DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করতেই এই ক্রসফায়ার : বেগম খালেদা জিয়া

jagpaiftar copy

ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  গ্রেপ্তার হওয়া অপরাধীদের দেওয়া তথ্যে অপরাধের সঙ্গে সরকারের সংশ্লিষ্টতা উঠে আসার কারনেই তাদেরকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে হোটেল পূরবানী ইন্টান্যাশনাল হোটেলে আয়োজিত এক ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।  এ ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। এতে সভাপতিত্বে করেন জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান।

মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রিমান্ডে নেওয়া গোলাম সাইফুল্লাহ ফাহিম শনিবার সকালে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিএনপি নেত্রী এই বক্তব্য রাখলেন।

বুুুধবার রাজধানীতে এক ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, একের পর এক ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু প্রকৃত অপরাধীদের ধরা হয়নি। কোনো অপরাধী ধরা পড়লে দেখা যায় জেলে নিয়ে যায়, পরে রিমান্ডে নেওয়া হয়। কিন্তু রিমান্ড থেকে আর সে জেলে বা মা-বাবার কাছে ফেরত যায়না। চলে যায় ক্রসফায়ারে।এর উদ্দেশ্য কি ? অর্থাৎ সে এমন তথ্য দেয় যে, এতে সরকার জড়িয়ে পড়ছে। সেজন্য ক্রসফায়ার। এই রমজান মাসেও এমন কাজ হচ্ছে।

চলমান সাড়াশি অভিযানে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আদালতের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলেও এ সময় অভিযোগ করেন বিএনপি নেত্রী

খালেদা জিয়া বলেন, ‘এখন দেশ আছে কী না, সেটাই সন্দেহ। একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কোনো অপরাধীর বিচার হয়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিকে হত্যা করা হলো। তখন অনেক হইচই হলো। বললো, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারীদের ধরে বিচার করা হবে। আজ কয়েক বছর হয়ে গেলো কিছুই হয়নাই।

কেন হয় নাই? এর পেছেনে নিশ্চয় বড় কারন আছে। কারন, যদি হত্যাকারীদের ধরা হয় সত্যি বেরিয়ে আসবে। তাদের কাছে (সাগর-রুনি) সরকারের অপকর্ম, চুরি, দুর্নীতির রেকর্ড ছিলো। অনেক তথ্য ছিলো। এসব যেই কম্পিউটারে ছিলো সেটি চুরি করে নিয়ে গেছে। আর কোনো জিনিস চুরি হয় নাই, বলেন বিএনপি নেত্রী।

সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে পুলিশের সাড়াশি অভিযানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এই সরকার জনগণের নির্বাচিত নয়। জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে কাউকে বিনা ওয়ারেন্টে ধরতে পারবে না। কিন্তু তারা সেই নির্দেশনা মানছেনা। এরা আদালতের নির্দেশ মানেনা, উল্টো আদালতকে আদেশ দেয় কি করতে হবে বা  করতে হবে না।

দেশে বর্তমান সময়ে কারো কোনো নিরাপত্তা নেই মন্তব্য করে বিএনপি নেত্রী বলেন, ‘যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে যুদ্ধ করেছি, সেটি হারিয়ে গেছে। গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, সবার সমান অধিবার, নিরাপত্তা আজ নেই।
 

খালেদা জিয়া বলেন, দেশে কি হচ্ছে, কি চলছে সবাই জানেন। দেশ আছে কিনা সেট নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। দেশ কে চালাচ্ছে তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। তিনি আরো বলেন, অনেক ঘটনা ঘটছে কিন্তু বিচার হয়নি। সাংবাদিক দম্পতি সাগর রুনি হত্যার কয়েক বছর পার হলো কিন্তু এখনো বিচার হয়নি। এর পেছনে বড় কারণ আছে।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরাধী ধরা পড়লো অথচ রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ক্রসফায়ারে দেয়া হচ্ছে। কারণ আটককৃতরা এমন তথ্য দেয় যার সঙ্গে সরকার জড়িয়ে যায়। তাই ক্রসফায়ার। 

 

কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে বিনা ওয়ারেন্টে ধরা যাবে না অথচ গ্রেফতার করা হচ্ছে। দেশে কারো কোন নিরাপত্তা নেই। প্রধানমন্ত্রী নামেই প্রধানমন্ত্রী। এদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হচ্ছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিজে দেশ চালাচ্ছেন, না কী কারো নির্দেশ পালন করছেন সেই প্রশ্নও তোলেন খালেদা জিয়া।

দেশে আজকে যিনি প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসে আছেন, তিনি কি প্রধানমন্ত্রী, না অন্য কোনো মন্ত্রী হিসেবে আছেন? দেশের মানুষ মনে করেন, তিনি নামে প্রধানমন্ত্রী, কিন্ত তিনি নির্দেশ পালন করেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী বলা যায়না।

দেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হতে চলেছে দাবি করে এই অবস্থা থেকে উত্তরনে দেশবাসী কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। 

ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, প্রচার সম্পাদক শেখ ফরিদ উদ্দিন, নগর জাগপার সভাপতি আকসাদুর রহমান, জাগপা মজদুরলীগের সভাপতি শেখ জামাল উদ্দিন প্রমুখ। 

এছাড়া নয়াদিগন্ত পত্রিকার সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন , ইনকিলাব পত্রিকার সম্পাদক এ এমএম বাহাউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।   

২০ দলের মধ্যে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন, কল্যান পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মাদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, মহাসচিব এম এম আমিনুর রহমান, জাতীয় পার্টির ( কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানী, মহাসচিব গোলাম মোস্তাফা ভূঁইয়া, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব,  ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট  আজারুল ইসলাম , খেলাফত মসলিজের নায়েবে আমির মাওলানা মজিবুর রহামন পেশোয়ারী, সাম্যদলের সভাপতি কমরেড সাইদ আহমেদ, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব শাহাদৎ হোসেন সেলিম, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান আবু তাহের চৌধুরী, পিপলস পার্টির মহাসচিব গরীবে নেওয়াজ প্রমুখ।

বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল(অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা, অ্যাডভোকেট রফিক সিকদার প্রমুখ।
 

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!