DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

ধর্মের কল বাতাসে নড়েঃ শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার কোলেই খোকা???

khoka2ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  কথায় বলে ধর্মের কল নাকি বাতাসে নড়ে। গত প্রায় ১ বছরের বহু আলোচিত সমালোচিত কার্যকলাপের খবর সৃষ্টি কারী ঢাকার সাবেক মেয়র এবং বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার আসল রুপ বেরিয়ে আসছে ধীরে ধরে।

 

ঐ সময়ে ক্যান্সার চিকিৎসার বাহানায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী খোকাকে প্রায়শই দেখা গেছে প্রবাসী কিছু নেতা কর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে সংবাদ সম্বেলন করতে।ভাইবার কেলেংকারী সহ বহু কৌতুহলোদ্দিপক ঘটনার সাথে তার নাম মিডিয়ায় এসেছে বার বার।

 

খোকা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হয়েও তার ভূমিকা  যেন বিএনপির বিরুদ্ধেই গিয়েছে বার বার।দলের আন্দোলন অবরোধে ভূমিকা রাখার চেয়ে তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্বার্থ যেনো রক্ষা করেছেন বলে যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

 

যেমন দলীয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন কিছু বিষয়ে রহস্যজনক ভাবে তিনি থেকেছেন নিরব।দেশে দেশনায়ক তারেক রহমানের নামে রাষ্ট্রদোহী মামলা,জয়ের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের ব্যংক হিসাবের তথ্য উদঘাটন কারী রিজভী আহমেদ সিজার ,এমনকি গেল সপ্তাহের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপর  ৩ বার প্রানঘাতি হামলা হওয়ার পরও ,সংবাদ সম্বেলন বিশেষজ্ঞ খোকা মুখ খোলেন নাই এবং কোন বিবৃতিও দেন নাই।

 

আসন্ন সিটি নির্বাচনে নিজ দল,বিএনপি(এখনও পর্যন্ত) সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে নয়, ঢাকা মহানগর বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা অবশেষে তার সমর্থন ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঢাকা দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের প্রতি।জানা যায় তার জায়গায় মির্জা আব্বাস দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় খোকা খুবই বিরক্ত হন।শেষ চেষ্টা হিসাবে শিষ্য আবদুস সালামের ভাগ্যেও মনোনয়নের শিকা না ছিড়লে তিনি অত্যন্ত হতাশ হয়ে পড়েন।

 

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর অসুস্থতাজনিত সমস্যা দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র চলে যান খোকা। অভিযোগ আছে, সরকারের সঙ্গে আঁতাত করে দেশের বাইরে গিয়ে এ পর্যন্ত দেশে ফিরেননি তিনি। সেখান থেকেই এখন সাঈদ খোকনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করলেন খোকা। আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

 

গত শনিবার খোকা অনুসারী বিএনপির নেতাকর্মীদের সাদেক হোসেন খোকা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ খোকনের পক্ষে কাজ করার সিগন্যাল দিয়েছেন বলে আওয়ামী লীগের নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এ প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি উত্তেজিত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, অপপ্রচার, অপপ্রচার।

 

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার সমর্থন পেয়েছেন। কিন্তু ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারকারী দলীয় তিন নেতার ভূমিকা ও সমর্থন নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও ধোঁয়াশা থেকেই গেছে। এই তিন নেতা হলেন— নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ত্রাণ ও দুর্যোগমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং অপর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম। রাত পোহালেই ভোটযুদ্ধ তবুও এ ৩ নেতাকে খোদ কেন্দ্রীয় নেতারাই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখছেন। তবে অভিযুক্ত তিন নেতা অপপ্রচার বলে উড়িয়ে দিয়েছেন এগুলো।

 

