DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

জন্মগত বাংলাদেশী নাগরিক সাংবাদিক কাজলের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ মামলা হয় কি করে???

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ঢাকা থেকে গুম হওয়ার  ৫৩ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ থাকার পর ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলকে উদ্ধার ও তার বিরুদ্ধে দায়ের করা অনুপ্রবেশ মামলা নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দেশের গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা।

উদ্ধারের পর তার হাতকড়া পরা ছবি সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়। যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান গণমাধ্যমকর্মীরা। এ ঘটনায় ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়ে স্যাস্টাস দিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

কাজলকে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত থেকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। ভারত থেকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের অভিযোগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা করেছে বিজিবি।

তবে বাংলাদেশের জন্মগত কোনো নাগরিক নিজ দেশে ফেরত আসলে তা অনুপ্রবেশ কেন হবে তা নিয়ে জনমনে ব্যপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।

সিনিয়ার সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘‘সকালে সাংবাদিক কাজলের খোঁজ পাওয়ার খবরে খুশী হয়েছিলাম খুব। বিশেষ করে অপহরণকারীদের বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসকে সম্মান জানানোর সেন্স অভ হিউমার আমাকে বিস্মিত করেছিল। কিন্তু অপহরণকারীদের কবল থেকে মুক্ত হলেও শাসনের যাঁতাকল থেকে মুক্তি পাননি তিনি। তাই পিছমোড়া করে বেঁধে কাজলকে রাস্তায় হাঁটানো হলো। কাজল কোনো ভয়ানক ক্রিমিনাল নন, তিনি অপরাধীও নন। পালিয়ে যাবার মানুষও নন। তাহলে কেন এই পিছমোড়া বাঁধন?’’

আরিফুর রহমান লিখেছেন, ‘‘আওয়ামীলীগের ১৩ বছরের শাসনামলে একটা নাটক বারবার দেখেছে মানুষ। নাটকের চরিত্র ভিন্ন থাকলেও চিত্রনাট্য থাকে একই রকম। পরিচিত মুখগুলো সরকারের বিরুদ্ধে বললে বা লিখলে তাকে হঠাৎ কিছুদিন খুঁজে পাওয়া যায় না। পরে বেচারাদের দেখা যায় বাংলাদেশ – ভারতের বর্ডারে অথবা ভারতের ভিতরে। অনেকের তো শেষপর্যন্ত খোঁজই পাওয়া যায় না। এই সাংবাদিকের ভাগ্য ভালো।কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য খারাপ।  জম্ম বাংলাদেশে হলেও মৃত্যুটা ভারতে হতে পারে যে কারো।’’

আবু আলম লিখেছেন, ‘‘নিজ দেশে হাত কড়া পরা অনুপ্রবেশকারী! নিজ দেশে তো অনুপ্রবেশ হয় না। এরকম আইন আমি দেখিনি বা পড়িনি। অনুপ্রবেশ সম্পর্কিত আইন The Foreigners Act 1946। সেখানে নিজ দেশে অনুপ্রবেশের কোনও তত্ত্ব নেই। হ্যান্ডকাফ নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে! কিন্তু কে শোনে সেসব!’’

কামরুল শিহাব লিখেছেন, ‘‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবসে ভারত বাংলাদেশী গুম হওয়া সাংবাদিককে বেনাপোলে ছেড়ে দিয়েছে।এবার দেখুন তারা এই দিবসকে কতো সন্মান করে! তবুও আপনারা ভারতের সমালোচনা করেন।’’

মারুফ হোসাইন লিখেছেন, ‘‘এসব বুঝে না এমন গাধা দেশে নেই।  এখন প্রশ্ন হচ্ছে কাজলের পরে সিরিয়ালে কে? আর এসব গুমের কেন্দ্র কি ইন্ডিয়াই থাকবে নাকি নতুন কোন যুক্ত করা হবে? যেই গুম হয় মারা না গেলে ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া যায়।  এতে ইন্ডিয়ার মান ইজ্জত প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে।’’

মেহেদী মালিক লিখেছেন, ‘‘বাহ বাংলাদেশ বাহ, সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হলো তখন কোন নাড়াচাড়া নাই, কিন্তু সাংবাদিক কাজল যখন বর্ডার দিয়ে এদেশে যেকোনোভাবে আসে তখন তার নামে অনুপ্রবেশের মামলা করা হয়। আগে তো তাকে জিজ্ঞেস করা উচিত যে সে এতদিন কোথায় ছিল তারা কিভাবে তাকে গুম করেছে।’’

গত ১০ মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর হাতিরপুলের ‘পক্ষকাল’-এর অফিস থেকে বের হন সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান না পেয়ে পরদিন ১১ মার্চ চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তার স্ত্রী জুলিয়া ফেরদৌসি নয়ন। ১৩ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শফিকুল ইসলাম কাজলকে সুস্থ অবস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি জানায় তার পরিবার।

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!