DMCA.com Protection Status
সাফল্যের ১১ বছর

সালাম এখন যুক্তরাষ্ট্রেঃ ঢাকার মেয়র পদপ্রার্থী সালাম পীরের দোয়া আর পানি পড়া নিতে নিউইয়র্কে?

salam ক্যাপ্টেন(অবঃ)মারুফ রাজুঃ  ছবির এই ভদ্রলোকের নাম আবদুস সালাম।ইনি অতি সম্প্রতি ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিনে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। ঢাকার গুলশানে অবস্থানরত অবরুদ্ধ দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করে তারঁ দোয়া নেবার প্রয়োজন বোধ করেননি তিনি।কিন্তু ঢাকা বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উড়াল দিতে কোনই  সমস্যাই হয়নি।

 

সমস্যা হবার কথাও নয়,শেখ হাসিনার গুডবুক থাকলে এরকমই হয়ে থাকে। ঢাকা থেকে নিউইয়র্ক,মাঝে লন্ডনে সাময়িক যাত্রা বিরতি।এসময়  দলের ২য় সর্বোচ্চ নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের সাথে দেখা করে তাঁর দোয়া নেয়ার সময় হয়নি সালামের,কারন তার আসল পীর রয়েছে নিউইয়র্কে,জনাব সাদেক হোসেন খোকা।বিএনপি করবেন অথচ দেশনেত্রী ও দেশনায়ক কারও ধার ধারবেন না, তা কি করে সম্ভব?  তবে সালাম বোধহয় ভূলে গেছেন, তার পীরের এখন নিজেরই পায়ের নীচের মাটি আস্তে আস্তে সড়ে যাচ্ছে,এই অবস্থায় তার মেয়র প্রার্থীতা মনোনয়ন করাবেন কিভাবে?

 

অথচ এই আবদুস সালাম একজন পেশাদার  রাজনীতিবিদ। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু ভাষানীর ন্যাপ দিয়ে। এরশাদের জমানায় এই সালাম ঢাকার ডেপুটি মেয়র হন। তারপর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন দীর্ঘদিন।

 khoka1সাদেক হোসেন খোকার হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দিয়ে কোন এক যাদুবলে রাতারাতি বনে হয়ে যান ঢাকা মহানগরী বিএনপির সেক্রেটারী। এখন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক। সালাম বিএনপির ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারী ছিলেন প্রায় দশ বছর।এসময়ে  সাদেক হোসেন খোকার সাথে মিলে ধংস করে গেছেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক কাঠামো।

 

বর্তমানে হাসিনার তৈরি ফাঁদের 'আসল বিএনপি' নামে জনৈক অখ্যাত কামরুল হাসান নাসিমের সাথে আসল ষড়যন্ত্রকারী হলো এই আব্দুস সালাম।

 

আবদুস সালাম কাহিনীঃ

হাসিনার পুরো ৭ বছর রাজত্বে এই আব্দুস সালাম বেশ সুখেই ছিলেন। ২০০৭ সালে বিএনপির চরম দুরাবস্থারকালে সালামের কেনো সমস্যা হয়নি সাদেক হোসেন খোকার মতো। তবে বিএনপির কেন্ত্রীয় অফিস এবং মহানগর অফিসকে বেশ কয়েকবছর তালাবদ্ধ করে রাখার কৃতিত্ব রয়েছে এই আব্দুস সালামের।

হাসিনার রাজত্বে বিএনপির অনেক সিনিয়র নেতারা বিদেশ যেতে না পারলেও অদৃশ্য ইঙ্গিতে সালাম বার বার পার হয়ে যান ইমিগ্রেশন। আমেরিকায় গিয়ে ৩/৪ টা বাড়ির ভাড়া তুলে আরাম আয়েশ করে, সম্বর্ধনা নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন সালাম। দেশনেত্রী বিভিন্ন কর্মসূচি দিলেও সালামকে কখনও  পাওয়া যায় না।

