড্রাফটিং শাখার অতিরিক্ত সচিব ছিলেন। এটি প্রশাসনিক ক্যাডারের একটি পদ। এই পদে থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে তিনি নিয়োগ পেতে পারেন না। কারণ আইনসচিব একটি বিচারবিভাগীয় পদ। একারনে পদোন্নতি বিধিমালা-২০০২ অনুযায়ী হাইকোর্ট বিভাগ ও আপিল বিভাগ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নিয়োগ অবৈধ বলে রায় দেয়।

কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আইনসচিব নিয়োগ দেয়ার পরই আদালতের বিচারকসহ বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তারা তার অপসারণ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ ছিল:- বিচারকদের স্বার্থ রক্ষা না করা, বিচারকদের স্বতন্ত্র বেতন-ভাতা দিতে সরকারকে বাধা দেয়াসহ যখন-তখন বিচারকদের বদলির মাধ্যমে হয়রানি করার অভিযোগ হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে। এর আগে হাবিবুল আউয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে বিচারকরা পুলিশের দ্বারা লাঞ্ছিত হন। এর পেছনে হাবিবুল আউয়ালের ষড়যন্ত্র ছিল বলে বিচারকরা অভিযোগ করেন। এ ঘটনার জন্য জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবকে তখন বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়। বিচারকদের অভিযোগ হাবিবুল আউয়াল এই বাধ্যতামূলক অবসরের প্রস্তাবে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর করান ও প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এ ঘটনায় সারা দেশের বিচারকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে দুই বিচারকের বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে সংসদীয় কমিটি হাবিবুল আউয়ালকে তলব করলে তিনি সংসদীয় কমিটির কাছে সমস্ত দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নেন ও দায় নিয়ে ক্ষমা চান।

ওই ঘটনার পর তিনি সরকারের ঘনিষ্ঠতা ও বিশ্বস্ততার প্রমান দিয়ে একের পর এক ধর্ম সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং দ্রুত পদোন্নতি পেয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব হন হাবিবুল আউয়াল। অবসরে যাওয়ার আগেই তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পিআরএল বাতিল করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে তাকে চুক্তিতে নিয়োগ দেয় সরকার। ওই চুক্তির মেয়াদ আর শেষ হয় না। বছরের পর বছর বাড়তেই থাকে। শেষ পর্যন্ত কয়েক বছর আগে অবসরে গিয়ে আজকে রাষ্ট্রের একটি সাংবিধানিক পদের প্রধান হলেন তিনি।

যিনি কর্মজীবনে আইন মানেন নি। সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগ থেকেই যার কর্মজীবন অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। যিনি বিচারকদের পুলিশ দিয়ে লাঞ্ছিত করেছেন। যিনি সংসদীয় কমিটির কাছে দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে পরিত্রাণ পেয়েছেন। যিনি অবৈধ নিয়োগের পরও সরকার ঘনিষ্ঠতার সুবাদে একের পর এক মন্ত্রণালয়ের সচিব হয়েছেন। নিজের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় পিআরএল বাতিল করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হয়েছেন। অবসরে না গিয়ে চুক্তিতে নিয়োগ পেয়ে সেই চুক্তি ক্রমাগতভাবে বছরের পর বছর বাড়িয়ে সরকারী আনুকূল্য লাভের যোগ্যতা দেখাতে পেরেছেন। এরকম সিইসি দেশের মানুষের প্রত্যাশিত নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও আইনানুগ নির্বাচন করার কতটুকু যোগ্যতা, বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে পারবেন?

সূত্রঃ ড.তুহিন মালিক,সংবিধান বিশেষজ্ঞ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!