ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে যুক্তরাষ্ট্র।
আজ শনিবার বিকেলে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টা লিসা কার্টিস এ কথা জানান।
এ সময় কফি আনান কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন লিসা কার্টিস। তিনি রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক সাড়া দেওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের ভূঁয়সী প্রশংসা করেন।
লিসা কার্টিস বলেন, বাংলাদশে মিয়ানমার সীমান্তরে চলমান সব পরস্থিতিতি পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায় যুক্তরাষ্ট্র।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটসহ পদস্থ কর্মকর্তারা।
মার্শা বার্নিকাট সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছি। সীমান্তে মিয়ানমার সেনা মোতায়েন এবং রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ অভিমুখে ঠেলে দেওয়ার বিষয়টির প্রতিও দৃষ্টি রয়েছে।’
বার্নিকাট আরও বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে মিয়ানমারে ফেরত যেতে পারে সে জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করছে। তারা যেন নিজেদের বাড়ি-ঘরে ফিরতে পারে সে লক্ষ্যে মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলটি কুতুপালং, বালুখালী ও টেকনাফের শামলাপুর রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
এদিকে, গত কয়েকদিন থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি তুমব্রু এলাকায় সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে মিয়ানমার। এ ছাড়া শূন্যরেখায় অবস্থান নেওয়া রোহিঙ্গাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোড়ার পাশাপাশি তাদের হুমকি দেয় বিজিপি। এরপর সীমান্তে সেনা সমাবেশের কারণে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিজিপির সঙ্গে পতাকা বৈঠক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি)।
বৈঠকে মিয়ানমার জানায়, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার স্বার্থেই তারা সীমান্তে সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এসব গুলি চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বিজিপি। এদিকে, সীমান্তে অকস্মাৎ সেনা মোতায়েনের ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলবও করে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়।
গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাবাহিনীর নিপীড়ন ও গণহত্যা চালানো শুরু করলে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয়ের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দিলেও নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আহ্বানসহ দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার।