DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ফিরে দেখাঃ ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮, বিএনপির প্রতিষ্ঠা লগ্ন

bnp1sepক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ১লা সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ সালে ঢাকার রমনা গ্রীনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি'র গঠন জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টের শরীক দলগুলির সমন্বয়ে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ নামে একটি নতুন রাজননৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

এ পরিস্থিতিতে ২৮ আগস্ট বিচারপতি সাত্তার এক জরুরি আদেশে জাগদল ও এর সকল অঙ্গদলকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।

১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নামে একটি নতুন দল ঘোষণা করেন। ঢাকার রমনা গ্রীনে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে জিয়াউর রহমান ঘোষিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঘোষণাপত্রে বলা হয়- বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে ইস্পাত কঠিন গণঐক্য, জনগণ ভিত্তিক গণতন্ত্র ও রাজনীতি প্রতিষ্ঠা, ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত জনগণের অক্লান্ত প্রয়াসের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক মুক্তি, আত্মনির্ভরশীলতা ও প্রগতি অর্জন এবং সাম্রাজ্যবাদ, সম্প্রসারণবাদ, নয়া উপনিবেশবাদ ও আধিপত্যবাদের বিভীষিকা থেকে মুক্তির লক্ষ্যকে নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল’ গঠিত হয়েছে।

bnpflagএই চারটি লক্ষ্যকে ‘জনগণের মৌলিক দাবি’ বলে জনগণের ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়।

দলের কাঠামো ও গঠনতন্ত্রের বর্ণনায় তিনি জানান, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা, শহর/পৌরসভা, জেলা, নগর ওয়ার্ড, নগর থানা, নগর পর্যায়ের দলের কাউন্সিল ও নির্বাহী কমিটি গঠিত হবে। দলের সর্বোচ্চ স্তর হচ্ছে জাতীয় কাউন্সিল ও জাতীয় নির্বাহী কমিটি। এছাড়া থাকবে ১১ জন সদস্যের জাতীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি, পার্লামেন্টারি বোর্ড ও দলীয় নির্বাচনী কলেজ। জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে একজন সভাপতি, পাঁচজন সহ-সভাপতি, একজন সেক্রেটারি জেনারল, একজন কোষাধ্যক্ষ, চারজন সাংগঠনিক সম্পাদক এবং একজন করে প্রচার, সমাজকল্যাণ, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, দফতর, যুব বিষয়ক, মহিলা বিষয়ক, ছাত্র বিষয়ক, শ্রম ও কৃষি ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক থাকবেন।এছাড়া একজন বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক থাকবেন।

দলের ঘোষণাপত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে সূচিত জাতীয় একতা ও সংহতির প্রক্রিয়াকে স্থায়ী ও সংঘবদ্ধ করা সময়ের দ্বিধাহীন দাবি ও জাতীয় জীবনের যুগসন্ধিক্ষণে জাগ্রত জনতার দাবিতে এ দল গঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে জাতীর মিলন ও ঐক্যের দল বলে ঘোষণা করে এতে বলা হয় যে, এই দলের বৈপ্লবিক উদারতা ও বিশালতা সকল দেশপ্রেমিক মানুষকে এক অটল ঐক্যবাদী কাতারে শামিল করতে সক্ষম হবে। সক্ষম হবে জাতীয় পর্যায়ে স্থিতিশীলতা, সার্বিক উন্নতি ও প্রগতি আনয়ন করতে। ঘোষণাপত্রে স্থিতিশীল গনতন্ত্রের রুপরেখায় প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার নির্বাচিত ও সার্বভৌম পার্লামেন্টের প্রতি দলের আস্থা জ্ঞাপন করা হয়। এতে দেশের শতকরা ৯০ জন অধিবাসী মধ্যবিত্ত গ্রামের সার্বিক উন্নয়নের প্রতি সকল পর্যায়ে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে ভূমি ব্যবস্থা ও প্রশাসনকে ন্যায় বিচার ভিত্তিক, আধুনিক ও সুবিন্যস্ত করার অঙ্গিকার করা হয়।

গণমুখী কৃষি নীতি ও কার্যক্রম প্রণয়ন, সমবায়ের ভিত্তিতে জাতীয় উন্নয়ন, সৃজনশীল উৎপাদনমুখী ও গণতান্ত্রিক শ্রমনীতি প্রণয়ন, গণমুখী জীবননির্ভর কার্যক্রম প্রণয়ন, জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতাকে সুনিশ্চিত করতে দেশরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার, মুক্তিযোদ্ধাদের সৃজনশীল, গঠনমূলক ও উৎপাদানমূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, বাংলাভাষা, সাহিত্যের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও প্রসার, শাসনতন্ত্রের জীবননির্ভর ও বাস্তবমুখী রুপ সংরক্ষণ ও স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি নিশ্চিতকরণে, সামাজিক ও বৈষম্য দুরিকরণ, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার সুদৃঢ় অঙ্গীকার করা হয় ঘোষণাপত্রে।

সূত্রঃ দৈনিক বাংলা,২রা সেপ্টেম্বর' ১৯৭৮

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!