DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

আওয়ামী মিথ্যাচারঃকানাডার কোর্টে বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল ঘোষনার অপপ্রচার

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজু – ২৫শে মে'২০১৭ঃ  আবারও বাংলাদেশের অনির্বাচিত হাসিনা সরকারের সুচারু এবং হীন অপ্রচারের স্বিকার হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ এবং জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল,বিএনপি।

এবছরের  ফেব্রুয়ারী  মাসেও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে কানাডা প্রবাসী সাওগাত আলী সাগর সম্পাদিত 'নতুনদেশ 'নামক একটি  অনলাইন পত্রিকায় বিএনপিকে কানাডার আদালত কর্তৃক সন্ত্রাসী দল ঘোষনার খবর ছাপা হয়।

যথারীতি বাংলাদেশের সরকার নিয়ন্ত্রীত কিছু টিভি মিডিয়ায় বিষয়টি ব্যপক ভাবে প্রচার করা হলে দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ বিষয়টি নিয়ে বিষদ অনুসন্ধান করে দেখতে পায় যে ঐ বিশেষ কেসের আবেদনকারী জনৈক জুয়েল গাজী নামে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুরে  বিএনপি কিংবা তার অঙ্গ সংগঠনের কোনো নেতাই নেই।

বরং এই জুয়েল গাজী একজন আওয়ামী লীগ কর্মী এবং ঐ দলের সহযোগিতায় তিনি কানাডায় আসেন এবং বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে তিনি কানাডা বিএনপির কর্মী হিসাবে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন।

যদিও শুনানী চলাকালে জুয়েল গাজী অভুতপুর্ব ভাবে নিজ দল (তার দেয়া মিথ্যা তথ্য অনুযায়ী )বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল বলে জবানবন্দী দিয়েছিলেন।ফলে শেষ পর্যন্ত বলাবাহুল্য তার রিফিউজি আবেদনটি নাকচ হয়ে যায় এবং পর্যবেক্ষনে জুয়েল গাজীর দলকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অংশ নেয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

কানাডা বিএনপি এই বিষয়টি জরুরী সংবাদ সম্বেলন করে এই বিষয়ে বিএনপি অবস্থান তুলে ধরেছিলো।একই সাথে কানাডা সরকারের সাথে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিএনপির হাইকমান্ডের সাথে সফল যোগসুত্র স্থাপনে সহায়ক ভুমিকা পালন করে।

সে সময় আমাদের অনুসন্ধানে কানাডার প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত কেউ স্বীকার করেননি বিএনপি একটি ‘সন্ত্রাসী দল’, এমনকী বিএনপি কানাডার জননিরাপত্তা মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটেও তালিকাবদ্ধ কোনো সন্ত্রাসী দল নয়।

ঐসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার জনাব লারামীর সাথে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাতেও এই বিষয়টি নিয়ে কানাডার অবস্থান পরিস্কার করেন তিনি।

 বিষদ অনুসন্ধানের পর দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো।

ঐসময় বিএনপির পক্ষ থেকে কানাডায় অভিবাসন আবেদনকারী নিজ দলীয় কর্মীদের পরিচয় এবং বিভিন্ন তথ্যাদী দিয়ে কানাডা সরকারকে সহায়তার প্রস্তাব করা হয়। 

এবার সেই বিষয় নিয়ে আবার ভ্রান্ত এবং বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেছে সেই সওগাত আলী সাগরের নতুনদেশ পত্রিকা।

 তার দেয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী কানাডার ফেডারেল কোর্ট আবারও আরেক বাংলাদেশী শরণার্থীর অভিবাসন পুনর্বিবেচনার আবেদন নাকচ করেছে এবং বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।