 

২৯ ডিসেম্বর,১৩ এর  'মার্চ ফর ডেমোক্রেসির' সময় এই আব্দুস সালাম কোথায় ছিলেন, কি করেছেন,তা কেউ জানে না। তিলে তিলে মহানগরী দলটাকে ধংস করে হাসিনাকে ক্ষমতায় দ্বিতীয় দফা কনফার্ম করে খোকা-সালামের পর্ব শেষ হয়। হাসিনাও ইতিমধ্যেই তার ইনাম বুঝিয়ে দিয়েছে নিশ্চয়ই। বর্তমানে  তিনমাস ধরে চলা আন্দোলনের তার কোনও খবর নাই। কেন জানেন? কারন সালাম তখন আমেরিকায় অবস্থান করছিলেন। সালাম প্রতি তিন/চার মাস পর পর আমেরিকা যান। আন্দোলন শুরু হওয়ার পরপরই সে গাঁ ঢাকা দিয়ে আমেরিকা পাড়ি জমায়। নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে চার্চ ম্যাগডোনালসে তার বড় বাড়ি আছে। সেটা ভাড়া দিয়ে অনেক পয়সা পান। তার ছেলে-বৌ ওখানে থাকে।

 তিনি এখন আবার এসেছেন যুক্তরাষ্ট্রে।যথরীতি তার মোটেও অসুবিধা হয় নি বিমানবন্দর থেকে  ফ্লাই করতে। এখন তিনি যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজ্যে বিএনপির স্বাধীনতা দিবসের  আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন তার গুরু ক্যান্সার(???)আক্রান্ত জনাব সাদেক হোসেন খোকার সাথে।

এই আব্দুস সালাম এখন ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা দক্ষিন থেকে ইলেকশন করতে চান। এই সালাম হলেন মিরপুরের কমিশনার মিষ্টারের খুনি। মিরপুরের কমিশনার ছিল মিষ্টার। সে কিশোরগঞ্জের মানুষ। সম্ভবকত ২০০৬ সালে খুন হয় মিষ্টার। কারন তিনি এবং আব্দুস সালাম একই যায়গায় অর্থাৎ কিশোরগঞ্জ থেকে ইলেকশন করতে চেয়েছিলো। তখনই কোনো এক গুরুত্বপূর্ন লোকের কাছে আব্দুস সালাম ঘোষণা করেন, মিষ্টার আর থাকবে না। তারই সপ্তাহ খানেকের মধ্যে মিষ্টার নিহত হয় ‍গুলিতে। ঐ খুনটি সালামই করায় পথের কাঁটা পরিস্কার করতে। কিন্তু কখনই মামলায় কোনো আসেননি তিনি। অত্যন্ত ধড়িবাজ এই সালামই হলো গত ৭ বছর ঢাকা সিটিকে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম ধংসের কারিগর। এখন তিনি দেশে -বিদেশে  জোর প্রচার করছেন বিএনপির নমিনেশন তিনি পাবেনই ঢাকা দক্ষিনের।

 

ক্ষমতার অপব্যবহার করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া এই সালামের মতো এসব চক্রান্তকারী ও ধড়িবাজলোকেদের কারনে আজ দেশ ও বিএনপির এই দুরাবস্থা।

 

দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে দল ও দেশের মানুষের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে, চালাকি করে হয়ত সাময়িক পার পেয়ে গেছে এইসব সালামেরা । কোন অদৃশ্য বলে সালামের মতো লোকেরা এখনও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বহাল রয়েছেন তা কেউ জানে না।কিন্তু এদের একটা উপযুক্ত  ধোলাই বা বিচার নিশ্চয়ই হবে এই ধরাধামে। এটা হতেও পারে জনতার ধোলাই অথবা প্রকৃতির ধোলাই। সেটাই দেখার অপেক্ষায়…

Share this post

scroll to top
error: Content is protected !!