DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সংবিধান পরিপন্থী ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল’ আইন হিসাবে পাস না করার আহ্বান টিআইবির

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  বাংলাদেশের  সংবিধানের মূলনীতির পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে হাসিনা সরকারকে  ডিজিটাল নিরাপত্তা বিল আইন হিসেবে পাস করা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠনটি।

 

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অংশীজনদের অধিকাংশ সুপারিশ আমলে না নিয়ে গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশ ও সাধারণ জনগণের মুক্তচিন্তা ও বাক্-স্বাধীনতা খর্বকারী ধারাসমূহ অপরিবর্তিত রেখে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কর্তৃক প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলের ওপর প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হতাশাজনক। একদিকে প্রস্তাবিত বিলের ৮, ২৮, ২৯ ও ৩১ ধারাগুলোর ব্যাপারে গণমাধ্যম কর্মীদের উদ্বেগ ও মতামতকে উপেক্ষা করা হয়েছে, যা তাদের স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। অন্যদিকে বিতর্কিত ৩২ ধারার ডিজিটাল গুপ্তচর বৃত্তির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ অনুসরণের সুপারিশ করার দৃষ্টান্ত অত্যন্ত হতাশা ও দুঃখজনক।

তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনের ৩২ ধারার অপপ্রয়োগের ফলে তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত তথ্য জানার আইনি অধিকার ব্যাপকভাবে রুদ্ধ হবে এবং এর ফলে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অপরাধের অধিকতর বিস্তার ঘটবে। এছাড়া ধারাটি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এবং যে কোনো ধরনের গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার প্রধান প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করবে।

‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’ এর ধারা ৩ এর খ তে বলা আছে “তথ্য প্রদানে বাধা সংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের বিধানাবলীর সহিত সাংঘর্ষিক হইলে, এই আইনের বিধানাবলী প্রাধান্য পাইবে’ এবং ‘জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশ (সুরক্ষা প্রদান) আইন, ২০১১’ তে জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রকাশকারীকে আইনগত সুরক্ষা প্রদানের যে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩’ এর মতো একটি নিবর্তনমূলক আইনের বিতর্কিত ধারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাথে সম্পৃক্তকরণ কতটুকু প্রাসঙ্গিক তা বিবেচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

টিআইবি মনে করে সরকার ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন নিশ্চিতের যে সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে প্রস্তাবিত আইনটি সেক্ষেত্রে বাধা হিসেবে কাজ করবে। তাই গণমাধ্যমসহ সকল নাগরিক যাতে সমস্ত ধরনের ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসেবে স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন ও বাধাহীন মতামত প্রকাশ করতে পারে তার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলটি আইনে পরিণত করার ক্ষেত্রে সরকারকে আরো দূরদর্শী হতে পরামর্শ প্রদান করছে টিআইবি।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!