কানাডায় অভিবাসন আবেদনকারী ঐ ব্যক্তিটি নিজেকে বাংলাদেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সচিব দাবি করলেও দলটিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ বানাতে কাপর্ণ্য করেনি, এমনকী কোর্টের রায়ে শরণার্থীর বিষয়টি জনসমক্ষে প্রকাশ পেলে জীবননাশ হতে পারে বিধায় নাম প্রকাশেও অনীহা জানিয়েছে এবং অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় তার আবেদন নাকচ করে দিলেও তার বাংলাদেশে জীবনাশংকার বিষয়টি আমনে নিয়ে তার আসল নাম প্রকাশ করেনি।

ফলে এই ছদ্বনামধারী ব্যক্তির পরিচয় এবং জবানবন্দী চ্যালেন্জ করার সুযোগ সীমিত হয়ে এসেছে।

এই কেসের রায়ের কপি পর্যালোচনা করে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উঠে আসেঃ

এতদ সংক্রান্ত মামলাটি মোটেই রিফিউজ বিভাগের মামলা নয় বরং জননিরাপত্তা এবং জরুরী প্রস্তুতি বিষয়ক মামলা।

 গত ১২ মে শরণার্থীর নামের আদ্যাক্ষর ‘এস.এ’ বনাম জননিরাপত্তা ও জরুরি প্রস্তুতি বিষয়ক মন্ত্রীর মধ্যকার মামলার নিষ্পত্তিতে বিচারক সাইমন ফদারগিল ওই নাকচ সংক্রান্ত রায়টি দেন।


তাতে ১৩ পৃষ্টা সংবলিত রায়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ‘এস.এ’ আদ্যাক্ষর বিশিষ্ট আবেদনকারী কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী নিরাপত্তা বিষয়ক ৩৪(১)এফ ধারায় বর্ণিত আইনানুযায়ী আশ্রয় প্রার্থনার অযোগ্য। কেননা তার দাবি অনুযায়ী, সে বিএনপির সদস্য এমন স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে ওই আইনী বিবেচনা ও বিশ্লেষণে ‘টেম্পোরাল কম্পোনেন্ট’ বা সাময়িক কোনো বিষয়বস্তু নেই। ফলে তার প্রদত্ত পরিচিতি অনুযায়ী বিএনপি সংগঠনটি সন্ত্রাসে যুক্ত হয়েছে, হচ্ছে ও হবে – সবই বাস্তবসম্মত। 


পাশাপাশি চতুর্থ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- আবেদনকারী বাংলাদেশের নাগরিক। ২০০৪ সালের এপ্রিলে সে বিএনপির যুব অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী যুব দলে যোগ দেয়। ২০১২ সালে সে বিএনপির নির্বাহী কমিটির যুগ্ম সচিব হয়। ২০১৪ সালে এপ্রিলে সে কানাডায় পদাপর্ণ করে এবং শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় প্রার্থনা করে।


এতে ওই রায় প্রদানের ক্ষেত্রে দুটি ইস্যু বা বিষয় অর্থাৎ কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী নিরাপত্তা বিষয়ক ৩৪(১)এফ ধারায় বর্ণিত আইনানুযায়ী আশ্রয়ের উপযুক্ত কিনা এবং আপিলের জন্য প্রশ্ন সত্যায়ন করা হবে কিনা বিবেচনায় নেয়া হয়। কিন্তু বিচারক সাইমন ফদারগিল উভয় ইস্যুই নাকচ করে দেন।

তবে রায়ের এসব খুটিনাটি বিষয়ে আলোকপাত না করে শুধু কানাডার কোর্ট আবার বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল ঘোষনা করেছে এই শিরোনামে সংবাদ প্রচার করা উদ্দেশ্যপ্রসুত এবং সত্যের  অপলাপ।এখানে উল্লেখ্য যেকোন আদালত শুধুমাত্র মামলায় উথ্বাপিত বিষয়ের উপর তাদের সিদ্ধান্ত দেয়ার এক্তিয়ার রাখে।ঐমামলার বাদীর তথ্যের উপর ভিত্তি করে অন্য দেশের একটি শান্তিকামী জনপ্রিয় দলের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়ার অধিকার রাখে না,শুধু মাত্র পর্যবেক্ষনমুলক বক্তব্য প্রদান করতে পারে।

 

 

 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!