DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ঈদের দিনে জুমআর নামাজ পড়ার প্রয়োজন নেইঃ নতুন ফতোয়া ?

fatwaদৈনিক প্রথম বাংলাদেশ প্রতিবেদনঃ সৌদি সুপ্রিম কাউন্সিল অব স্কলার্স- যাদের নির্দেশে দুই ঈদ পড়া সহ ইসলামী শরীয়তের অন্যান্য বিধি বিধানের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে এবং বিশ্বের অধিকাংশ ইসলামি চিন্তাবিদের সাথে এই সুপ্রিম কাউন্সিলের খুব একটা মতভেদ হয়না বা তফাৎ হয়না। কোরআন এবং হাদিসের আলোকেই মূলত এই কাউন্সিল বক্তব্য যতটুকু সম্ভব দিয়ে থাকে।

এবারের ঈদ উল ফিতর মধ্যপ্রাচ্য সহ গোটা পূর্ব ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশে যেভাবে গ্রিনিচ মান টাইমের দেশে সময়ের তারতম্য খুব কাছাকাছি, সেই সব দেশে একই দিনে ঈদ পালিত হয়েছে এবং এই সুপ্রিম কাউন্সিল এই ঈদের চাঁদ দেখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে পত্র পত্রিকায় বরাবরের মতো, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের বহুল প্রচারিত দৈনিক আরব নিউজের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রচারিত হয়েছিলো।

রমজানের রোজা শেষে এই ঈদ উল ফিতর অনেক বছরই শুক্রবারে পালিত হয়েছে এবং যথারীতি ঈদ জামায়াত এবং এর পরে জুমআর নামাজ যথানিয়মে পালিত হয়ে আসছে- কখনো কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন কিংবা আদৌ দরকার আছে কিনা বা পালন করা অত্যাবশ্যকীয় কিনা প্রশ্ন উত্থাপন করেননি। এবারই প্রথম সুপ্রিম কাউন্সিল এ নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু করে দিলো।

যদিও মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন সংবাদ মাধ্যম এটাকে একটা হেলথি বিতর্ক হিসেবে উল্লেখ করেছে। সুপ্রিম কাউন্সিল বলছে, একই দিনে(অর্থাৎ শুক্রবার) যদি ঈদ উল ফিতর কিংবা দুই ঈদ পরে যায়, এবং ঐ একই দিনে যদি শুক্রবার হওয়ার কারণে জুমআর নামাজ যেহেতু পড়তে হয় বাধ্যতামূলক- তাই একই দিনে হওয়ার কারণে ঈদের জামায়াত পড়ার কারণে জুমআর নামাজ পড়তে হবে কিনা ?

এই প্রশ্ন উত্থাপনের পর পরই তারা আবার মতামতও দিয়েছে। তবে, সৌদি আরবের কোন কোন স্কলার বলেছেন, শুক্রবারে ঈদ হওয়ার কারণে ঈদের নামাজ পড়ার পরে আর জুমআর নামাজ যদিও উত্তম, তথাপি পড়ার ব্যাপারে বাধ্যবাধকতা নেই।

এই বক্তব্য মধ্যপ্রাচ্যের স্থানীয় মিডিয়াগুলো রিপোর্টও করেছে। সুপ্রিম কাউন্সিলের একজন সদস্য হলেন আলী আল-হাকামি, তিনি এক ফতোয়া ইস্যু করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন, মুসলমানদের জন্য একই দিনের ঈদ ও জুমআ হওয়ার কারণে এক সাথে দুটো বিষয় পালন করা প্রয়োজন নেই। ঈদ জামায়াত পড়ার পরে জুমআ পড়ার দরকার নেই, কেবল ঈদের নামাজ পড়াটাই যথেষ্ট। তার মতে, দুটো পড়া উত্তম ও সহজ হওয়া সত্যেও একজন মুসলমান যদি ঈদ জামায়াত পড়েন, তাহলে উভয়টি পড়া উত্তম হওয়া সত্যেও উভয় নামাজ পড়া বাধ্যবাধকতা দরকার নেই। সুপ্রিম কাউন্সিলের আরো একজন সদস্য কায়েস আল-মোবারক। তিনি বলেছেন, এই ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে হাদিস রয়েছে, তা বিশ্বব্যাপী ইসলামিক স্কলারদের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসের অর্থ ও ব্যাখ্যায় ভিন্ন ভিন্ন ইন্টারপ্রিটেশন রয়েছে।

এ ব্যাপারে ইমাম আহমদ (রহঃ) যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন, সেটা নিয়ে তিনি বলেছেন, ইমাম আহমদ (রঃ) বলেছেন, ঈদের নামাজ এবং যুহর নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক, কিন্তু শুক্রবার ঈদ হওয়ার কারণে মসজিদে জুমআর নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক নয়। মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষ সংবাদগুলোর মতে, বিশ্বব্যাপী কোন কোন স্কলাররা শুক্রবার ঈদ হওয়ার কারণেও ঈদের নামাজ এবং জুমআর নামাজ পড়া বাধ্যতামূলক বলে মতামত দিয়েছেন, কেবলমাত্র যারা অত্যন্ত বিপদজনক কিংবা যেখানে ঝুকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে ছাড়া।

বিপরীতে উম্ম আল ক্কোরা ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি মেম্বার হাতেম আল-কোওনি বলেছেন, যারা শুক্রবার ঈদ হওয়ার কারণে ঈদের জামায়াত পড়েছেন, তাদের জন্য আবার ঐ দিন জুমআর নামাজ পড়া বাধ্যবাধকতা দরকার নেই, কেবলমাত্র যথারীতি যুহরের নামাজ পড়লেই হবে, যদি না মসজিদে ইমাম উপস্থিতি থাকেন বা না থাকেন ।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!