DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

বাংলাদেশ ধীরে ধীরে অভিশাপ মুক্ত হয়ে এগিয়ে যাচ্ছেঃ শেখ হাসিনা

shsangshadক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ বাংলাদেশ অভিশাপ থেকে আস্তে আস্তে মুক্তি পাচ্ছে। এর ফলে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সোমবার দশম জাতীয় সংসদের অষ্টম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশে হত্যাযজ্ঞের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে মুহূর্তে বিজয় সূচিত হতে যাচ্ছে। সেই ঠিক মুহূর্তে বু্দ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। কারণ বাংলাদশে স্বাধীন হলেও যেন নিজের পায়ে কখনো দাঁড়াতে না পারে, চলতে না পারে।

তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যাকে করা হল তার কারণ একটাই। কারণ তিনি এদেশের জন্য স্বাধীনতা এনেছিলেন। আর তখন থেকেই বাংলাদেশে শুরু হল হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি।

তিনি আরো বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসলে, আর বিশেষ করে যে দল মানুষের জন্য স্বাধীনতার জন্য ত্যাগ স্বীকার করে, সংগ্রাম করে- সেই দলই যদি ক্ষমতায় আসে তখনই কিন্তু মানুষের উন্নতি হয়। সেটাই আমরা প্রমাণ করেছি।’ ‘সংবিধান লংঘন করে জেনারেল জিয়াউর রহমান আর্মি অ্যাক্ট এবং রুল ভঙ্গ করে একাধারে সেনাপ্রধান, অপরদিকে রাষ্ট্রপ্রধান; এই দুই পদ নিয়ে একের পর এক ক্যু এবং যুদ্ধাপরাধীদের এনে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছিল ।

অবশ্য তিনি মাত্র কয়েকফুট দুরত্বে বসা তার বিশেষ দূত সাবেক স্বৈরশাসক হোঃ মোঃ এরশাদ ও তার ৯ বছরের শাসনামলের কথা বেমালুম চেপে যান ।এছাড়াও ১/১১ এর সেনা সমর্থিত সরকারের ২ বছরের শাসনামলের ব্যাপারেও কিছু বলেননি শেখ হাসিনা ।

উল্লেখ্য জেনারেল এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪শে মার্চ নির্বাচিত বিএনপি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন এবং একাধারে রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান ছিলেন বেশ কবছর  এবং ১/১১ এর মঈনুদ্দীন-ফখরুদ্দীন এর তথাকথিত তত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ মাত্র তিন মাস হলেও তারা সংবিধান লংঘন করে অবৈধ ভাবে প্রায় ২ বছর বাংলাদেশ শাসন করেছিলেন ।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে অপরাধ তারা করেছিল একাত্তর সালে। সেই অপরাধের সীমা নেই। এই বিচারের মধ্যে দিয়ে, রায় কার্যকরের মধ্যে দিয়ে যারা এখানো স্বজন হারার বেদনা নিয়ে বেঁচে আছেন। তারা অন্তত তাদের মনটা সান্তনা পাবে তারা বিচার পাচ্ছে। এই বিচার যদি আমরা সম্পন্ন না করতে পারি। তাহলে এদেশ অভিশাপ মুক্ত হবে না। কাজেই বিচার এবং রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে আমি মনে করি, বাংলাদেশ যে দীর্ঘদিন ধরে অভিশাপ থেকে অভিশপ্ত হয়েছিল। আস্তে আস্তে সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি পাচ্ছে। আর মুক্তি পাচ্ছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, অথনৈতিকভাবে উন্নতি হচ্ছে।

হরতাল-অবরোধ সত্তেও আমরা ৬ দশমিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রায় দেড় কোটি বেকারকে আমরা কর্মসংস্থান দিতে সক্ষম হয়েছি। ৩৮ লাখের মতো বিদেশে পাঠিয়েছি। ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল সারা বাংলাদেশে করবো। সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী এই শিল্প গড়ে তুলতে চাই। তাহলেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। যে এলাকায় যে পণ্য উৎপাদন হয়, সেগুলোকে সংরক্ষণ করার বিষয়ে কাজ করবে। দারিদ্র্যের হার ১৪ ভাগে নামিয়ে আনবো। এখন আর কেউ বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দূর্ভাগ্য হলো ২০১৩ সালে নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে শত শত মানুষকে হত্যা করেছিলো। নির্বাচনকে বন্ধ করতে চেয়েছিলো। বিএনপি নেত্রী ঘোষণা দিলেন এই সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। উনি থাকলেন অফিসে। প্রায় ৬৫ জন মানুষ নিয়ে উনি ৩ মাস গুলশান অফিসে থাকলেন। উনি এখন পর্যন্ত অবরোধ প্রত্যাহার করেন নাই। তার অবরোধ এখনও আছে।

‘আন্দোলন আমরাও করেছি। কিন্তু আন্দোলনের নামে মানুষকে এই ভাবে মারা, হত্যাযজ্ঞ করিনি। দেশে থেকে এই ঘটনা ঘটালো এরপর উনি বিদেশে গেলেন। বিদেশে যাওয়ার পরই দেখি বাংলাদেশে বিদেশি হত্যা শুরু। আমরা কিন্তু আসামীদের যথাযথভাবে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

দেশের সকল নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংসদ বলেন, যে কাজগুলি আমরা নিজেরা নিজেরাই চিন্তা থেকে করছি। তাই নতুন নতুন দাবি না তুলে যে কাজগুলি আমরা করেছি, সেগুলোকে মানুষকে জানানো এবং সেই কাজগুলো যাতে বাস্তবায়ন হয়। এজন্য সবাইকে আরো যত্মবান হতে হবে। পাশাপাশি দেশের মানুষের প্রতিও কাজগুলো শেষ করার সময় চেয়ে সহযোগিতাও কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!