DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

প্রান এর প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল(অবঃ)আমজাদ আর নেই।

pran1দৈনিক প্রথম বংলাদেশ প্রতিবেদনঃ দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প পরিবার প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী, দেশে কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পথিকৃৎ মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী আর নেই ।বাংলাদেশ সময় বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনায় ডিউক মেডিকেল হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বিশিষ্ট ব্যবসায়ী উদ্যোক্তা।

তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ডায়াবেটিক ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৭৬ বছর। শারীরিক অসুস্থতার জন্যে একমাস যাবৎ তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আমজাদ খান চৌধুরী স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বাবার মৃত্যুতে আমজাদ খান চৌধুরী’র ছোট ছেলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহসান খান চৌধুরী সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন। তিনি জানান, তার বাবার মরদেহ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় আনার পর ঢাকায় সামরিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আমজাদ খান চৌধুরীর জন্ম ১৯৩৯ সালের ১০ নভেম্বর। তিনি নাটোর জেলার সম্ভ্রান্ত চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মরহুম আলী কাশেম খান চৌধুরী, মা মরহুমা আমাতুর রহমান। আমজাদ খান চৌধুরীর সন্তানরা হলেন- আজার খান চৌধুরী, ডা. সেরা হক, আহসান খান চৌধুরী এবং উজমা চৌধুরী।

ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউট থেকে শিক্ষা জীবন শুরু তাঁর। ১৯৫৬ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়ান স্টাফ কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। কর্মজীবনে তিনি সেনাবাহিনীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৮১ সালে মেজর জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

বহুগুণে গুণান্বিত আমজাদ খান চৌধুরী বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যিক সংগঠন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (আইডিসিএল), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি, পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব), বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা), আন্ডারপ্রিভিলেজড চিলড্রেন্স এডুকেশন প্রোগ্রাম (ইউসেপ) -এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। দেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তিনি দেশের বেসরকারি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। কৃষি ও কৃষিজাত পণ্যের বহুমুখি ব্যবহার এবং এ শিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে তিনি অগ্রণী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।এছাড়াও তিনি আহসানিয়া মুসলিম মিশন সহ আরও বহু জনহিতকর ও দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তার অবদান মনে রাখবে সবাই। আর দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাঁর প্রচেষ্টা দেশের ব্যবসায় ক্ষেত্রে এনে দিয়েছে ব্যাপক সমৃদ্ধি।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শোকঃ

প্রাণ ও আর এফ এল গ্রুপের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব:) আমজাদ খান চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এক শোক বিবৃতিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেন, “ সামরিক বাহিনীতে চাকুরীকালীন সময়ে পেশাদারিত্ব ও কর্তব্যনিষ্ঠায় মরহুম আমজাদ খান চৌধুরীর সুনাম ছিল। সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে শিল্প ও ব্যবসা সম্প্রসারণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিল্প-কলকারখানা বহু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছিল। তাঁর প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানীর মাধ্যমে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আনছে। বাংলাদেশের বেসরকারী খাতের ভিত্তি এখন যে জায়গায় উপনীত হয়েছে সেক্ষেত্রে মরহুম আমজাদ খান চৌধুরীর ভুমিকা জাতি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।” বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মরহুম আমজাদ খান চৌধুরী এর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যবর্গ, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!