দক্ষিণের মেয়র প্রার্থীর নির্বাচনে সমন্বয়ক ও প্রচারণার দায়িত্বে রয়েছেন এমন কয়েকজন নেতা খোকনের পক্ষে তিন নেতার ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওইসব নেতারা দাবি করেন, নগরের রাজনীতিতে প্রভাবশালী এই তিন নেতার ভূমিকা এখনো স্পষ্ট নয়। এখানে আধিপত্য বিস্তার প্রধান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই তিন নেতাই মনে করেন সাঈদ খোকন মেয়র হলে নগরের রাজনীতিতে আধিপত্যহীন হয়ে পড়বেন তারা। তবে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব ওই তিন নেতাকে বিশেষ নজরে রাখছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চরম উত্তেজিত হয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এ সমস্ত বাজে কথা এবং বাজে প্রশ্ন— এগুলোর উত্তর দেওয়া যায় না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ভোটের পরে রেজাল্ট পাবেন।’ তিনি ফের বলেন, ‘কিছু নেতাকর্মী ও সাংবাদিক মদের আড্ডায় বসে এগুলো বানায়।’

 

 nnnহাজী সেলিম বলেন, ‘মেয়র প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। নেত্রী (শেখ হাসিনা) যাকে ভালবাসেন তাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমরা তার পক্ষে কাজ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ফেসবুক পেজে প্রবেশ করে প্রচারণার ছবি দেখতে পারেন। দলের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ রয়েছে, তারা ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার করছে। এতকিছুর পরেও এগুলো শুনলে বুকটা ফাইট্টা যায়।’ মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রসঙ্গটি তুলতেই ভীষণ বিরক্ত হন, ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি কোনো কথা-ই বলেননি।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর দু’জন সদস্য জানান, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা সাদেক হোসেন খোকার সঙ্গে যোগাযোগ করে খোকনের পক্ষে সমর্থন আদায়ে সামর্থ্য হয়েছেন। অবশ্য এর জন্যে সাদেক হোসেন খোকাকে আগামীতে রাজনৈতিক ঝুট-ঝামেলামুক্ত ও মামলা-হামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।

 

আওয়ামী লীগ সূত্রগুলো আরও নিশ্চিত করেছে, খোকা অনুসারীরা এতদিন চুপচাপ থাকলেও রবিবার থেকে কড়া গোপনীয়তায় সাঈদ খোকনের পক্ষে কাজে নেমে পড়েন। দক্ষিণের নির্বাচন নিয়ে দুশ্চিন্তার খানিকটা অবসান ঘটেছে। জানা গেছে, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বজায় রাখতে চান সাদেক হোসেন খোকা।

 

বিএনপি নেতা ও দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী মির্জা আব্বাসকে ঢাকা মহানগরের দায়িত্ব দেওয়ায় খোকার রাজনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। মির্জা আব্বাস মেয়র নির্বাচিত হলে রাজনীতিতে খোকা আরও পিছিয়ে যেতে পারে, তাই আব্বাসকে ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত বিদেশে থাকলেও খোকা তার অনুসারীদের সরব থাকার নির্দেশনা পাঠিয়েছেন।

 

মাঠে খোকার কয়েকজন অনুসারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভাই আমাদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। কাকে ভোট দিব সে ব্যাপারে এখনো কোনো বার্তা পাঠাননি। তারা জানান, বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার নির্দেশ পেয়েছি আমরা। কীভাবে এ নির্দেশ পেয়েছেন জানতে চাইলে খোকার ঘনিষ্ঠ এ সব লোকজন বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা এ নির্দেশ পেয়েছি।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাহবাগ থানা বিএনপির সদস্য সচিব এম এ হান্নান বলেন, ‘আমরা মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত। এ ব্যাপারে সঠিক কিছু বলতে পারব না। আমরা এখনো নিশ্চিত নই।’ তিনি আরও বলেন, ‘হতেও পারে, নাও হতে পারে।’

 

অবশ্য কিছুক্ষণ পরে প্রতিবেদককে ফোন করে তিনি বলেন, ‘দলের এখন দুঃসময়, এটা হতেই পারে না।’ খোকার অনুসারী হিসেবে পরিচিত ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক নেতা আব্দুস সালাম এটি খোকার বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘ভোটারদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করতে ক্ষমতাসীনদের ষড়যন্ত্রের অংশ এটি।’

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!